চাঁদপুরের মতলব দক্ষিণে এক খন্ডকালীন শিক্ষক তার বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী দ্বারা শারীরিকভাবে লাঞ্ছিত হওয়ার অভিযোগ উঠেছে। গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টার পর বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির ইংরেজি ক্লাস চলাকালে শ্রেণিকক্ষে ঘটনাটি ঘটে। এ ব্যাপারে শিক্ষক ওই দিন বেসরকারি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ‘বরদিয়া কাজী সুলতান উচ্চবিদ্যালয়’র
প্রধান শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছেন।
লাঞ্ছিত হওয়া শিক্ষকের নাম চয়ন মজুমদার (৪০)। তিনি ইংরেজি বিষয়ের খন্ডকালীন সহকারী শিক্ষক। তাঁর বাড়ি চাঁদপুর শহরের গুয়াখোলা এলাকায়। অভিযুক্ত শিক্ষার্থী নবম শ্রেণিতে পড়ছে। তার বাড়ি উপজেলার বরদিয়া এলাকায়।
শিক্ষক চয়ন মজুমদার অভিযোগ করে বলেন, গত বৃহস্পতিবার বেলা ১১টা ৪০ মিনিটে তিনি নবম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ইংরেজি বিষয়ের ওপর পাঠদান করছিলেন। এ সময় ওই শিক্ষার্থী শ্রেণিকক্ষে তাঁর সঙ্গে অবাধ্য আচরণ ও বেয়াদবি করলে তিনি তাকে মৌখিকভাবে শাসন করেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে ওই শিক্ষার্থী টেবিল থেকে উঠে সকল শিক্ষার্থীর সামেন শারীরিকভাবে তাঁকে (শিক্ষক) লাঞ্ছিত করে শ্রেণিকক্ষ থেকে দৌড়ে পালিয়ে যান। এরপর ঘটনাটির সুষ্ঠু বিচার চেয়ে ওই দিন তিনি তাঁর বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতির কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেন। তারা শনিবার সুরাহার আশ্বাস দিলে তিনি পুলিশ বা প্রশাসনের কাউকে বিষয়টি জানাননি।
চয়ন মজুমদার বলেন, এ ঘটনায় তাঁর সামাজিক মর্যাদা ক্ষুন্ন হয়েছে। তিনি ভীষণভাবে অপমানবোধ করছেন। মান-সম্মানের কথা ভেবে বিষয়টি নিয়ে কারো সঙ্গে আলোচনাও করছেন না। শিক্ষক হয়ে একজন শিক্ষার্থী দ্বারা এভাবে লাঞ্ছিত হবেন তা স্বপ্নেও ভাবেননি। তিনি মানসিকভাবে ভেঙে পড়েছেন। ঘটনাটির যথাযথ সমাধান বা বিচারও দাবি করেন তিনি।
অভিযুক্ত ওই শিক্ষার্থীর সঙ্গে যোগাযোগ করা সম্ভব হয়নি। স্থানীয় লোকজন ও পরিবার সূূত্র জানায়, ঘটনাটির পর থেকে সে এলাকায় নেই। তার বাবার মুঠোফোন নম্বরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে সংযোগটি বন্ধ পাওয়া যায়। নাম প্রকাশ না করার শর্তে বিদ্যালয়ের নবম শ্রেণির একাধিক শিক্ষার্থী ওই শিক্ষককে লাঞ্ছিত করার সত্যতা নিশ্চিত করে বলেন, এটি খুবই দুঃখজনক। একজন শিক্ষক বাবা-মায়ের মতোই। সম্মানিত শিক্ষকের অপমান কোনোভাবেই মেনে নেওয়া যায় না।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মো.শাহাদাত হোসেন বলেন, ওই শিক্ষক ঘটনাটির বিচার চেয়ে তাঁর কাছে মৌখিকভাবে অভিযোগ করেছেন। বিষয়টি সুরাহার জন্য ব্যবস্থাপনা কমিটির সদস্য ও শিক্ষকদের নিয়ে এখন সভা করছেন। স্থানীয়ভাবেই এটি মীমাংসার চেষ্টা চলছে।
এ ব্যাপারে উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. আবদুর রহিম খানের মুঠোফোন নম্বরে শনিবার দুপুরে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে ফোন ধরেননি তিনি।
মতলব দক্ষিণ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ মহিউদ্দিন মিয়া বলেন, বিষয়টি জেনেছেন। এ ব্যাপারে লিখিত অভিযোগ পাননি। পেলে আইন অনুযায়ী ব্যবস্থা নেবেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন