ফেনী জেলা যুবদলের সভাপতি জাকির হোসেন জসিমকে গ্রেফতার এবং জেলা বিএনপির সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলালের ব্যক্তিগত অফিস ভাংচুরের প্রতিবাদে আজ বিকেল ৫টায় জেলা বিএনপি সংবাদ সম্মেলন করেছে। এসময় উপস্থিত ছিলেন, জেলা বিএনপির আহবায়ক শেখ ফরিদ বাহার,সদস্য সচিব আলাল উদ্দিন আলাল,যুগ্ম-আহবায়ক প্রফেসর এম এ খালেক,এয়াকুব নবী, আলাউদ্দিন গঠন,গাজী হাবিব উল্লাহ মানিক, আনোয়ার হোসেন পাটোয়ারী ও যুবদল সভাপতি জসিমের স্ত্রী, সন্তান সহ পৌর বিএনপি,যুবদল,ছাত্রদলের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।
সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন জেলা বিএনপির আহবায়ক শেখ ফরিদ বাহার। লিখিত বক্তব্যে উল্লেখ করা হয়, গত ২১শে জুলাই ফেনী জেলা যুবদলের সংগ্রামী সভাপতি জাকির হোসেন জসিমকে ফেনী থানা পুলিশ ঢাকার বিজয় নগর থেকে গ্রেফতার করে রাত সাড়ে ১২টার দিকে তার ফেনীর রামপুর সৈয়দ বাড়ী লেইনস্থ বাসায় নিয়ে আসে। বাসার সামনে জসিমকে দাঁড় করিয়ে রেখে ফেনী থানার ওসি নিজাম উদ্দিন বাসার দরজায় লাথি মেরে দরজা খুলতে বলে। তখন জসিমের মেয়ে সানজিদা আপরোজ পপি দরজা খুলে দিলে ওসির নেতৃত্বে কয়েকজন পুলিশ সদস্য ঘরের ভিতরে প্রবেশ করে জসিমের ছেলে- মেয়ের কাছ থেকে মোবাইল ফোন কেড়ে নেয়। এরপর ঘরের বিভিন্ন কক্ষে ঢুকে অস্ত্র আছে বলে তল্লাসী চালায়। তখন জসিমের মেয়ে সানজিদা বলে আমাদের ঘরে কিসের অস্ত্র আছে, আপনারা এগুলো কি বলেন বলে চিৎকার ও কান্নাকাটি করতে থাকে। একপর্যায়ে ওসির নিজের হাতে থাকা কাগজে মোড়ানো একটি অস্ত্র বের করে অভার ড্রয়ারের উপর রেখে সেই অস্ত্রকে উদ্ধার দেখানো হয়েছে বলে তারা সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন। পুলিশ নিজে অস্ত্র বের করে সেটিকে আবার উদ্ধারের নাটক সাজিয়েছেন, এর একটি ভিড়িও ক্লিপ তাদের হাতে আছে বলে তারা লিখিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে উল্লেখ করেছেন এবং জসিমের স্ত্রী ও মেয়ে সাংবাদিকদের জানিয়েছেন।
তারা আরো উল্লেখ করেন, আমাদের বক্তব্য স্পষ্ট আমরা জসিমের বিরুদ্ধে এই সাজানো নাটকের অবসান চাই এবং ফেনী থানার ওসিসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তাদের অপসারণ ও এই ঘটনার বিচার বিভাগীয় তদন্ত দাবী করেন। অবিলম্বে জাকির হোসেন জসিমের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার ও তার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি জানান। এদিকে প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে আরো দুটি বিষয় উল্লেখ করা হয় যে, গতকাল শুক্রবার জেলা বিএনপির সদস্যসচিব আলাল উদ্দিন আলালের ব্যক্তিগত অফিসে হামলা চালায় ছাত্রলীগ-যুবলীগের সন্ত্রাসীরা। তখন আলাল তার অফিসে আজকের সংবাদ সম্মেলনের বিষয় নিয়ে কাজ করছিলেন। তখন তাকে এসব সন্ত্রাসীরা অফিস থেকে বের হয়ে যেতে বলেন, আলাল অফিস থেকে বের হবে না বলে তাদেরকে জানায়। পরে সন্ত্রাসীরা তার অফিসের টেবিলের গ্লাস ও চেয়ার ভাংচুর করে এবং সেখানে থাকা কালিদহ ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি নুরুল হক লিটনকে শারীরিকভাবে লাঞ্চিত করে হুমকী ধামকি দিয়ে চলে যায়।
সংবাদ সম্মেলনে তারা আরো উল্লেখ করে বলেন, প্রতিদিন শহরের বিভিন্ন স্পটে এবং ফেনী-২ আসনের সাবেক এমপি ও খালেদা জিয়ার উপদেষ্টা অধ্যাপক জয়নাল আবেদীন ভিপির ফলেশ্বরের বাড়ির সামনে ছাত্রলীগ-যুবলীগ নামধারী স্বসস্ত্র মোহড়া দিয়ে যাচ্ছে। পুলিশ এসবের বিরুদ্ধে কোনো ধরনের ব্যবস্থা না নিয়ে ছাত্রলীগ-যুবলীগের ক্যাডারদেরকে নিয়ে বিএনপির নেতাকর্মীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে হানা দিচ্ছে। তারা এসব ঘটনার প্রতিকার চান।
সংবাদ সম্মেলনের শেষের দিকে যুবদল সভাপতি জসিমের স্ত্রী উপস্থিত সাংবাদিকদেরকে জানান, আমার স্বামীকে পুলিশ বিনা কারনে মিথ্যা অস্ত্র মামলা দিয়ে ফাঁসিয়েছে। বর্তমানে তার বিরুদ্ধে কোনো মামলা নাই,ওয়ারেন্টও নাই, পূর্বের মামলাগুলোর সে নিয়মিত হাজিরা দেয়, কিন্তু তাকে পুলিশ মিথ্যা অস্ত্র মামলায় গ্রেফতার দেখিয়েছে। আমি এই ঘটনার বিচার চাই এবং আমার স্বামীর নিঃশর্ত মুক্তি দাবী জানাই। তবে আমরা প্রতিটা মূহুর্ত জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছি। এ ব্যাপারে আমি প্রশাসন সহ সকলের কাছে সহযোগিতা কামনা করছি।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন