বড় ধরনের বন্যার পর এবার তাপদাহে পুড়ছে দেশ। জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাবে তাপমাত্রার পারদ বাড়ছেই। প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস জনজীবন। শ্রাবণের শুরু হলেও বৃষ্টির দেখা নেই। এ সময় আকাশজুড়ে থাকার কথা ঘন কালো মেঘ। মুষলধারার বৃষ্টিতে শীতল হওয়ার কথা প্রাণ-প্রকৃতি। কিন্তু ঋতুচক্রের এ নিয়ম ভেঙে শ্রাবণের আকাশ এখন শরতের মতো শুভ্র মেঘের ওড়াওড়ি। তবে প্রকৃতিতে নেই শরতের স্নিগ্ধতা। প্রকৃতিতে যে তাপদাহ তাতে গ্রীষ্মের আবহাওয়াই যেন বিরাজমান। আবহাওয়া অধিদফতর জানিয়েছে, সিলেটসহ দেশের ৩ বিভাগ ও ৭ জেলায় মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বইছে। এর মাঝে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীতে ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে এর মধ্যে দেশের ৮ বিভাগেই বৃষ্টি হওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে বলেও তারা জানিয়েছে। তবে তাতে তাপমাত্রার কোনো পরিবর্তন হবে না। আগামী ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে। আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন জানান, ঢাকা, টাঙ্গাইল, রাঙ্গামাটি, কুমিল্লা, চাঁদপুর, ফেনী ও চূয়াডাঙ্গাসহ রংপুর, রাজশাহী ও সিলেট বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। তিনি জানান, আগামী তিনদিনের শেষের দিকে বৃষ্টির প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে।
তীব্র গরমে দুর্বিষহ হয়ে পড়েছে মানুষের জীবন। বিশেষ করে খেটে খাওয়া শ্রমজীবী মানুষের জীবন অনেকটা স্থবির হয়ে পড়েছে। সকালে সূর্য উঠার সাথে সাথে প্রখর রোদের তাপে রিকশা নিয়ে বের হওয়ার পর কিছুক্ষণের মধ্যেই হাঁপিয়ে পড়ে। দু’একটা ক্ষেপ মারার পর তাদের শরীরে আর শক্তি থাকে না। গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নিতে বাধ্য হয় তারা। আগে দিনে যেখানে হাজার টাকা রোজগার করতে পারত, সেখানে এখন পাঁচশ’ টাকা আয় করতেই হিমশিম খেতে হচ্ছে, এতো গরম, এত কষ্ট সহ্য করাও দায়।
খিলগাঁওয়ে গাছের ছায়ায় বিশ্রাম নেওয়া রিকশা চালক আলাউদ্দিন বলেন, এই অসহ্য গরমে কোনো রকমে একটা ক্ষ্যাপ মারার পর আর পারা যায় না। একটু ছায়ায় বইসা না জিরাইয়া, পানি না খাইয়া আর ক্ষ্যাপ নেওন যাইবো না। বাপরে বাপ এমন গরম আগে আর দেহি নাই।
শুধু রাজধানী ঢাকাতেই নয়, গরমের কারণে এমনই দুর্বিষহ অবস্থা বিরাজ করছে সারাদেশে। আবহাওয়া পরিস্থিতি বিদ্যুতের লোডশেডিং, জ্বালানি ও পানি সরবরাহের ওপর বাড়তি চাপ তৈরি করেছে। অধিক তাপমাত্রার কারণে ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে ফসলেরও। বৃষ্টির অভাবে আউসের ক্ষেত শুকিয়ে যাচ্ছে। রোপা আমনের বীজতলা তৈরি করতে পারছে না কৃষক।
এছাড়া এই অস্বাভাবিক গরমের কারণে অনেকে আবার সর্দি জ্বরে আক্রান্ত হচ্ছেন। ডায়রিয়া, আমাশয়সহ, কাশি ও নানান চর্মরোগও ছড়াচ্ছে। জ্বর আর ডায়রিয়া আক্রান্ত রোগীদের সংখ্যা হাসপাতালগুলোতে প্রতিনিয়তই বাড়ছে। স্বাস্থ্য বিশেষজ্ঞরা বলছেন, মৃদু এ তাপ প্রবাহের মধ্যে কোথাও অতিরিক্ত জনসমাগম হলে হিট স্ট্রোকের ঝুঁকি রয়েছে। গরমের দিনে মারাত্মক সমস্যার একটি হিট স্ট্রোক। এর প্রধান কারণ পানিশূন্যতা। মানব দেহে স্বাভাবিক তাপমাত্রা ৯৮ ডিগ্রি ফারেনহাইট। প্রচণ্ড গরমে মানুষের শরীরের তাপ নিয়ন্ত্রণ ক্ষমতা নষ্ট হয়ে যাওয়ার সম্ভাবনাও থাকে প্রবল। এ অবস্থায় শরীরের তাপমাত্রা ১০৫ ডিগ্রি ফারেনহাইট ছাড়িয়ে গেলে হিট স্ট্রোক হয়। হিট স্ট্রোকের লক্ষণগুলো হলোÑ মাথা ঝিম ঝিম করা, বমি বমি ভাব বা বমি করা, অবসাদ ও দুর্বলতা, মাথাব্যথা, মাংসপেশির খিঁচুনি, চোখে ঝাঁপসা দেখা, হৃৎস্পন্দন বৃদ্ধি, শ্বাসকষ্ট, দৃষ্টিবিভ্রম, খিঁচুনি ইত্যাদি।
আবহাওয়াবিদরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে সঙ্গে তাপপ্রবাহের মতিগতিও বদলাচ্ছে, সেই সঙ্গে বদলাচ্ছে এর প্রভাবের এলাকা, বাড়ছে ‘হটস্পটের’ বিস্তার। এ সংকট জনস্বাস্থ্য সমস্যা বাড়ানোর পাশাপাশি কৃষি উৎপাদনকে ফেলছে ঝুঁকিতে।
বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) বন্যা ও পানি ব্যবস্থাপনা ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে প্রকৃতিতে শৈত্যপ্রবাহ, খরা ও অতিবৃষ্টি বা অনাবৃষ্টির মতো নানা বৈরিতা এখন বাস্তবতা। এর ভুক্তভোগী বিশ্বের প্রতিটি দেশ। আমারা উন্নয়নের নামে খালবিল, ডোবা-নালা এসব ক্রমাগত ভরাট করছি। নির্বিচারে দেশের বনভূমিকে ধ্বংস করছি। এর ফলে আবহাওয়ার বৈরিতা শুরু হয়েছে। গ্রিন হাউস নিঃসরণ বাড়ছে এবং সেই সাথে নানা প্রকৃতিক দুর্যোগ। তিনি বলেন, খালবিল, নদীনালা ও ডোবাগুলো সংরক্ষণ করতে হবে। শহর-গ্রামে সবুজের আধিক্য আরও অনেক বাড়াতে হবে। গ্রিন হাউস নিঃসরণ কমানো না গেলে সবার জন্য আরও ভয়াবহ বিপদ অপেক্ষা করছে।
গবেষকদের বিশ্লেষণ বলছে, জলবায়ু পরিবর্তন ও বৈশ্বিক উষ্ণতা বৃদ্ধি রোধে যথাযথ পদক্ষেপ না নিলে ২০৩৭ সাল নাগাদ বৈশ্বিক উষ্ণতা এখনকার তুলনায় ১ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়তে পারে। আর ২০৫১ সাল নাগাদ তা আরও ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে।
জলবায়ু পরিবর্তনের বিরূপ প্রভাব সারা বিশ্বেই এখন একট হয়ে দেখা দিয়েছে। অস্বাভাবিক তাপে, গরমে পুড়ছে ইউরোপ, আমেরিকা, চীনসহ এশিয়ার বিশাল অংশ। দাবানল ছড়িয়ে পড়েছে ফ্রান্স, স্পেন, পর্তুগাল, তুরস্ক, জার্মান, মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের টেক্সাস, ক্যালিফোর্নিয়া, কলোরাডো, ওকলাহোমা, আরকানসাসসহ কয়েকটি শহরে। ফ্রান্স, স্পেন ও পর্তুগালের কবলিত এলাকা থেকে গতকাল হাজার হাজার মানুষকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে। ইউরোপের স্বাস্থ্য কর্মকর্তারা সামনের দিনগুলোতে আরও তাপদাহের আশঙ্কা প্রকাশ করে স্বাস্থ্য সতর্কতা জারি করেছেন। বহুদেশে তাপমাত্রা এরই মধ্যে ৪০ থেকে ৪২ ডিগ্রি সেলসিয়াস ছাড়িয়েছে।
শীতপ্রধান শহর হিসেবে পরিচিত ছিল ফিনল্যান্ডের রোভানিইমি। তবে এবার রুদ্ররূপ ধারণ করেছে ওই শহরের তাপমাত্রা। সেখানেও এখন তাপমাত্রা ৩২ ডিগ্রি সেলসিয়াসের ওপরে। ফ্রান্সে দাবানলের আগুন নিয়ন্ত্রণে অসহায়ত্ব প্রকাশ করেছে দেশটির সরকার। ফ্রান্সের জিরোন্দে জঙ্গলে যে ভয়াবহ দাবানলের তাণ্ডব চলছে তা নিয়ন্ত্রণে আনা ফায়ার ফাইটারদের জন্য কঠিন হয়ে উঠেছে। তাপপ্রবাহে পুড়ছে পশ্চিম ইউরোপ। স্পেন ও পর্তুগালে দাবানলের অনিয়ন্ত্রিত আগুন দ্রুত ছড়িয়ে পড়ছে। চরম তাপমাত্রার কারণে পর্তুগালের মূল ভূখণ্ডের প্রায় সবটাতেই রেড অ্যালার্ট জারি রয়েছে। স্পেনের আবহাওয়া দফতর বলেছে, এবারের তাপমাত্রা ২০২১ সালের আগস্টে গোটা স্পেনের তাপমাত্রার রেকর্ড ৪৭ দশমিক ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াসও ছাড়িয়ে যেতে পারে।
তীব্র তাপপ্রবাহের কারণে রেড অ্যালার্ট জারি হয়েছে চীনের বাণিজ্যিক রাজধানী সাংহাইসহ ৮৬টি শহরে। দিন দিন তাপমাত্রা এতটাই ভয়াবহ আকার ধারণ করছে যে রাস্তায় ফাটল দেখা যাচ্ছে। এমনকি বাড়ির ছাদের টালিতেও ফাটল ধরতে দেখা গেছে। জাপানের ইতিহাসে সবচেয়ে ভয়াবহ তাপপ্রবাহে বিপর্যস্ত দেশটির জনজীবন। টোকিওর উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলীয় শহর ইসিসাকিতে তাপমাত্রা ৪০ দশমিক ২ ডিগ্রি সেলসিয়াস রেকর্ড করা হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা বলছেন, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে ঘনঘন তাপপ্রবাহ হচ্ছে এবং সময়ের সঙ্গে সঙ্গে বিশ্ব উষ্ণায়ন বেড়ে তাপপ্রবাহ আরো তীব্র হতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। জাতিসংঘের পরিবেশ বিষয়ক এক পুতবেদনে বলা হয়েছে, জলবায়ু পরিবর্তনের কারণে পৃথিবীতে আগুন জ্বলছে। ইতিমধ্যে সমস্ত জলবায়ু সূচক রেকর্ড ভঙ্গ করে চলেছে, পুরো বিশ্ব জলবায়ুই বিপর্যয়ের সম্মুখীন। শিল্প যুগ শুরুর পর থেকে এখন পর্যন্ত পৃথিবীর আবহমণ্ডলের গড় তাপমাত্রা ১ দশমিক ১ সেলসিয়াস বেড়েছে। কার্বন নিঃসারণ কমানোর বড় উদ্যোগ না নিলে তাপমাত্রা আরো বাড়বে। মনুষ্যসৃষ্ট জলবায়ু পরিবর্তন খরা বাড়িয়ে দিচ্ছে এবং আগামী ২৮ বছরে চরম দাবানলের সংখ্যা ৩০ শতাংশ বেড়ে যাওয়ার আশঙ্কা আছে।
ইনকিলাবের বিভিন্ন জেলার প্রতিনিধিরা জানান, অব্যাহত দাবদাহে পুড়ছে প্রাণ-প্রকৃতি। টানা কয়েকদিন দেশের প্রায় সর্বত্রই তাপমাত্রা বেশি। ভূগর্ভস্থ পানির স্তরও প্রায় ৩৯ ফুট নিচে নেমে গেছে। ফলে সুপেয় পানিরও সংকট দেখা দিয়েছে। রাজশাহীতে গতকালও সর্বোচ্চ ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস তাপমাত্র কের্ড করা হয়েছে। রংপুরে রোদ আর অসহ্য গরমে নাকাল মানুষ। নগরের সড়কে মানুষের তেমন আনাগোনা নেই। রাস্তাঘাট ফাঁকা। রংপুর আবহাওয়া অফিস সূত্র জানায়, সকালে তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস থাকলেও দুপুরের দিকে এসে তাপমাত্রা বেড়ে দাঁড়ায় ৩৭ ডিগ্রি সেলসিয়াসে। রংপুরের আকাশে মেঘও জমছে না। আগামী এক সপ্তাহ বৃষ্টিরও সম্ভাবনা নেই। প্রচণ্ড খরতাপ বহমান থাকবে।
সিলেট অফিস জানায়, যেমন পানিতে ভেসেছিল সিলেটে, ঠিক তেমনি এখন যেন আগুণে পুড়ছে গোটা সিলেট। পাহাড়ি ঢল ও বৃষ্টিতে অসহায় হয়েছিল আপামর সিলেটবাসী। আর্তনাদ ও বেঁচে থাকার আকুতিতে ঢেউ উঠেছিল সর্বত্র, কিন্তু এরমধ্যে গরমের দাপটে নতুন এক অসহায়ত্বের মুখে পড়েছে সিলেটের মানুষ। তীব্র গরমে অতীষ্ঠ প্রাণ। গরমে হাঁসফাঁস করেছে মানুষ। গরমের সাথে যুক্ত হয়েছে বিদ্যুৎ বিভ্রাট। ত্রাহি ত্রাহি অবস্থা সিলেটজুড়ে। গাছের পাতা নড়ছে না, মেঘে ঢাকছে না আকাশ। জ¦লন্ত এক কড়াইয়ে পরিণত হয়েছে সিলেটের বাতাস। আবহাওয়া অধিদপ্তর বলছে, আজও (শনিবার) অব্যাহত থাকবে এমন অস্থির গরম।
আবহাওয়া অধিদপ্তর, সিলেটের সিনিয়র আবহাওয়াবিাদ সাঈদ আহমদ চৌধুরী বলেন, গতকাল শুক্রবার সিলেটে সর্বোচ্চ তাপমাত্রা ছিলো ৩৬. ৪ ডিগ্রি সেলসিয়াস। তবে বৃহস্পতিবার থেকে কম ২ ডিগ্রি। আজ শনিবারও ৩৬ ডিগ্রির উপরে তাপমাত্রা থাকবে জানিয়ে তিনি বলেন, ৩৬ ডিগ্রির উপরে তাপমাত্রা থাকলে তাকে মৃদু তাপপ্রবাহ ধরা হয়। যা শনিবারও অব্যাহত থাকবে। তবে আগামীকাল তাপমাত্রা একটু কমতে পারে। রোববার থেকে ভারি বৃষ্টির সম্ভাবনা রয়েছে বলে জানান তিনি। টানা বৃষ্টি আর দীর্ঘ বন্যায় এমনিতেই কাহিল অবস্থা সিলেটবাসীর। এবার গরমে ওষ্ঠাগত প্রাণ। কদিন থেকেই দাবদাহ চলছে সিলেটে। তাপমাত্রা ৩৫ ডিগ্রি নিচে নামছেই না। সিলেট নগরের সাগরদীঘির পার এলাকার বাসিন্দা সোহাগ আহমদ বলেন, ‘একদিকে রোদের তীব্রতা অন্যদিকে লোডশেডিং। ঘরে-বাইরে কোথাও একদন্ড শান্তিতে বসার সুযোগ নেই। গরম বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে লোডশেডিংও বেড়ে গেছে।’ গতকাল সর্বোচ্চ তাপমাত্রা রেকর্ড করা হয়েছে রাজশাহীতে, ৩৯ ডিগ্রি সেলসিয়াস। এছাড়া দেশের ৮ বিভাগেই বৃষ্টি হতে পারে বলে জানিয়েছে অধিদপ্তর। গতকাল (১৫ জুলাই) বৃষ্টির ঋতু আষাঢ়ের শেষ দিন, ৩১ তারিখ। বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে গতকাল সকাল ৬টা পর্যন্ত রংপুর বিভাগ ছাড়া দেশের সব বিভাগেই কম বেশি বৃষ্টি হয়েছে। এর মাঝে সর্বোচ্চ বৃষ্টি হয়েছে বগুড়ায়, ১৮ মিলিমিটার। এ সময়ে ঢাকায় বৃষ্টি হয়েছে ২ মিলিমিটার। গত বৃহস্পতিবার ঢাকায় তাপমাত্রা ছিল ৩৬ দশমিক ৩ ডিগ্রি সেলসিয়াস। গতকাল সকাল ৬টা থেকে পরবর্তী ২৪ ঘণ্টায় সারাদেশে দিন ও রাতের তাপমাত্রা প্রায় অপরিবর্তিত থাকবে বলে জানিয়েছে অধিদপ্তর।
আবহাওয়াবিদ মো. মনোয়ার হোসেন জানান, ঢাকা, টাঙ্গাইল, রাঙ্গামাটি, কুমিল্লা, চাঁদপুর, ফেনী ও চূয়াডাঙ্গাসহ রংপুর, রাজশাহী ও সিলেট বিভাগের উপর দিয়ে মৃদু থেকে মাঝারি ধরনের তাপপ্রবাহ বয়ে যাচ্ছে এবং তা অব্যাহত থাকতে পারে। তিনি আরও জানান, চট্টগ্রাম বিভাগের অনেক জায়গায়, ঢাকা, ময়মনসিংহ, বরিশাল ও সিলেট বিভাগের কিছু কিছু জায়গায় এবং রংপুর, রাজশাহী ও খুলনা বিভাগরে দু-এক জায়গায় অস্থায়ীভাবে দমকা হাওয়াসহ হালকা থেকে মাঝারি ধরনের বৃষ্টি অথবা বজ্রসহ বৃষ্টি হতে পারে। সেই সঙ্গে দেশের কোথাও কোথাও বিচ্ছিন্নভাবে মাঝারি ধরনের ভারী বর্ষণ হতে পারে। এছাড়া আগামী তিনদিনের আবহাওয়া পূর্বাভাসে তিনি জানান, আগামী তিনদিনের শেষের দিকে বৃষ্টির প্রবণতা বৃদ্ধি পেতে পারে।
আবহাওয়াবিদ তরিফুল নেওয়াজ কবির বলেন, ১৬-১৭ জুলাই পর্যন্ত পরিস্থিতি এমনই থাকতে পারে। মাঝে মাঝে কোথাও হালকা বৃষ্টি হলেও গরম খুব একটা কমবে না। গরম কমতে হলে টানা বৃষ্টি হতে হবে। ১৭ বা ১৮ জুলাইয়ের পর বৃষ্টির পরিমাণ কিছুটা বাড়তে পারে। তিনি বলেন, তাপমাত্রা এখন গড়ে ৩৬ থেকে ৩৮ ডিগ্রি সেলসিয়াসের মধ্যে আছে। মৌসুমি বায়ুর কারণে বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বেশি। গরমে ঘেমে গেলেও ঘাম শুকাচ্ছে না। ফলে ভ্যাপসা একটা ভাব তৈরি হচ্ছে। এ কারণে যতটুকু তাপমাত্রা বেড়েছে তার চেয়ে বেশি তাপ অনুভূত হচ্ছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন