রাজশাহী মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল থেকে তুলে নিয়ে গিয়ে এক স্কুলছাত্রকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনা ঘটেছে। গত রোববার রাত ১০টার দিকে রাজশাহী নগরীর হেতেমখাঁ সবজিপাড়া এলাকায় এই হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।
নিহত স্কুলছাত্রের নাম মো. সানি। তিনি নগরীর বোয়ালিয়া থানার দড়িখরবোনা এলাকার রফিকুল ইসলাম ওরফে পাখির ছেলে এবং এসএসসি পরীক্ষার্থী। সানি হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় নগরীর বোয়ালিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল সোমবার ভোরে নিহত সানির বাবা বাদী হয়ে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার এজাহারে ৯ জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরো ৯-১০ জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করা হয়েছে। থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মাজাহারুল ইসলাম আসামিদের গ্রেফতারের স্বার্থে তিনি তাদের নাম-পরিচয় জানাতে সম্মত হননি।
নিহত সানির বাবা জানান, গত রোববার সানির জন্মদিন ছিল। খেলতে গিয়ে তার এক বন্ধু আহত হয়। তাকে দেখতে সে রামেক হাসপাতালে গেলে হেতেমখাঁ সবজিপাড়া এলাকার দিতির ছেলে আন্নাফ দলবল নিয়ে সানিকে সেখান থেকে হেতেমখাঁ সবজিপাড়ায় নিয়ে গিয়ে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে জখম করে রাস্তার পাশে ড্রেনে ফেলে চলে যায়। স্থানীয় লোকজন তাকে উদ্ধার করে রামেক হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। পরে আমরা হাসপাতালে ছুটে যাই।
হানগরীর বোয়ালিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কমকর্তা মাজাহারুল ইসলাম বলেন, পূর্বশত্রুতার জেরে এ হত্যার ঘটনা ঘটেছে বলে আমরা প্রাথমিকভাবে জানতে পেরেছি। এ ঘটনায় নিহত সানির বাবা বাদী হয়ে নয়জনের নাম উল্লেখসহ ৯-১০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে হত্যা মামলা দায়ের করেছেন। হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে। কিন্তু সকালবেলায় নিহতের পরিবারের পক্ষ থেকে হত্যার সঙ্গে জড়িত অভিযুক্তদের ছবিসহ নাম উল্লেখ করে পোস্টার সাঁটানো হয়েছে। এমন কাজ করায় আসামিরা হয়তো ধরাছোঁয়ার বাইরে চলে যেতে পারে। তারপরও আমরা আসামিদের গ্রেফতারের সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। আশা করছি, আইনশৃঙ্খলা বাহিনী দ্রুত হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতার করতে সক্ষম হবে।
ক্ষুব্ধ এলাকাবাসী সানি হত্যার ঘটনায় প্রতিবাদ জানিয়ে লাশ নিয়ে মিছিল করেছে। দুপুরে মহানগরীর রেলগেট শহীদ এএইচএম কামারুজ্জামান চত্বরে এই বিক্ষোভ হয়।
বিক্ষোভে নিহত সানির আত্নীয়স্বজন ছাড়াও এলাকাবাসী যোগ দেয়। নিহত সানির লাশ নিয়ে বিক্ষোভকারীরা হত্যাকাণ্ডের সাথে জড়িত সকলকে দ্রুত গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবি জানান। এক পর্যায়ে বিক্ষোভকারীরা লাশ নিয়ে মহাসড়কে বসে পড়লে রাজশাহী-চাঁপাইনবাবগঞ্জ ও নওগাঁ মহাসড়কের সকল প্রকার যানবাহন চলাচল বন্ধ হয়ে যায়। এতে রাস্তায় দীর্ঘ যানজট বেঁধে যায়।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন