বুধবার, ০১ মে ২০২৪, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১, ২১ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

আষাঢ়ের ভরা বর্ষা মৌসুমেও দক্ষিণাঞ্চলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ ৪৪.৪% কম

প্রধান ফসল আমন নিয়ে দুশ্চিন্তায় কৃষক, তাপমাত্রার পারদও স্বাভাবিকের ওপরে

বরিশাল ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৫ জুলাই, ২০২২, ৩:৩৬ পিএম

শেষ আষাঢ়েও কাঙ্খিত বৃষ্টির অভাবে দক্ষিনাঞ্চলের প্রধান দানাদার খাদ্যফসল আমন নিয়ে কৃষকদের অস্বস্তি বাড়ছে।


আষাঢ়ের ভরা বর্ষা মৌসুমে স্বাভাবিক বৃষ্টিপাতহীন দক্ষিণাঞ্চল যুড়ে শরতের আবহাওয়ায় প্রধান দানাদার খাদ্য ফসল আমনের আবাদ ও উৎপাদন নিয়ে দুঃশ্চিন্তায় লক্ষ লক্ষ কৃষক। গত কয়েকটি মাসের মত ভড়া বর্ষার আষাঢ়েও বৃষ্টিপাতের প্রবনতা কম থাকায় দক্ষিণাঞ্চলের জলবায়ু পরিবর্তন সহ ফসল আবাদ এবং জনস্বাস্থ্যেও বিরূপ প্রভাবের আশংকা ক্রমশ স্পষ্ট হয়ে উঠছে। আষাঢ়Ñশ্রাবনের ভরা বর্ষা মৌসুমেও বৃষ্টিপাতের সংকট রোপা আমনের আবাদকে বাধাগ্রস্থ করছে। অঅবহাওয়া বিভাগের মতে, সদ্য সমাপ্ত জুন মাসেই বরিশাল অঞ্চরেল বৃষ্টিপাতের পরিমান ছিল স্বাভাবিকের ৪৪.৪% কম।
চলতি খরিপ-২ মৌসুমে দক্ষিণাঞ্চলে প্রায় ৭ লাখ হেক্টরে প্রধান দানাদার খাদ্য ফসল আমন আবাদের চুড়ান্ত প্রস্তুতির মধ্যে গত মাসে কয়েকদিন প্রবল বর্ষনের সাথে ফুসে ওঠা সাগরের জোয়ারে আমন বীজতলা প্লাবিত হয়। কিন্তু এরপরেই স্বাভাবিক বৃষ্টির অভাবে চরম দুঃশ্চিন্তায় কৃষকগন। এবার দক্ষিনাঞ্চলে আমন উৎপাদনের লক্ষ্য রয়েছে প্রায় সাড়ে ১৫ লাখ টন চাল।
গত এপ্রিলে বরিশালে স্বাভাবিক ১৩২ মিলিমিটরের স্থলে মাত্র ১৯ মিলিমিটারের বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়। যা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে ৮৫.৬% কম। মে মাসেও আবহাওয়া বিভাগ থেকে বরিশালে স্বাভাবিক ২৬০ মিঃমিঃ ’র স্থলে ২৪৫ থেকে ৩১০ মিঃমিঃ পর্যন্ত বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাস থাকলেও স্বাভাবিকের চেয়ে ৫.৬% কম বৃষ্টি হয়েছে । অথচ ঐ মাসেই ঘূর্ণিঝড় ‘অশনি’তে ভর করে ৭ থেকে ১১ মে পর্যন্ত কয়েকদিনের অতি বর্ষণে তরমুজ সহ বিভিন্ন রবি ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। আর সদ্য সমাপ্ত জুনে ৪৬০ থেকে ৫১০ মিলি বৃষ্টিপাতের পূর্বাভাসের মধ্যেও মাসের প্রথম ১৮ দিনে মাত্র ৬০.৪ মিলিমিটার বৃষ্টিপাতের পরে শেষ ১২ দিনে ২শ মিঃমিঃ সহ পুরো মাসে মোট বৃষ্টিপাতের পরিমান ছিল ২৬৮.৫ মিলিমিটার। যা ছিল স্বাভাবিকের চেয়ে ৪৪.৪% কম।
আবহাওয়া বিভাগের মতে, মৌসুমী বায়ুর একটি বর্ধিতাংশ উত্তর বঙ্গোপসাগর পর্যন্ত বিস্তৃত রয়েছে। মৌসুমী বায়ু দক্ষিণাঞ্চল সহ দেশে কম সক্রিয় এবং বঙ্গোপসাগরের অনত্র দূর্বল অবস্থায় রয়েছে। বরিশাল সহ দক্ষিণ উপক’লের দু এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে হালকা থেকে মাঝারী ধরনের বৃষ্টি সহ বজ্র বৃষ্টির পূর্বাভাস দেয়া হয়েছে । সে সাথে কোথাও কোথাও বিক্ষপ্তভাবে মাঝারী ধরনের ভারী থেকে ভারী বর্ষনের সম্ভবনার কথাও বলা হলেও মঙ্গলবার দুপুরের পূর্ববর্তি ২৪ ঘন্টায় শুধুমাত্র সাগর উপক’লের কলাপাড়ায় ৩ মিঃমিঃ বাদে দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়নি। তবে সমগ্র দক্ষিণষাঞ্চল যুড়েই এখনো তাপমাত্রার পারদ ৩৪ ডিগ্রীর কাছে পীঠে। গত এপ্রিলের শেষ সপ্তাহে বরিশালে সর্বোচ্চ তাপমাত্রার পারদ ৩৬.৪ ডিগ্রী সেলসিয়াসে উঠে যাবার পরে মে মাসেরও বিভিন্ন সময়ে তা ৩৬ ডিগ্রী ছুই ছুই করছিল।
এদিকে বর্ষা মাথায় করে গত ৩১ মে স্বাভাবিকভাবেই দক্ষিণÑপশ্চিম মৌসুমী বায়ু দেশের উপক’ভাগে পৌছে দক্ষিনাঞ্চল সহ সারা দেশে বিস্তৃতি লাভ করলেও গত মাসের বিভিন্ন সময়ে তা খুব সক্রিয় ছিলনা। ফলে দক্ষিনাঞ্চল সহ সারা দেশেই স্বাভাবিকের চেয়ে কম বৃষ্টিপাতের অভাবে তাপমাত্রার পারদ ওপারে। জনজীবনে অস্বস্তির সাথে ফসল আবাদেও ঝুকি বাড়ছে।

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন