নড়াইল সদরের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায় জুতার মালা দেয়ার ঘটনায় দায়িত্বে অবহেলার কারণে সদর থানার ওসি শওকত কবিরকে স্ট্যান্ডরিলিজ করা হয়েছে। গতকাল রোববার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার প্রবীর কুমার রায় পিপিএম (বার)। তিনি বলেন, শওকত কবিরকে নড়াইল সদর থানা থেকে খুলনা রেঞ্জ রিজার্ভ ফোর্স (আরআরএফ) অফিসে তাৎক্ষণিক বদলি করা হয়েছে।
পুলিশ ও কলেজ সূত্রে জানা গেছে, মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্র রাহুল দেব রায় নিজের ফেসবুক আইডিতে নূপুর শর্মার ছবি ব্যবহার করে লেখেন- প্রণাম নিও বস ‘নূপুর শর্মা’ জয় শ্রীরাম। এ পোস্ট দেয়ার পর গত ১৮ জুন সকালে কলেজে আসেন রাহুল। এরপর তার বন্ধুরা পোস্টটি মুছে ফেলতে বললেও সে পোস্ট মুছেননি রাহুল।
শিক্ষার্থীরা বিষয়টি কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল স্বপন কুমার বিশ্বাসকে জানান। এক পর্যায়ে ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল কলেজের সব শিক্ষকদের পরামর্শে রাহুলকে পুলিশের হাতে তুলে দেয়ার চেষ্টা করেন। এরই মধ্যে শিক্ষার্থীসহ স্থানীয়রা বিক্ষুদ্ধ হয়ে ওঠেন। এক পর্যায়ে কলেজ চত্বরে থাকা শিক্ষকদের তিনটি মোটরসাইকেল পুড়িয়ে দেয় তারা। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জসহ কয়েক রাউন্ড টিয়ারশেল ছোঁড়ে। ঘটনার সময় অন্তত ১০ জন ছাত্র-জনতা আহত হন। এদিকে, অভিযুক্ত ছাত্রের বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা না নেয়ার অভিযোগ এনে বিক্ষুদ্ধ জনতা ঘটনার দিন ১৮ জুন বিকেলে কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল স্বপন কুমার বিশ্বাস এবং শিক্ষার্থী রাহুল দেব রায়ের গলায় জুতারমালা পরিয়ে প্রতিবাদ জানান।
জেলা প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদন সম্পন্ন : নড়াইল সদরের মির্জাপুর ইউনাইটেড ডিগ্রি কলেজের ভারপ্রাপ্ত প্রিন্সিপাল স্বপন কুমার বিশ্বাসের গলায় জুতার মালা দেয়ার ঘটনায় গঠিত জেলা প্রশাসনের তদন্ত প্রতিবেদন শেষ হয়েছে। গত শনিবার রাত সাড়ে ৮টার দিকে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিবেদন জমা দেন কমিটির সদস্যরা।
জেলা প্রশাসনের তদন্ত কমিটির প্রধান ছিলেন-অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট জুবায়ের হোসেন চৌধুরী। সদস্য আছেন জেলা শিক্ষা অফিসার এস এম ছায়েদুর রহমান ও সদর থানার ওসি শওকত কবির। এ তদন্ত প্রতিবেদন কত পৃষ্ঠার সে সম্পর্কে বিস্তারিত তথ্য দিতে চাননি কমিটির সদস্যরা। অপরদিকে, পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার রিয়াজুল ইসলামের নেতৃত্বে তদন্ত করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন