শুক্রবার ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২০ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বাস্থ্য

করোনাকালে মৌসুমি ভাইরাল জ্বর

| প্রকাশের সময় : ১৫ জুলাই, ২০২২, ১২:০৪ এএম

করোনা মহামারির চতুর্থ ঢেউ চলছে,আর যে যাই বলুক, করোনাভাইরাস এখনো আমাদের জীবনে এক আতঙ্কের নাম। এই আতঙ্ক বহুগুণ বেড়ে যায় যদি বাড়িতে জটিল রোগে আক্রান্তা একজন রোগী থাকেন। করোনা একটি ভয়ংকর ছোঁয়াচে ভাইরাস। স্পর্শ ও শ্বাসপ্রশ্বাসের মাধ্যমে দ্রুততম সময়ের মধ্যে এটি একজনের শরীর থেকে আরেকজনের শরীরে ছড়িয়ে পড়তে পারে। আর এই ভাইরাস তাদেরই খুব সহজে আক্রান্ত করতে পারে, যাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধক্ষমতা কম। তাদের ক্ষেত্রে ভাইরাস সংক্রমণের যাবতীয় জটিলতাও বেশি। জ্বর, সর্দি কাশির রোগীরা এর মধ্যে অন্যতম। মৌসুম পরিবর্তনের এ সময় হাঁচিকাশি নতুন কিছু নয়, তবে করোনাকালে থাকতে হবে সচেতন। আবহাওয়া পরিবর্তন নতুন কিছু নয়, সাধারণের কাছে এটি ‘ফ্লু’ বা ‘ভাইরাল ফ্লু’ হিসেবে পরিচিত। তবে কিছু সাবধানতা অবলম্বন করলে এমন ভাইরাল জ্বরের প্রতিরোধ করা সম্ভব। ভাইরাস জীবাণুর সংক্রমনের ফলে এই সর্দি-জ্বর সাত দিন পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে। ওষুধ ও পুষ্টিকর খাবার খেলে এই জ্বর দ্রুত ভালো হয়ে যা এমন আবহাওয়ার বেশি মাত্রায় সক্রিয় হয়ে পড়ছে ভাইরাস ও ব্যাকটেরিয়া। যার জেরেই জ্বর ও সর্দি-কাশির প্রকোপ বাড়ছে। সঙ্গে শরীরজুড়ে ব্যথা। তবে এতে আতঙ্কিত হওয়ার কোনো কিছু নেই।

মৌসুমি ভাইরাল জ্বরের লক্ষণঃ- মূলত জ্বর, কেউ কেউ মাথাব্যথা, সর্দি, অরুচি, গাব্যথা, কাশির উপসর্গ নিয়ে চিকিৎসকের কাছে আসেন। তবে আক্রান্তদের মধ্যে শিশুদের সংখ্যাই বেশি। এ সময় ঠান্ডা-সর্দির কারণে কান বন্ধ হতে পারে। কান বন্ধের সঙ্গে কানে ব্যথাও থাকতে পারে। এসব ক্ষেত্রে দ্রুত চিকিৎসা নেওয়া উচিত। অনেক সময় শিশুদের প্রচন্ড সর্দি লেগে যায়। কোনো কোনো শিশুর ক্ষেত্রে ১০৪ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত জ্বর হতেও দেখা দিতে পারে। তবে বড়দের ক্ষেত্রে জ্বর ততটা তীব্রভাবে না-ও হতে পারে।

* হঠাৎ জ্বর আসে এবং সাত দিন ধরে চলতে থাকে। ১০২-১০৩ ডিগ্রি ফারেনহাইট পর্যন্ত জ্বর হয়।
* শরীরের তাপমাত্রা অনেক বেড়ে যায়। এই জ্বরের সঙ্গে প্রচন্ড মাথাব্যথা থাকে। গায়ে, হাত, পায়ে তথা শরীরের পেশিতে অসহ্য ব্যথা করে।

* বেশিরভাগ সময় শরীরে জ্বরের সঙ্গে সর্দি-কাশি থাকে। প্রকৃতির হাওয়া বদলে নাক বন্ধ থাকে; নাক দিয়ে পানি পড়ে।
* মুখের স্বাদ নষ্ট হয়ে খিদে কমে যায় ও বমি বমি ভাব থাকে। শিশুদের ক্ষেত্রে মুখ লাল হয়ে যায়।

★পরামর্শঃ * জ্বর কখনই বাড়তে দেয়া যাবে না। জ্বর নিয়ন্ত্রণে রাখতে পুরো শরীর নরম কাপড় কুসুম গরম পানিতে ভিজিয়ে মুছে ফেলতে হবে।

* হঠাৎ করে ঠান্ডা যাতে না লাগে, তার জন্য বিশেষ সতর্ক থাকতে হবে। জ্বর হলে গোসল বন্ধ না করে প্রতিদিন একই সময়ে গোসল করতে হবে। চুল ও শরীরের পানি ভালো করে মুছে দিন, যাতে নতুন করে ঠান্ডা না লাগে।
* দৈনন্দিন খাওয়া-দাওয়া স্বাভাবিক রাখতে হবে। শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বাড়ায় পুষ্টিকর খাবার, সে জন্য পুষ্টিকর খাবার খেতে হবে। শীতের এই সময়ে আদা-লেবুর সংমিশ্রণে রঙ চা খেতে পারেন।

* অসুস্থ ব্যক্তিকে পর্যাপ্ত বিশ্রাম নিতে হবে। শীতকালে অনেকেরই পানির পিপাসা সেভাবে অনুভূত হয় না। আর এ কারণে পানি পানের পরিমাণও কমে যায়। যদিও রোগ প্রতিরোধের জন্য পর্যাপ্ত পানি পান করা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। তাই সুস্থ থাকার জন্য শীতকালে পিপাসা না লাগলেও পর্যাপ্ত পানি পান করুন। বাহিরের খাবার খাওয়া থেকে যথাসম্ভব বিরত থাকতে হবে।

হোমিওসমাধানঃ- হোমিওপ্যাথি হলো লক্ষণ ভিত্তিক চিকিৎসা বিজ্ঞান। এতে রোগের নামের কোন মূল্য নাই। তাই জ্বরের ঔষধও নির্বাচন করতে হবে জ্বরের লক্ষণ অনুসারে ; জ্বরের নাম অনুসারে নয়। জ্বর না কমার কারণে ঔষধ নির্বাচন ভুল হয়েছে মনে করে অযথা ঘনঘন ঔষধ পরিবর্তন করবেন না। হ্যাঁ, রোগ লক্ষণ যদি পরিবর্তন হয়ে যায়, তবে নতুন লক্ষণ যেই ঔষধের সাথে মিলে সেটি খাওয়ানো শুরু করুন।

করোনা সংক্রমণ আগের চেয়ে একটু বাড়ছে। তাই সবার মাস্ক পরতেই হবে। মাস্ক পরা নিশ্চিত করতে যা যা করার সরকারের তাই করতে হবে। নইলে হঠাৎ করে সংক্রমণ বেড়ে গেলে তখন সমস্যা দেখা দিতে পারে। চিকিৎসার চেয়ে প্রতিরোধই উত্তম ব্যবস্থা।

মুহাম্মাদ মাহতাব হোসাইন মাজেদ
চিকিৎসক, সম্পাদক ও প্রকাশক, দৈনিক স্বাস্থ্য তথ্য
স্বাস্থ্য বিষয়ক উপদেষ্টা, হিউম্যান রাইটস রিভিউ সোসাইটি কেন্দ্রীয়কমিটি
কো-চেয়ারম্যান, বাংলাদেশ রোগী কল্যাণ সোসাইটি
ইমেইলঃ ফৎসধুবফ৯৬@মসধরষ.পড়স
মোবাইল: ০১৮২২-৮৬৯৩৮৯।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন