দক্ষিণাঞ্চলের পুনরায় করোনার বিস্তৃতি অব্যাহত রয়েছে। চলতি মাসের প্রথম ১৭ দিনে এ অঞ্চলের ৬ জেলায় আরো ৭০২জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে বলে বিভাগীয় স্বাস্থ্য দপ্তরের হিসেবে জানা গেছে। তবে এসময়ে সুস্থ হয়ে উঠেছেন মাত্র ১৩৬ জন।
জুনের মধ্যভাগ থেকেই দক্ষিনাঞ্চলে করোনা’র সংক্রমন বাড়তে শুরু করে। সংয়ক্রমন ক্রমশ বাড়লেও এখনো বরিশাল মহানগরী সহ দক্ষিণাঞ্চলের কোথাও নুন্যতম স্বাস্থ্যবিধি পালনের বিষয়টি লক্ষ্যনীয় নয়। সদ্য সমাপ্ত কোরবানির পশুর হাট সহ ঈদের সাধারন কেনাকাটার জনসমাগম সহ উপচেপড়া ভীর নিয়ে গন পরিবহনের কোথাও স্বাস্থ্য বিধি খুজে পাওয়া যায়নি। বিষয়টি নিয়ে স্বাস্থ্য বিভাগ থেকে কোন প্রচারনা সহ প্রশাসনেরও পদক্ষেপ অনুপস্থিত।
ফলে ঈদ পরবর্তি করোনা সংক্রমন নিয়ে কিছুটা উদ্বেগ আছে বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের মাঝেও। গত ১৭ দিনে দক্ষিনাঞ্চলে সর্বাধিক আক্রান্তের তালিকায়ও মহানগরী সহ বরিশাল জেলার নামই রয়েছে। এসময়ে দক্ষিণাঞ্চলে মোট শনাক্ত ৭০২ জনের মধ্যে বরিশালের সংখ্যাটাই ৩৮৮। যারমধ্যে মহানগরীতেই আক্রান্ত প্রায় ৩শ। এ হিসেবে দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় আক্রান্তের প্রায় ৪০ ভাগই বরিশাল মহানগরীতে। অথচ গোটা বিভাগের মোট জনসংখ্যার মাত্র ৬% এ নগরীতে বাস করেন।
১৭ জুলাই সকাল পর্যন্ত দক্ষিণাঞ্চলে সর্বমোট করোনা আক্রান্ত ৫৩ হাজার ৫৭৫ জনের মধ্যে বরিশাল জেলারই সংখ্যাটাই ২১ হাজার ৭১৪। যারমধ্যে মহানগরীতেই করোনা আক্রান্তের সংখ্যা প্রায় ১৩ হাজারের কাছে। দক্ষিণাঞ্চলের ৬ জেলায় এপর্যন্ত মৃত ৬৯০ জনের মধ্যে বরিশাল জেলায়ই মারা গেছেন ২৩৫ জন। যারমধ্যে মহানগরীতেই মৃত্যু হয়েছে ১০৩ জনের।
গত ১৭ দিনে পটুয়াখালীতে আক্রান্ত ৫৪ জন সহ মোট আক্রান্তের সংখ্যাটা দাড়িয়েছে ৭ হাজার ১০৬ জনে। জেলাটিতে এ পর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ১১০ জনের। দ্বীপজেলা ভোলাতেও এপর্যন্ত ৭ হাজার ৯৮১ জন আক্রান্তের মধ্যে গত ১৭ দিনেই ৯৭ জনের দেহে করোনা পজিটিভ শনাক্ত হয়েছে। জেলাটিতে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৯২ জন। পিরোজপুরেও গত ১৭ দিনে ৬৩ জন সহ মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৬ হাজার ৩৭৮ । এপর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৮৩ জনের। দক্ষিণাঞ্চলের সর্বাধিক মৃত্যু হারের বরগুনাতেও গত ১৭ দিনে ৩৬ জন সহ এপর্যন্ত করোনা শনাক্তের সংখ্যা ৪ হাজার ৭১৫ জন। জেলাটিতে এপর্যন্ত মৃত্যু হয়েছে ৯৯ জনের। আর দক্ষিণাঞ্চলের সবচেয়ে ছোট জেলা ঝালকাঠীতে শনাক্তের হার সর্বোচ্চ। জেলাটিতে গত ১৭ দিনে ৬৪ জন সহ মোট আক্রান্তের সংখ্যা ৫ হাজার ৬৮১। জেলাটিতে করোনা সংক্রমনে এ পর্যন্ত মারা গেছেন ৭১ জন। স্বাস্থ্য দপ্তরের অনুমিত হিসেবে দক্ষিণাঞ্চলের ৪২ উপজেলায় এপর্যন্ত সুস্থ হয়ে উঠেছেন ৫১ হাজার ৯৯৮ জন।
স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের একাধিক বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক গত জুনের মধ্যভাগ থেকে দক্ষিণাঞ্চলে করেনা সংক্রমন ছড়িয়ে পড়তে শুরু করার প্রেক্ষিতে অবিলম্বে মাস্ক ব্যাবহার সহ সকলকে স্বাস্থ্য বিধি অনুসরনের তাগিদ দিয়েছেন। নচেত গত দুটি বছরের মত এবারো জুলাই থেকে সংক্রমন আরো বৃদ্ধির আশংকার কথাও জানিয়েছেন তারা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন