হিজরী সালের সর্বশেষ মাস জিলহজ। চারটি মর্যাদাপূর্ণ হারাম মাসের একটি জিলহজ মাস। আরবিতে এ মাসের উচ্চারণ ‘জুলহাজ্জাহ’। এ মাসের প্রথম ১০ দিনের রয়েছে বিশেষ মর্যাদা। মহান আল্লাহ সুবহানাহু ওয়া তা‘আলা এ মাসের দশ রজনীর ও এ মাসের প্রথম ১০ দিনের জোড়-বিজোড়েরও কসম করেছেন। আল্লাহর নিকট এ মাসের প্রথম ১০ দিনের ইবাদতের রয়েছে উচ্চ মর্যাদা। এ সময়ের ইবাদত আল্লাহর নিকট অতীব প্রিয় এবং পছন্দের। এমনকি আল্লাহর রাস্তায় জিহাদের চেয়েও। তবে যিনি জিহাদে গমন করেন তার জান ও মাল নিয়ে, অতঃপর জিহাদে শহীদ হয়ে আর ফিরে না আসেন, তার কথা ভিন্ন। এ সময়ে দিনের বেলা সিয়াম পালন, রাতে তাহাজ্জুদ সালাত আদায়, সর্বদা তাকবীর, তাহলীল, তাহমীদ ও তাসবীহে নিজেকে নিয়োজিত রাখা মুমিনের দায়িত্ব। জিলহজ হাজ্জের মাস। আরাফার ময়দানে সমবেত হাজীগণ হৃদয়মন উজাড় করে আল্লাহর নিকট গুনাহ মাফের জন্য কাঁদেন, চান জান্নাত ও দুনিয়ার জীবনে শান্তি ও পরকালে নাজাত। আরাফা দিবসে আল্লাহ সর্বাধিক গুনাহগারকে ক্ষমা করেন। দিবসসমূহের মধ্যে সর্বশ্রেষ্ঠ দিবস ইয়াওমে আরাফা, তথা আরাফায় সমবেত হওয়ার দিন। সমগ্র বিশ্ব মুসলিমের জন্য আরাফা দিবসের সিয়াম পালন আগে-পিছের এক বছর করে গুনাহ মাফের কারণ।
উল্লেখ্য সউদী আরবে যখন আরাফা দিবস, বিশ্বব্যাপী একটিই আরাফা দিবস। তাই যখন হাজীগণ আরাফার মাঠে গমন করবেন, সে সময়েই আমাদেরকে আরাফা দিবসের সিয়াম পালন করতে হবে, তারিখ বিবেচনায় নয়। এবার ১০ লক্ষাধিক হাজী হাজ্জ আদায়ের অনুমতি পেয়েছেন।‘ লাব্বাইকা আল্লাহুম্মা লাব্বাইকা’ ধ্বনিতে এখন মক্কা মুকাররামা মুখরিত। ১০ তােিরখে ইয়াওমুন নাহার। আমাদের দেশে চাঁদের উদয়ের হিসেবে হবে ঈদুল আযহা। ঈদুল আযহার প্রধান করণীয় কুরবানি করা। নবী ইবরাহীম (আ) এর মহান রবের প্রতি আনুগত্যের চ‚ড়ান্ত পরীক্ষায় উত্তীর্ণের উজ্জল নিদর্শন এ কুরবানি। যার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করা সহজতর। সেজন্য কুরবানির দিন কুরবানি করা ছাড়া দ্বিতীয় কোন উত্তম ইবাদত নেই। সমর্থ্যবান ব্যক্তিদের এ সুন্নাহ আদায়ে মহানবী (স.) তাকিদ দিয়েছেন। ঈদুল আযহা ও তৎপরবর্তী তিন দিন আইয়ামে তাশরিকে পানাহার, কুরবানি ও মেহমানদারী করা ও তাকবীর বলা ইসলামের সৌন্দর্য ও উত্তম ইবাদত।
সহীহ মুসলিম শরীফ ও আহমাদে বর্ণিত হয়েছে, ‘যুলহিজ্জার প্রথম দশ দিন আরম্ভ হলে এবং তোমাদের কেউ কুরবানী করার ইচ্ছা করলে সে যেন তার চুল এবং নখ কাটা থেকে বিরত থাকে’।
তবে হাদীসের এ হুকুম যে ব্যক্তি কুরবানী করবেন তার জন্য নির্দিষ্ট। তবে পরিবারের অন্য যাদের পক্ষ থেকে কুরবানী করা হবে তার জন্য এ হুকুম প্রযোজ্য নয়। যে ব্যক্তি কুরবানীর মনস্থ করার পর তার চুল অথবা চামড়া কাটলো তাকে আল্লাহর কাছে তাওবাহ করা অপরিহার্য এবং তার কুরবানী করায় কোনো বাধা নেই এবং যিনি ভুল করবেন বা অজ্ঞতার কারণে চুল বা চামড়া কাটবে তার কোনো গুনাহ হবে না।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন