খুলনায় দিনে দিনে করোনার সংক্রমণ বেড়েই চলেছে। এ মুহুর্তে খুলনায় করোনা আক্রান্তের হার ১১ দশমিক ৫০ শতাংশ। জেলায় করোনা টিকার প্রথম ও দ্বিতীয় ডোজ শতভাগ গ্রহণ সম্পন্ন হলেও বুষ্টার ডোজ গ্রহণের হার মাত্র ২৭ শতাংশ। খুলনার সিভিল সার্জন ডা. সুজাত আহমেদ এ তথ্য জানিয়েছেন। বুস্টার ডোজ নিতে খুলনার মানুষের মাঝে এক প্রকার অনীহা কাজ করছে বলছে মনে করছেন সিভিল সার্জন। তবে, টিকা নিয়ে আতংক ও টিকা প্রদানের প্রক্রিয়াগত বিষয়ে ঝামেলার কারণে অনেকেই টিকা নিতে যাচ্ছেন না বলে অনুসন্ধানে জানা গেছে।
সিভিল সার্জন অফিস সূত্রে জানা গেছে, সমগ্র খুলনা বিভাগের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সংক্রমণ ও মৃত্যু হয়েছে খুলনা জেলায়। শুরু থেকে এ পর্যন্ত আক্রান্ত হয়েছেন ৩২ হাজার ২৭৬ জন। মারা গেছেন ৮০১ জন। গ্রামাঞ্চলের চেয়ে শহরাঞ্চলে মৃত্যুর হার বেশি। মহানগরীতে মারা গেছেন ৫৮২ জন। খুলনা সিটি কর্পোরেশনের চিকিৎসক স্বপন কুমার হালদার জানান, বর্তমান ১৮ বছরের উপরেও দ্বিতীয় ডোজ নেয়ার চারমাস পর সবাই টিকার কার্ড নিয়ে নগরীর ছয়টি কেন্দ্রে গেলে বুস্টার টিকা নিতে পারবেন। তাছাড়া প্রথমে দেয়া হয়েছে ফাইজার, মডার্না, এস্ট্রজেনেকা। এখন দেয়া হচ্ছে সিনোভ্যাক টিকা।
খুলনার শহীদ শেখ আবু নাসের হাসপাতালে কথা হয় ৩য় ডোজ বুস্টার টিকা নিতে আসা পারভিন বেগমের সাথে। তিনি বলেন, সকাল বেলা এসেছেন। লাইনে অপেক্ষা করে টিকা নিয়েছেন। বয়স্কদের আগে টিকা দেয়ার কথা থাকলেও তা মানা হচ্ছে না। আবার অনেকে অনলাইনে টিকার কার্ড সংগ্রহ করতে পারছে না । কম্পিউটারের দোকানে গিয়ে টিকার কার্ড সংগ্রহ করাকেও অনেকে বাড়তি ঝামেলা মনে করছেন। কয়েকজন জানান, বুস্টার ডোজ টিকা নিলে শরীরে প্রচুর জ্বর আসে এমন ভয়ে কেউ কেউ টিকা নিচ্ছেন না। তাছাড়া করোনা এখন দেশে নেই বলে অনেকে এই কোভিড ৩য় ডোজ টিকা নিচ্ছেন না বা আগ্রহ দেখাচ্ছে না। এ বিষয়ে হাসপাতালটির টিকা কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা রাসেল আহমেদ বলেন, প্রতিদিন মানুষ বুস্টার ডোজ টিকা নিচ্ছেন। আমরা ছয়জন মহিলা একসাথে টিকার বুথে প্রবেশ করাচ্ছি। আবার মহিলা বের হলে ছয়জন পুরুষ প্রবেশ করবে।
সিভিল সার্জন ডাঃ সুজাত আহমেদ বলেন, সকলে এই বুস্টার টিকার আওতায় আসবে। মূলতঃ শরীরে যে পরিমাণ অ্যান্টিবডি, টি-সেল বা বি-সেলের দরকার করোনা প্রতিরোধের মতো শক্তি অর্জন করতে আমাদের শরীর এই জীবাণুকে প্রতিহত করার সক্ষমতা থাকছে না। এদের করোনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করার ক্ষমতাটা আরেকটু বাড়িয়ে দেওয়ার জন্যই বুস্টার ডোজ প্রয়োজন। তাছাড়া বুস্টার ডোজ নিলে জ্বর হতে পারে, এটা স্বাভাবিক। জ¦র হলে প্যারাসিটমল জাতীয় ওষূধ খেতে হবে। একদিন পর শরীরে ব্যথা ও জ্বর সাধারণত থাকেনা। আর জ্বর শরীরে হলে বুঝতে হবে এই টিকা কার্যকর হচ্ছে। খুলনায় বুস্টার ডোজ গ্রহণের হার সন্তোষজনক নয় বলে তিনি মনে করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন