ই-কমার্স প্রতিষ্ঠান জেকা বাজারের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) জাবিবুল্লাহ খান জাবেরকে গ্রেফতার করেছে পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি)। গত শনিবার ফরিদপুরের আলীপুর শহরে অভিযান চালিয়ে তাকে গ্রেফতার করা হয়। জাবিউল্লাহ রাজবাড়ীর কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া ইউনিয়নের গঙ্গানন্দপুর গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে। তার বিরুদ্ধে রাজবাড়ীসহ পার্শ্ববর্তী কয়েকটি জেলার ২০ হাজার গ্রাহকের ৬০ কোটি টাকা আত্মসাতের অভিযোগ রয়েছে। গতকাল রোববার রাজবাড়ীতে জেকা বাজারের মালিক নিয়ে শহরের নান্নু টাওয়ারে অভিযান চালিয়েছে সিআইডি। প্রতিষ্ঠান বন্ধ করে দেবার দীর্ঘ ১০ মাসেও গ্রাহকরা বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরত পায়নি। বিনিয়োগকৃত অর্থ ফেরতের না পেয়ে মানবেতর জীবনযাপন করছেন প্রতারিত গ্রাহকরা। এ ঘটনায় থানায় মামলা দায়ের হয়েছে। মামলার পর থেকে রাজবাড়ী জেকা বাজারের মালিক জাবিউল্লাহ খান জাবের ছিলো আত্মগোপনে।
রাজবাড়ী সিআইডির পুলিশ পরিদর্শক জিল্লুর রহমান বলেন, প্রতারিত গ্রাহকদের দায়েরকৃত মামলাটি সিআইসিকে তদন্তভার দেন। তাকে গ্রেফতার করার পর রাজবাড়ী শহরের নান্নু টাওয়ারে জেকা বাজার অফিসে অভিযান পরিচালনা করা হয়। আজ সোমবার সকাল ১১টায় পুনরায় অভিযান পরিচালনা করা হবে। জানা গেছে, স্বল্প মূল্যে মোটরসাইকেল, প্রসাধনী সামগ্রীসহ নানা প্রলোভন দেখিয়ে গ্রাহকদের কাছ থেকে টাকা হাতিয়ে নেয় জেকা বাজার। জেকা বাজারের মালিক জাবের উল্লাহ রাজবাড়ী জেলার প্রায় ২০ হাজার গ্রাহকের কাছ থেকে ৬০ থেকে ৭০ কোটি টাকা হাতিয়ে নেয়। এসব টাকা দিয়ে পরিবারের বিভিন্ন সদস্যের নামে ঢাকা, রাজবাড়ী শহর, কালুখালীতে জমি, ফ্লাট কিনেছে প্রতিষ্ঠানটির মালিক। গ্রাহকদের টাকা ফেরত না দিয়ে বিভিন্ন ভাবে হুমকি দেওয়াসহ টালবাহানা করছে। জেকা বাজারে টাকা বিনিয়োগ করে স্বর্বস্ব হারিয়ে মানবেতর জীবনযাপন করাসহ টিম লিডাররা গ্রাহকদের চাপের মুখে রয়েছে। ভুক্তভোগী প্রতারিতরা বলেন, রাজবাড়ী জেলার কালুখালী উপজেলার গঙ্গানন্দপুর গ্রামের শুকুর আলীর ছেলে জাবিউল্লাহ খান জাবের, তার পিতা শুকুর আলী শেখ, মাতা মমতা বেগম, বোন রোকেয়া খাতুন, বালিয়াকান্দি উপজেলার নবাবপুর ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রামের ময়নুজ্জামান হোসেনের ছেলে মো. আনিসুর রহমান, পাবনার সুজানগর উপজেলার মুরালিপুর গ্রামের আ. গণি শেখের ছেলে সাইদুল বাশার, কালুখালী উপজেলার রতনদিয়া গ্রামের আ. মান্নান বেপারীর ছেলে শাহ ফিরোজ আহমেদ মিলে জেকা বাজার লি. নামক কোম্পানীর অন্যান্য পরিচালক এমএলএম কোম্পানী খুলে গ্রাহকদের ৬০ কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। মো. মকলেছুর রহমান আপনের ও তার টিমের সদস্যদের ৫০ লাখ টাকা, মো. যুবায়েরের ও তার টিমের সদস্যদের ৭০ লাখ টাকা, হাবিবুর রহমান রনির ও তার টিমের সদস্যদের এক কোটি ২০ লাখ টাকা হাতিয়ে নিয়েছে।
এদিকে, কালুখালী উপজেলার গঙ্গানন্দপুর গ্রামের বাড়ীতে সাংবাদিক সম্মেলনে ছেলে জাবি উল্লাহ খান জাবেরকে অনৈতিক কার্যকলাপ, মাদক সেবনের অভিযোগ ও রাজবাড়ী আদালতের নোটারী পাবলিকের মাধ্যমেও ত্যাজ্য ঘোষণা করেছেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন