গণপরিবহনে শৃঙ্খলা ফেরাতে কাঁচপুর থেকে ঘাটারচর পর্যন্ত চালু করা হয় ঢাকা নগর পরিবহন। কিন্তু শুরুর দিকে এই পরিবহনের সার্ভিস ছিলো ভালো। যাত্রীরা স্বাচ্ছন্দে গন্তব্যে যাতায়াত করতেন। সময় ও বাসের সার্ভিসে যাত্রীরা ছিলো সন্তুষ্ট। দিন যত যাচ্ছে এই স্বাচ্ছন্দের সার্ভিসে আসছে যাত্রীদের দুর্ভোগ। যে রুটে নগর পরিবহনে ওঠার জন্য যাত্রীদের লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট নিতে হতো সেই সার্ভিস এখন নিখোঁজ। এমন অভিযোগ সাধারণ যাত্রীদের।
তারা বলছেন, আগে নগর পরিবহনে টিকিট কেটে দাঁড়ালেই পাঁচ মিনিট পর পর বাস আসতো। এখন রুটে নেই নগর পরিবহনের বাস। এজন্য দীর্ঘ সময় দাঁড়িয়ে থেকে বাসের অপেক্ষা করে কষ্ট করে কোন লাভ হয় না। নগর পরিবহনে দায়িত্ব পালনকারী কর্মীরা বলছেন, গাড়ি ঢাকার বাইরে যাওয়ার কারণে রাস্তায় যাত্রী পরিবহন করতে পারছে না। আর যাত্রীরা বলছেন, এক সাথে সব বাস ঢাকার বাইরে রিজার্ভ পাঠিয়ে এই রুটের যাত্রীদের সাথে ছলচাতুরি করা হচ্ছে।
বাস রুট র্যাশনালাইজেশন কমিটির আওতায় গত বছরের ২৬ ডিসেম্বর যাত্রা শুরুর পর থেকেই যাত্রীদের কাছে ব্যাপক জনপ্রিয় হয়ে ওঠে এই বাস সার্ভিস। অন্যান্য পরিবহনের মতোই সেবার মান কমতে থাকে নগর পরিবহনের। তারপরও নির্দিষ্ট ভাড়া, বেশিরভাগ ক্ষেত্রে নির্দিষ্ট কাউন্টার থেকে যাত্রী ওঠানামার কারণে যাত্রীদের মধ্যে এখনো জনপ্রিয় এই সার্ভিস। কিন্তু ঈদুল আজহার কয়েকদিন আগে থেকেই উধাও নগর পরিবহন। ঈদের চার দিন পেরিয়ে গেলেও সড়কে এই কোম্পানির বাসের দেখা নেই। কাউন্টারে যাত্রীরা আগের মতোই অপেক্ষা করে ফিরে যাচ্ছেন, কিন্তু দেখা নেই কাউন্টারম্যানের। বাসগুলোর বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষও তেমন কিছু জানাতে পারেনি।
ঢাকা নগর পরিবহন চালু নিয়ে ঢাকার দুই সিটি করপোরেশনের প্রয়াস ছিল দীর্ঘ দিনের। দীর্ঘ কয়েক বছরের চেষ্টার পর শেষ পর্যন্ত গত ডিসেম্বরে এই সেবার উদ্বোধন করেন ঢাকার দুই মেয়র। এরপর ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র ব্যারিস্টার শেখ ফজলে নূর তাপস একাধিক অনুষ্ঠানে বলেছেন, নগর পরিবহনের চলতি রুটে বাস বাড়বে। কিছুদিন আগে নতুন তিন রুটেও এই বাস সার্ভিস চালুর ঘোষণা দেয়া হয়।
নগর পরিবহনের নিয়মিত যাত্রীরা বলেন, এমন একটি পরিবহনসেবা বন্ধ, অথচ কোনো ধরনের কোনো ঘোষণা দেয়া হয়নি। ছুটি শেষ হলেও কিন্তু নগর পরিবহনের দেখা নেই।
মতিঝিল কাউন্টারে টিকিট কিনতে আসা যাত্রী আশরাফ বলেন, আমি মোহাম্মদপুর যাবো। সকালে এসে দেখি নগর পরিবহনের সার্ভিস চলে না। আর রাস্তায়ও বাসের চাপ কম। কিছুক্ষণ অপেক্ষা করার পর জানতে পারলাম নগর পরিবহন চলে না। এখন বাধ্য হয়েই অন্য বাসে যেতে হবে।
ঢাকা ট্রাফিক কন্ট্রোল রুমের এক কর্মকর্তা বলেন, ঢাকা নগর পরিবহন সম্পর্কে আমাদের কিছু জানা নেই। শুধু তাই নয়, ৯৯৯ কিছুই জানে না। তারা অযথা আমাদের নম্বর দিয়েছে। এগুলো বলতে পারবে বাস কোম্পানি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে নগর পরিবহনের এক কর্মী বলেন, নগর পরিবহন ঈদ উপলক্ষে ঢাকার বাইরে গেছে। সবগুলো বাস একবারে বাইরে যাওয়ার কারণে এই রুটে নগর পরিবহন দেখা যাচ্ছে না। তবে শনিবার থেকে আবার চলবে বলে জানিয়েছেন তিনি। নগর পরিবহনের বসগুলো খ্যাপ নিয়ে ঢাকার বাইরে যাওয়ার কারণে এই বাস সার্ভিসে কর্মরত কাউন্টারের টিকিট বিক্রয়কর্মীরা অনেকেই ঘরে বসে অলস সময় কাটাচ্ছেন।
এ বিষয়ে জানতে ঢাকা পরিবহন সমন্বয় কর্তৃপক্ষের (ডিটিসিএ) নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতারের মোবাইল ফোনে কল করা হলে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ পাওয়া যায়।###
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন