কক্সবাজারের রামু উপজেলায় শ্বাশুড়িকে হত্যার পর টুকরো টুকরো করে বাড়ির আঙিনায় মাটিচাপা দেওয়ার ঘটনা ঘটেছে। ঘটনার একদিন পর ছেলে বাড়ির পাশে মাটি উঁচু দেখে মাটি খুঁড়ে মায়ের মৃতদেহ দেখে পুলিশকে অবহিত করে। গতকাল রোববার বিকাল ৬ টায় রামু থানা পুলিশ মৃতদেহ উদ্ধার এবং এ ঘটনায় প্রধান অভিযুক্ত পুত্রবধু রাশেদা বেগমকে আটক করেছে। উপজেলার দক্ষিন মিঠাছড়ি ইউনিয়নের ২নং ওয়ার্ডের পশ্চিম উমখালী হাজির পাড়া এলাকায় বর্বরোচিত এ ঘটনা ঘটেছে। হত্যাকান্ডের শিকার মমতাজ বেগম ওই এলাকার মৃত আবদুল কাদের স্ত্রী। নিহত মমতাজ বেগমের ছেলে আলমগীর বিষয়টি স্বীকার করে জানান- তার স্ত্রী রাশেদা বেগমের সাথে মায়ের মনোমালিন্য চলছিলো। এরই জের ধরে গত শনিবার বিকালে রাশেদা বেগম তার মাকে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে এবং মাথা, হাত, পা সহ মৃতদেহ ৬ টুকরো করে বাড়ির আঙ্গিনায় টিউবওয়েলের পাশে গর্ত করে পুতে ফেলে। তিনি আরো জানান- ঘটনার আগের দিন থেকে বাড়িতে মাকে না দেখে তিনি স্ত্রীর কাছে জানতে চাইলে মা বাড়ি থেকে চলে গেছে বলে জানান। এরপর থেকে ফেসবুকে মায়ের ছবি দিয়ে সন্ধান চাচ্ছিলেন তিনি। কিন্তু রোববার বিকাল ৫টার দিকে বাড়ির টিউবওয়েলের পাশে মাটি উঁচু দেখতে পান। পরে ওই স্থানে মাটি খুঁড়তেই মায়ের শাড়ি ও মৃতদেহ দেখতে পান এবং পুলিশকে বিষয়টি অবহিত করেন। গতকাল রোববার বিকাল সাড়ে ৫ টার দিকে রামু থানা পুলিশের একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে মাটিচাপা অবস্থায় নিহত মমতাজ বেগমের লাশ উদ্ধারের কাজ শুরু করে। রামু থানার ওসি (তদন্ত) অরূপ কুমার চৌধুরী জানিয়েছেন- প্রাথমিকভাবে শ্বাশুড়িকে হত্যার দায় স্বীকার করেছে অভিযুক্ত রাশেদা বেগম এবং তাকে আটক করা হয়েছে। তিনি আরো জানান- হত্যার পর মৃতদেহ টুকরো করা হয়েছে। এরমধ্যে মাথা, ২ হাত এবং ২ পা বিচ্ছিন্ন করা হয়েছে। এদিকে অভিযুক্ত রাশেদা বেগম জানান, গতকাল সকালে নিহত মমতাজ বেগমের সাথে তর্কাতর্কির এক পর্যায়ে দা দিয়ে কুপিয়ে হত্যা করে। এরপর টুকরো টুকরো করে বস্তাবন্দি করে লাশ। পরে বাড়িতে কেউ না থাকার সুযোগে পাশের টিউবওয়েলের পাশে বস্তাবন্দি করে লাশ মাটিচাপা দেন। পারিবারিক কলহের জের ধরে এই ঘটনা বলে জানান স্থানীয়রা। ঘটনাস্থলে থাকা রামু থানা পুলিশের উপ-পরিদর্শক মো. মঞ্জু বলেন, মৃতদেহ উদ্ধার করে সুরতহাল প্রতিবেদন তৈরি করে ময়নাতদন্তের জন্য কক্সবাজার সরকারি মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হবে। জানা গেছে, ৩ বছর পূর্বে নিহত মমতাজ বেগমের ছেলে আলমগীরের সাথে রাশেদা বেগমের বিয়ে হয়। এখনো তারা নিঃসন্তান। এছাড়া আটক রাশেদা বেগম মমতাজ বেগমের আপন ভাতিজি। রাশেদা বেগমের পৈত্রিক বাড়ি কক্সবাজার সদর উপজেলার ভারুয়াখালী ইউনিয়নে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন