শুক্রবার ১৪ নভেম্বর ২০২৪, ৩০ কার্তিক ১৪৩১, ১২ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

খুলনায় কোরবানির হাট মাতাবে কালামানিক, সম্রাট, ট্রাম্প

ডি এম রেজা সোহাগ, খুলনা থেকে | প্রকাশের সময় : ৩ জুলাই, ২০২২, ১২:০১ এএম

খুলনায় এবার কোরবানির হাট মাতাবে ট্রাম্প, নবাব, ডন, বাদশা, টাইটেন, জেমস এর মত বিশালাকার গরুগুলো। এছাড়াও এ তালিকায় আপাতত জেলার সবচেয়ে বড় গরু কালামানিক রয়েছে। গরুগুলোর একেকটির ওজন কমপক্ষে ২৫ থেকে ৩০ মন। আকারে বিশাল হলেও স্বভাবে খুবই ধীরস্থির। সবগুলোই বিদেশি জাতের। দীর্ঘ পরিচর্যার পর তারা এখন বিক্রির উপযোগী হয়েছে। খুলনার বিভিন্ন এলাকার গরুর খামার ঘুরে এমন তথ্য পাওয়া গেছে।

খুলনা মহানগরীর দৌলতপুরের মধুমতি ডেইরি ফার্মে গিয়ে দেখা গেছে, রাজকীয় ভঙ্গিমায় দাঁড়িয়ে রয়েছে সম্রাট। সাদা, লালচে আর বাদামী রংয়ের মিশ্রণ। যেমন গঠন, তেমনই স্বাস্থ্য। মুখ আর ঘাড়ের কয়েকটি স্থানে কালো রংয়ের ছাপ। তবে চুপচাপ শান্ত স্বভাবের। গরুটি দেখতে অনেকেই আসছেন, দরদামও করছেন। খামারের দেখাশোনার দায়িত্বে থাকা ইমতিয়াজ হোসেন রনি জানান, এবারের ঈদে কোরবানির জন্য বিক্রি করতে ৯টি গরু প্রস্তুত করা হয়েছে। যার মধ্য সম্রাট সবচেয়ে আকর্ষনীয়। ওজন প্রায় ২৭ মন। এছাড়া ফার্মের অন্যতম বড় গরু ট্রাম্প, ওজন ২৬ মন। খামারের শুরুতে ৪ বছর আগে ১৪টি গরু আনা হয়। এখন চার প্রজাতির ৬৫টি গরু রয়েছে। এই সময়ের মধ্যে আরো ৫/৬টি গরু বিক্রি করা হয়েছে। সম্রাটের দাম এক ক্রেতা ১৩ লাখ টাকা বলেছিলেন। আশা করছি সম্রাটকে হাটে নেওয়ার পর ১৭ থেকে ১৮ লাখ টাকা বিক্রি হবে। ট্রাম্পও প্রায় একই দামে বিক্রি হবে। বাকী গরুগুলো বিভিন্ন দামে বিক্রি করা হবে। শুধু সম্রাট নয়, এই ফার্মে রয়েছে সম্রাটের ভাই নবাব। আছে ডন, বাদশা, টাইটেন, জেমস, কালুসহ বিভিন্ন বাহারী নাম আর রংয়ের গরু। তিনি আরো বলেন, এরা সাধারণ খাবারই খায়। গমের ভুষি, সয়াবিনের খৈল, ধান ও ভুট্টার কুড়া খেয়ে থাকে। এর সাথে দুপুরে নিজেদের ফার্মেই উৎপাদিত ঘাস খাওয়ানো হয়।

এদিকে, খুলনার ডুমুরিয়ায় বিক্রির জন্য প্রস্তুত করা হয়েছে বিশালাকার কালামানিককে। এটি এবার খুলনা জেলার মধ্যে সবচেয়ে বড় গরু। ওজন প্রায় ৩২ মন। উচ্চতা সাড়ে ৭ ফুট, দৈর্ঘ্য ১৫ ফুট। ডুমুরিয়া উপজেলার আটলিয়া ইউনিয়নের রোস্তমপুর গ্রামের প্রবীর মজুমদার এই গরুর মালিক। প্রবীর মজুমদার জানান, আমার খামারে আরো তিনটি গরুর সঙ্গে কালামানিক নামের এই গরুটিকে লালন-পালন করেছি। আকারে বড় হওয়ায় কালামানিককে দেখতে প্রতিদিনই লোকজন খামারে ভিড় করছেন। আমার কালামানিক খুব শান্ত স্বভাবের। তিনি আরো বলেন, প্রবাস জীবন থেকে ফিরে পাঁচ বছর আগে নিজের বাড়িতে গরুর খামার শুরু করি। গত দুই বছর ধরে কালামানিককে লালন-পালন করছি। প্রতিদিন গরুটিকে ১০ কেজি করে খাবার খাওয়ানো হয়। এর মধ্যে রয়েছে, গমের ভুষি, ধানের কুড়া, ভুট্টা, শুকনো খড় ও কাঁচা ঘাস। তিনি দাবি করেন, কালামানিককে মোটাতাজাকরণের কোনো ওষুধ ব্যবহার করেননি।

খুলনা জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা. অরুণ কান্তি মন্ডল জানান, আগের কোরবানির ঈদগুলোতে গড়ে ৮০ হাজার গরু-ছাগল বিক্রি হয়েছে। এ বছর তার চেয়ে কিছু বেশি হবে। কারণ করোনার প্রভাব না থাকার কারণে আমরা সকল উৎসবে দেখছি মানুষের উপচে পড়া ভিড়। মানুষের মধ্যে স্বতঃস্ফূর্ত আনন্দ পরিলক্ষিত হচ্ছে। তার প্রেক্ষিতে আমরা মনে করি এবার কোরবানির ঈদ আনন্দময় হবে। এবার খুলনা জেলায় ৭ হাজার ৬১৪ জন খামারি ২৩ হাজার ৯১৭টি গরু কোরবানির জন্য পালন করছে। এছাড়া মহিষ ১৭টি, ছাগল প্রায় ৯৩ হাজার ও ভেড়া ২ হাজার ৩৫০টি পালন করছে। খামারির সংখ্যা দিন দিন বাড়ছে। সেইসঙ্গে কোয়ালিটিও বাড়ছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন