মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

মহানগর

ভাইরাল হতে বড় বড় কথা বলে নেতাকর্মীদের বিপদে ফেলবেন না: হাবিব উন নবী সোহেল

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২ জুলাই, ২০২২, ১০:০০ পিএম

ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার জন্য বড় বড় ডাইলগ দিয়ে, কথা বলে নেতাকর্মীদের বিপদে না ফেলতে নেতাদের প্রতি আহ্বান জানিয়েছেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল। তিনি বলেন, সামনে আন্দোলনন-সংগ্রাম হবে সেই আন্দোলনে আন্তরিকতার সাথে সকলকে মাঠে থাকতে হবে। কিন্তু শুধু ফেসবুকে ভাইরাল হওয়ার জন্য বড় বড় ডাইলগ মারলে হবে না। এটাতে অযথা আমাদের কর্মীরা বিপদে পড়েন। যদি কিছু করার থাকে গোপনে করেন, কাজটা করেন। অযথা বড় ডাইলগ দিয়ে নেতাকর্মীদের বিপদে ফেলবেন না। সময়মত রাজপথে থাকতে হবে, আন্দোলনে থাকতে হবে। আমাদের নেতাকর্মীরা সবাই প্রস্তুত আছে, ডাইলগ দিয়ে তাদের প্রস্তুত করার কোন প্রয়োজন নেই। এখন যে কাজগুলো করার দরকার সেগুলো করতে হবে যাতে আমরা সামনে আন্দোলনে ব্যর্থ না হই। কারণ ব্যর্থ হলে আমাদের (দলের) তো আছেই দেশের জনগণের জন্যও অন্ধকার অপেক্ষা করছে।

শনিবার (০২ জুলাই) নয়াপল্টনে দলের কেন্দ্রীয় কার্যালয়ে জাতীয়তাবাদী স্বেচ্ছাসেবক দল আয়োজিত দোয়া মাহফিল ও আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

বিএনপি চেয়ারপরসন বেগম খালেদা জিয়া, মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর, স্থায়ী কমিটির সদস্য নজরুল ইসলাম খান এবং সিনিয়র যুগ্ম মহাসচিব অ্যাডভোকেট রুহুল কবির রিজভী’র রোগমুক্তি ও সুস্থতা কামনায় দোয়া মাহফিলের আয়োজন করে স্বেচ্ছাসেবক দল।

সংগঠনটির সভাপতি মোস্তাফিজুর রহমানের সভাপতিত্বে দোয়া মাহফিলে প্রধান অতিথি ছিলেন বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব হাবিব উন নবী খান সোহেল। এছাড়া উপস্থিত ছিলেন- স্বেচ্ছাসেবক দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি গোলাম সরোয়ার, সিনিয়র যুগ্ম সম্পাদক সাইফুল ইসলাম ফিরোজ, সহ-সভাপতি আনু মোহাম্মদ শামীম আজাদ, জমির হোসেন, যুগ্ম সম্পাদক সাদরেজ জামান, ঢাকা মহানগর উত্তরের সভাপতি ফখরুল ইসলাম রবিন, কেন্দ্রীয় নেতা মো. রফিকুল ইসলাম, ডা. জাহিদুল কবির, কাজী ইফতেখায়রুজ্জামান শিমুল, সর্দার নুরুজ্জামান, আব্দুল্লাহ আল মামুন, মোর্শেদ আলম, হারুন অর রশিদ প্রমুখ।

হাবিব উন নবী সোহেল বলেন, বেগম খালেদা জিয়া ৯ বছর সংগ্রাম করে এদেশের মানুষের জন্য গণতন্ত্র এনে দিয়েছিলেন। এখনো যদি মানুষকে জিজ্ঞেস করেন যে কোন নেতা বা নেত্রীর হাতে বাংলাদেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব নিরাপদ? সবাই একবাক্যে উত্তর দিবে বেগম খালেদা জিয়া। তারা বলবে বেগম জিয়ার হাতেই স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব নিরাপদ। সেই নেত্রী যখন অসুস্থ হয় তখন জাতীয়তাবাদী দল নয়, দেশের ১৬ কোটি মানুষ চিন্তিত হয়ে পড়ে। সেজন্য আজকে সবাই বলে বেগম খালেদা জিয়া মানে বাংলাদেশ, বাংলাদেশ মানে বেগম খালেদা জিয়া। বেগম খালেদা জিয়া অসুস্থ হয়ে পড়া মানে বাংলাদেশ অসুস্থ হয়ে পড়া। তিনি যেন অসুস্থতা থেকে মুক্ত হয়ে আমাদের মাঝে ফিরে আসেন শুধু দোয়া করলে হবে না, তিনি যে বন্দী আছেন তাকে মুক্ত করার জন্য রাজপথের লড়াই করতে হবে। সেটাকে চূড়ান্ত পর্যায়ে নিয়ে যেতে হবে।

ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপির সাবেক আহ্বায়ক সোহেল বলেন, দেশের জনগণ ভালো থাকলে আমরা ভালো থাকবো। বিএনপি ক্ষমতায় থাকলো কি থাকলো না সেটা কোন বিষয় না। জনগণবিহীন ক্ষমতা আমরা চিরকাল ধিক্কার দিয়েছি। আমরা সেই ক্ষমতা চাই যেখানে জনগণের অংশগ্রহণ আছে। অন্যদিকে সরকার জোর করে ক্ষমতা দখল করে আছে। তাদের বন্যাদুর্গত মানুষের পাশে দাঁড়ানোর কথা কিন্তু তারা নিশ্চুপ। তাদের কোন প্রতিক্রিয়া নেই। কারণ তাদের জনগণের দরকার নেই। তারা মনে করে ক্ষমতায় যাওয়ার জন্য জনগণের প্রয়োজন নেই। জনগণ বাঁচল কি মরলো তাতে তাদের কিছু আসে যায় না। তাদের দরকার ক্ষমতা। ক্ষমতা ধরে রাখতে যে যে দেবতা তুষ্ট-পূজা করতে হয় এ সরকার সেই সেই দেবতাকে পূজা করছে, তুষ্ট করছে। জনগণের কোন খোঁজ-খবর রাখছে না।

পদ্মা সেতু নিয়ে অতিমাত্রায় উৎসবের সমালোচনা করে তিনি বলেন, শেখ হাসিনা ব্যস্ত পদ্মা সেতু নিয়ে। পদ্মা সেতু নিয়ে যা হচ্ছে তাতে মনে হয় বাংলাদেশে পদ্মা সেতু ছাড়া কিছু নেই। স্বেচ্ছাসেবক দলের সাবেক সভাপতি বলেন, আওয়ামী লীগ দেখেছে ৭১’র চেক ভাঙিয়ে তারা বহুদিন চলেছে। এখন এই চেক ভাঙিয়ে আর বেশিদিন চলা যাবে না। এখন তাদের এই চেক মানুষ আর খায় না। কারণ মানুষ জানে ৭১’র স্বাধীনতা যুদ্ধে আওয়ামী লীগ নেতাদের কার্যত কোন ভূমিকা ছিল না। খেতাবপ্রাপ্ত একজন মুক্তিযোদ্ধাও আওয়ামী লীগ নেই। এজন্য এখন পদ্মা সেতু নিয়ে মাতামাতি করছে।

তিনি বলেন, পেয়ারে পাকিস্তান কার? পেয়ারে পাকিস্তান, হিন্দুস্তান, চাইনা, সোভিয়েত ইউনিয়ন, যখন যাদের প্রয়োজন হয় তখন সেই দেবতাকে তারা পূজা করে। আপনারা (আওয়ামী লীগ) দালাল গোষ্ঠী। সমস্ত দালাল মিলে একটি রাজনৈতিক দল আছে যার নাম আওয়ামী লীগ।

হাবিব উন নবী বলেন, সরকার মনে করছে, পদ্মা সেতু ভাঙিয়ে মনে হয় আবারও বাংলাদেশে কিছুদিন রাজত্ব করা যাবে। কিন্তু এরকম উন্নয়নের স্লোগান আই্য়ুব খান, এরশাদও দিয়েছিলেন। বড় বড় প্রকল্প দেখিয়ে মনে করেছিলেন দীর্ঘদিন শাসন করবেন। কিন্তু দু’জনই গণতান্ত্রিক অধিকার, বাক-স্বাধীনতা, মৌলিক অধিকার কেড়ে নিয়েছিলেন। তখন কোন উন্নয়ন দিয়ে মানুষের মন জয় করতে পারেনি। বর্তমান সরকারও মানুষের ভোটাধিকার কেড়ে নিয়ে, দিনের ভোট রাতে করে, কথা বলার অধিকার, মৌলিক অধিকার রাজনৈতিক অধিকার কেড়ে নিয়ে জনগণের মনে যে দাগ কেটেছে শত পদ্মা সেতু করলেও সেটি মেরামত হবে না। এর পরিণতি ভোগ করতে হবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন