ঈদের টানা ছুটি ও পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় দেশি-বিদেশি অনেক পর্যটক সুন্দরবন দেখতে খুলনা ও বাগেরহাটে আসছেন। কিন্তু সুন্দরবন ভ্রমণে তিন মাসের নিষেধাজ্ঞা থাকায় তারা বনে প্রবেশ করতে পারছেন না। তাই সুন্দরবনের অন্যান্য পর্যটন স্পটগুলোর মত করমজলেও বিরাজ করছে সুনসান নিরবতা।
জানা গেছে,স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় ঢাকা থেকে মোংলায় আসতে সময় লাগছে মাত্র সাড়ে ৩ ঘন্টা। তাই দেশি-বিদেশি অনেক পর্যটক ছুটিতে সুন্দরবন দেখতে এসেছেন। কিন্তু তারা জানেন না, সুন্দরবনে ভ্রমনের উপর ৩ মাসের নিষেধাজ্ঞা চলছে। সুন্দরবনের পর্যটন স্পট করমজলের বনরক্ষীরা তাদের আবার ফেরত পাঠিয়ে দিচ্ছেন।
ঢাকা থেকে আগত পর্যটক শরীফ ভুইয়া জানান, সুন্দবনে ভ্রমনের উপর নিষেধাজ্ঞা চলছে, তা আমি জানতাম না। বন রক্ষীরা সুন্দরবনে প্রবেশ করতে দেয়নি। তাই ফিরে যাচ্ছি, মনটা স্বাভাবিকভাবেই বেশ খারাপ। পর্যটক শাহ আলম জানান, স্বপ্নের পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় ঢাকা থেকে মোংলায় অল্প সময় পৌছানো যাচ্ছে। তাই দেশি-বিদেশি অনেক পর্যটক সুন্দরবন দেখতে আসছেন। আবার তারা ফেরত যাচ্ছেন। এর ফলে সরকার রাজস্ব হারাচ্ছে। আরেক পর্যটক মোল্লা তাওহিদ জানান, সুন্দরবনে ভ্রমনের উপর ৩ মাসের জন্য যে নিষেধাজ্ঞা চলছে তা ব্যাপকভাবে প্রচার করা দরকার ছিল। লোকজন সুন্দরবন দেখার যে আগ্রহ নিয়ে আসছেন, না জানার কারণে তা আসার পর নষ্ট হয়ে যাচ্ছে।
সুন্দরবন পর্যাটন কেন্দ্র ’করমজল’ এর ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা হাওলাদার আজাদ কবির জানান, মাছের প্রজনন বৃদ্ধির জন্য নৌচলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। এজন্য এখানে পর্যটক আসার উপর নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়েছে। ঈদের টানা ছুটি এবং পদ্মা সেতু চালু হওয়ায় দেশি-বিদেশি অনেক পর্যটক সুন্দরবন দেখতে আসছেন। দেশের সার্থে এই নিষেধাজ্ঞা সকলকে মানতেই হবে। এতে করে সুন্দরবন ভালো থাকবে এবং মাছ উৎপাদন বাড়বে। আগামি ১ সেপ্টেম্বর থেকে আবার সুন্দরবনের করমজলসহ পযটন কেন্দ্রগুলো দেশী-বিদেশী পর্যটকে মুখরিত হবে। দেখতে পারবে নানা প্রজাতির পশু পাখি। এমনটাই আশা বনবিভাগের এই কর্মকর্তার।
প্রসঙ্গত, সুন্দরবনের মৎস্য সম্পদ রক্ষায় গত ১ জুন থেকে ৩ মাসের প্রবেশ নিষেধাজ্ঞা জারি করেছে বনবিভাগ। নিষেধাজ্ঞা কার্যকর করতে সুন্দরবনে প্রবেশের সব ধরনের পাস পারমিট বাতিল করেছে বন বিভাগ। একই সঙ্গে সুন্দরবনের ভেতরে নিরাপত্তা জোরদার করা হয়েছে। ইন্টিগ্রেটেড রিসোর্সেস ম্যানেজমেন্ট প্ল্যানের (আরইআরএমপি) সুপারিশ অনুযায়ী ২০১৯ সাল থেকে প্রতি বছর ১ জুলাই থেকে ৩১ আগস্ট পর্যন্ত প্রজনন মৌসুমে সুন্দরবনের সব নদী ও খালে মাছ ধরা বন্ধ থাকে। এ বছর মৎস্য অধিদপ্তরের সঙ্গে সমন্বয় করে নিষেধাজ্ঞা আরও এক মাস এগিয়ে ১ জুন থেকে শুরু করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন