কুমিল্লা-৬ আসনের এমপি বীর মুক্তিযোদ্ধা আ ক ম বাহাউদ্দীন বাহার বলেছেন, আজকে বাংলাদেশ স্বাধীন না হলে বিশ্বের বিভিন্ন দেশে প্রায় এক কোটি ২০ লাখ বাঙালির
কর্মসংস্থানের পথ তৈরি হতো না। বাঙালিকে অনেকেই স্বাধীনতা দিতে চেষ্টা করেছে, কিন্তু পারে নি। পশ্চিম পাকিস্তানের চব্বিশ বছরের দুঃশাসন থেকে বাঙালিকে মুক্তির বারতা এনে দিয়েছেন, স্বাধীনতা এনে দিয়েছেন একজন মানুষ। তিনি হলেন হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। আর আজকের বাংলাদেশকে বিশ্বের কাছে একটি স্বনির্ভর বাংলাদেশ, উন্নত বাংলাদেশের পরিচয় তুলে ধরেছেন বঙ্গবন্ধু কন্যা জননেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। যিনি স্বপ্ন দেখান এবং সেই স্বপ্নের সফল বাস্তবায়ন করেন।
আমাদের প্রধানমন্ত্রী অসীম সাহসীর অধিকারী। তিনি বিশ্বকে দেখিয়েছেন দেশের টাকায় পদ্মা সেতু নির্মাণ করে। এই সেতু আমাদের সকলের টাকায় নির্মিত হয়েছে। তাই বাঙালি হিসেবে আমরা বিশ্বের কাছে গর্ব করে বলতে পারি জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে আমরা চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় সফল হতে পারি। শেখ হাসিনার হাত ধরেই ২০৪১ সালে বিশ্বের ২৩টি ধনী রাষ্ট্রের সঙ্গে তালিকায় থাকবে বাংলাদেশের নাম।
রবিবার (৩ জুলাই ) মালেশিয়ার কুয়ালালামপুর জালান আমপাং হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টালে বৃহত্তর কুমিল্লা সমিতির আয়োজনে কুমিল্লার নামে বিভাগ বাস্তবায়নের লক্ষে আয়োজিত মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে এমপি বাহার এসব কথা বলেন ।
অনুষ্ঠানে দেওয়া প্রায় ৫০ মিনিটের বক্তব্যে এমপি বাহার স্বাধীনতা ও বঙ্গবন্ধু, উন্নত বাংলাদেশ, আওয়ামী লীগের উন্নয়নমুখি কর্মকাণ্ড এবং কুমিল্লা জেলার ইতিহাস ঐতিহ্য তুলে ধরেন। তার এই বক্তব্য রবিবার রাতে ইউটিউবসহ বিভিন্ন মাধ্যমে ব্যাপক সাড়া ফেলে।
মতবিনিময় সভায় এমপি বাহার আরও বলেন,আজকে যারা মালয়েশিয়ায় কষ্ট করে শ্রম দিয়ে উপার্জন করছেন এই আপনাদের সন্তানরা উন্নত বাংলাদেশের নাগরিক হয়ে মালয়েশিয়ায় কাজ করতে আসবে না, তারা আসবে ঘুরতে। বঙ্গবন্ধুর এমন সোনার বাংলাদেশ গড়বেন তারই সুযোগ্যকন্যা জননেত্রী শেখ হাসিনা। তিনি বলেন, একজন মাহাথির এই মালয়েশিয়ার চেহারা পাল্টে দিয়েছেন, তেমনি একজন শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সৃষ্টি হবে ৪১ সালের উন্নত বাংলাদেশ। তাই আসুন দলমত নির্বিশেষে আমরা সবাই আমাদের দুরদর্শিসম্পন্ন নেত্রী শেখ হাসিনার জন্য দোয়া করি, আল্লাহ তাআলা তাকে নেকহায়াত দান করুন।
কুমিল্লা সিটি নির্বাচন প্রসঙ্গে এমপি বাহার বলেন, এই নির্বাচন আগামী সংসদ নির্বাচনের জন্য ইসির টেষ্টকেস ছিল। যেকারণে একটি অবাধ সুষ্ঠু ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়েছে কুমিল্লা সিটি করপোরেশন নির্বাচনে। এই নির্বাচনকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে কম খেলা হয়নি। নির্বাচন কমিশন ও আমাকে একটা তর্ক বির্তকের জায়গায় দাঁড় করানো হলো। আর এ নিয়ে মিডিয়ায় চলেছে তুমুল প্রচারণা। আমিও বাসায় বসে টিভির স্ক্রিনে চোখ রেখে এসব দেখে এনজয় করেছি।
এমপি বাহার বলেন, আমি কুমিল্লায় আছি কিনা প্রশাসন খোঁজ খবর রাখছে।আমি কুমিল্লায় কেনো আছি এটা আপার (শেখ হাসিনা) কাছেও বলা হয়। এনিয়ে আপা রাগ। আমাদের এলজিআরডি মিনিস্টার সাহেব আপাকে বলেছেন বাহার ভাই তো নির্বাচনের প্রচারণায় যাচ্ছেন না। তিনি সাতদিন ধরে বাসায়। তিনি কুমিল্লা ছাড়লে নির্বাচনটা করা যাবেনা। ওরা ছায়া বাহারকে ভয় পায়। আর তাই এসব মিথ্যাচার করছে। এরপর আপা আর কিছুই বলেন নি।
এমপি বাহার বলেন, আমাকে নিয়ে ষড়যন্ত্র নতুন নয়, সকল ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করে ত্রিশ বছর পর কুমিল্লা সদর আসনে নৌকা জয়ের ইতিহাস সৃষ্টি করেছি। এখনো এই আসন নৌকার। আর রিফাতের জয়ের মধ্যদিয়ে একত্রিশ বছর পর সিটিতে আওয়ামী লীগের মেয়র। এই জয়ে আমি উৎফুল্ল। কুমিল্লার আপামর জনগণ খুশি।
কুমিল্লা বিভাগ প্রসঙ্গে এমপি বাহার বলেন, এই কুমিল্লা খুনি মোস্তাকের নয়। আজকে মোস্তাকের মতো কিছু দুষ্ট প্রকৃতির লোক কুমিল্লা নামে বিভাগের ষড়যন্ত্রে লিপ্ত। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে কর্মরত প্রবাসী কুমিল্লার মানুষরা কুমিল্লা নামে বিভাগ চায়। মালয়েশিয়ার কুমিল্লার প্রবাসীদের মতো অন্য দেশের প্রবাসীরাও কুমিল্লা নামে বিভাগের পক্ষে ঐক্যবদ্ধ। আমি বিশ্বাস করি, আমাদের প্রিয় নেত্রী কুমিল্লা নামেই বিভাগ দেবেন। তিনি আমাদের হতাশ করবেন না। ৪১ সালের বাংলাদেশ বিনির্মানে ইনশাল্লাহ কুমিল্লা বিভাগ হবে মাইলফলক।
অনুষ্ঠানে মালেশিয়ায় বসবাসরত প্রবাসীরা এমপি বাহারের মাধ্যমে মালেশিয়াস্থ বাংলাদেশ হাইকমিশনারের কাছে কুমিল্লা নামে বিভাগ বাস্তবায়ন প্রস্তাবের একটি স্মারকলিপি দেন।
মালেশিয়া বৃহত্তর কুমিল্লা সমিতির সভাপতি অহিদুর রহমান অহিদদের সভাপতিত্বে ও সাধারণ সম্পাদক হাজী আব্দুল হামিদ জাকারিয়ার সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সিঙ্গাপুরে বসবাসরত প্রবাসী বিশিষ্ট সমাজসেবক আনিস মোহাম্মদসহ মালয়েশিয়ায় কর্মরত বৃহত্তর কুমিল্লার বিভিন্ন অঞ্চলের প্রবাসীরা উপস্থিত ছিলেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন