বলা হয় কৃষি ও কৃষকই বাংলাদেশের প্রাণ, তারা মাথার ঘাম পায়ে ফেলে আঠারো কোটি মানুষের খাদ্য উৎপাদন করেন। অথচ এই কৃষক সমাজই আজ সবচেয়ে নিগৃহিত ও অবহেলিত বলে মন্তব্য করেছে জাতীয়তাবাদী কৃষক দল।
নোয়াখালীতে এক কৃষকের আত্মহত্যার ঘটনায় শনিবার (০২ জুলাই) গণমাধ্যমে এক বিবৃতিতে একথা বলেন সংগঠনটির সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জারিফ তুহিন ও সাধারণ সম্পাদক শহীদুল ইসলাম বাবুল।
গত বৃহস্পতিবার নোয়াখালী জেলাধীন কোম্পানীগঞ্জ উপজেলার চরএলাহী ইউনিয়নের ৫নং ওয়ার্ডের ফজল হক এর পুত্র কৃষক মোঃ হেলাল (৩৮) নিজ বসত ঘরে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। নিহত হেলাল দুই সন্তানের জনক এবং তিনি পেশায় ছিলেন একজন কৃষক। কিছুদিন আগে নদী ভাঙনে তার বাড়ীঘর বিলীন হয়ে যায় এবং তিনি খুব অভাব-অনটনের মধ্য দিয়ে দিনাতিপাত করছিলেন। কয়েকদিন আগে তার স্ত্রী দুই সন্তানকে নিয়ে পিতার বাড়ী চলে যান। কৃষক হেলাল এর চাষাবাদ বারবার ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ায় তিনি ধার-দেনায় জড়িয়ে পড়েন।
বৃহস্পতিবার দিবাগত রাতে তিনি নিজ বাড়ীতে একাকী ছিলেন। অভাব-অনটনের চাপ সহ্য করতে না পারায় কৃষক হেলাল নিজ ঘরের মধ্যে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করেন। নিহত হেলাল তার সবকিছু হারিয়ে সরকারের স্থানীয় প্রশাসনের নিকট ধর্ণা দিয়ে কোন কুলকিনারা করতে ব্যর্থ হওয়ায় তীব্র ক্ষোভ ও দুঃখে আত্মহত্যার পথ বেছে নেন। তার এই আত্মহত্যায় সারাদেশের মানুষ হতভম্ভ হয়ে পড়ে।
কৃষকদলের সভাপতি কৃষিবিদ হাসান জাফির তুহিন এবং সাধারণ সম্পাদক শহিদুল ইসলাম বাবুল বিবৃতিতে বলেন, বাংলাদেশের কৃষক, শ্রমিক, জনতা তথা কোন পেশার মানুষই ভাল নেই। একদিকে বিনা ভোটের সরকার লুন্ঠন চালিয়ে দেশ-বিদেশে সম্পদের পাহাড় গড়েছে, অন্যদিকে দেশের মেহনতি মানুষ বেকারত্ম, চরম দারিদ্র ও হতাশায় আত্মহত্যা করছে।
নেতৃদ্বয় আরও বলেন, এর আগেও শেরপুরের নালিতাবাড়ী এবং রাজশাহী গোদাগাড়ীতে প্রায় একই কারণে তিন জন কৃষক আত্মহত্যা করেন। কিন্তু সরকার ও প্রশাসন এ ব্যাপারে সম্পূর্ণ নির্বিকার।
তারা অবিলম্বে কৃষকদের আত্মহত্যার কারণ খুঁজে বের করে দ্রুততার সাথে সমাধানের উদ্যোগ গ্রহণের জোর দাবি জানান। একই সাথে এই আত্মহত্যার ঘটনার জন্য দায়ী ব্যক্তিদের খুঁজে বের করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির জোর দাবি করেন। নেতৃদ্বয় কৃষক হেলাল এর রুহের মাগফিরাত কামনা করেন এবং শোকসন্তপ্ত পরিবার-পরিজনদের প্রতি গভীর সমবেদনা জানান।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন