নেছারাবাদে চোর সন্দেহে অভিযোগ এনে একটি মাদ্রাসার খাদেমকে বেধে ফিল্মী স্টাইলে বেদম মারপিট করেছেন ইউপি সদস্য ও তার সহযোগীরা। সন্দেহভাজন ওই লোকটিকে অমানুষিকভাবে বেদম মারদরের একটি ভিডিও স্থানীয়ভাবে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। ঘটনাটি ঘটেছে উপজেলার সোহাগদল ইউনিয়ন পরিষদে। চুরির অভিযোগে ওই লোকটিকে মারধর করা ইউপি সদস্য খোকনকে জিজ্ঞাসার জন্য জানতে চেয়ে ফোন দিলে তিনি বলেন, “সাংবাদিকের কাছে আমি জবাব দিতে বাধ্য নই। আমি জনপ্রতিনিধি ইজ্জত দিয়ে কথা বলবে"
ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে জানাযায়, গত শনিবার দুপুরে সোহাগদল ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য ও তার সহযোগীরা উত্তর পশ্চিম সোহাগদল বায়তুন নুর জামে মসজিদের ইলেকট্রনিক্স মালামাল চুরির অভিযোগ এনে ইন্দেরহাট বন্দর থেকে মো. জহিরুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তিকে ধরে ইউনিয়ন পরিষদে নিয়ে যায়। সেখানে নিয়ে ইউপি সদস্য খোকন ও তার সহযোগীরা জহিরুল ইসলামকে বেধে ক্রিকেট স্ট্যাম্প দিয়ে এলোপাথারি ভাবে পিটাতে থাকে। এসময় জহিরুল ইসলাম চিৎকার দিয়ে বলতে থাকেন, “আমাকে মারেন কেন, আমাকে মারবেন না, আইনের লোক আছে, প্রয়োজনে তাদের হাতে তুলে দিন, আপনারা আমার মোবাইল ও জিনিস পত্র সব নিয়ে গেছেন, আমি অসুস্থ আমাকে মাইরেন না”। এসময় সহযোগীদের মধ্যে একজন পায়ের নিচে পিটানোর নির্দেশ দেয়।
পরে খবর পেয়ে নেছারাবাদ থানার পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে জহিরুল ইসলামকে উদ্ধার করে থানায় নিয়ে যায়। পরে ইউপি সদস্য খোকন বাদী হয়ে নেছারাবাদ থানায় একটি চুরির মামলা দায়ের করেন। রোববার সকালে জহিরকে ওই মামলায় পিরোজপুর কোর্টে প্রেরণ করেছে পুলিশ। পরবর্তীতে জহিরকে নির্যাতনের একটি ভিডিও ক্লিপ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা ব্যাপক ভাইরাল হয়। (যা এই প্রতিনিধির সংগ্রহে রয়েছে।)
জহিরুল ইসলাম পার্শবর্তী ঝালকাঠী উপজেলার শেখেরহাট ইউনিয়নের নওয়াপাড়া গ্রামের নুরুল হকের ছেলে। সে ঝালকাঠী জেলার হদুয়া বৈশাখিয়া সিনিয়র ফাজিল মাদ্রাসার একজন খাদেম বলে জানান ওই মাদ্রাসার আপর খাদেম সাইদুল ইসলাম। অধ্যক্ষের সাথে কথা বলতে চাইলে তিনি জানান অধ্যক্ষ হজ্বের জন্য সৌদি আরবে অবস্থান করছেন।
এ বিষয়ে খোকনের সাথে মোবাইল ফোনে ০১৭৯৮৩২৭৮৪৮ কথা বললে তিনি বলেন, “সাংবাদিকের কাছে আমি জবাব দিতে বাধ্য নই। আমি একজন প্রতিনিধি আমাকে ইজ্জত দিয়ে কথা বলবেন বলে ফোন কেটে দেন। পরে অন্যান্য সাংবাদিকরা ফোন করলে তিনি ধরেননি।
এ ব্যপারে সিনিয়র সহকারি পুলিশ সুপার (নেছারাবাদ সার্কেল) মো. রিয়াজ হোসেন (পিপিএম) বলেন, ভিডিও দেখেছি তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. মোশারেফ হোসেন বলেন, সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে বিষয়টি জেনেছি। কোন ব্যক্তিকে এভাবে মারার অধিকার কারো নেই। এব্যাপারে ওসি ও সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন চেয়ারম্যানকে বিস্তারিত জানানোর জন্য বলা হয়েছে পাশাপাশি উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি সম্পর্কে অবহিত করা হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন