রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

এমপির নির্দেশে ইউপি অফিসে তালা নিরাপত্তাহীণতায় চেয়ারম্যান

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ জুলাই, ২০২২, ২:৫১ পিএম

কুমিল্লার চৌদ্দগ্রাম উপজেলায় সম্প্রতি সন্ত্রাসী হামলায় গুরুতর আহ্ত হওয়া ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান শাহজালাল মজুমদার এখন চরম নিরাপত্তাহীনতায় দিন কাটাচ্ছেন। হামলার পর অস্ত্র হাতে ভাইরাল হওয়া সেই জুয়েল গ্রেপ্তার হলেও শান্তিতে নেই তিনি। নিজ দলের সাবেক মন্ত্রী ও সেখানকার এমপি মুজিবুল হকের নির্দেশে ইউপি অফিসে পাঁচ মাস ধরে তালা ঝুঁলিয়ে দিয়েছে তার অনুসারীরা। বিষয়টি নিয়ে প্রধানমন্ত্রী ও স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর কাছে বিচার প্রার্থনা করেছেন তিনি।

আজ বুধবার রাজধানীর সেগুনবাগিচায় ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানান চৌদ্দ গ্রামের ৪ নং শ্রীপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. শাহ জালাল মজুমদার।

তিনি বলেন, গত বছরের ডিসেম্বরে ইউপি নির্বাচনের পূর্বে এলাকার সংসদ সদস্য আমাকে ফোনে নির্দেশ দেন আমি যেন আমার ইউনিয়নের ৩নং ওয়ার্ডে এমপি সাহেবের ভাতিজা তোফায়েলসহ পরিবারের সদস্যদের পছন্দের মেম্বার প্রার্থী মনির হোসেনকে নির্বাচিত করতে সহযোগিতা করি। মনির হোসেনকে নির্বাচিত করতে না পারায় এমপি সাহেব ও উনার ভাতিজারা মিলে যুবদলের ক্যাডার সন্ত্রাসী জুয়েলসহ স্থানীয় কিছু দুষ্ট প্রকৃতির লোককে দিয়ে আমাকে বিভিন্নভাবে অপমান অপদস্ত করার নানা রকম চক্রান্ত ষড়যন্ত্র শুরু করে।

তিনি আরো বলেন, প্রকাশ্যে বিভিন্ন সভা সমাবেশে বক্তব্য দিয়ে ইউনিয়ন পরিষদ ভবনে যেতে নিষেধ করে। চেয়ারম্যান পদ থেকে পদত্যাগ করার জন্য বার হুমকি প্রদান করতে থাকে, না হয় আমাকে পদত্যাগে বাধ্য করা হবে বলে হুমকি দেয়া হয়।

শাহজালাল বলেন, এলজিএসপির প্রকল্প দাখিলের ক্ষেত্রে সরকারের নির্দেশনা মেতাবেক ওয়ার্ড সভা বাধ্যতামূলক সরকারী নির্দেশনা মেতাবেক তিনি ৯টি ওয়ার্ডে ৯টি ওয়ার্ড সভার তারিখ ও স্থান নির্ধারণ করলে তাকে কোন ওয়ার্ড সভা করতে দেবে না বলে ঘোষনা দেয় তারা। ১৫ ফেব্রুয়ারী যুবদল ক্যাডার বিভিন্ন মামলার ওয়ারেন্ট ভুক্ত আসামী সন্ত্রাসী জুয়েলের নেতৃত্বে স্থানীয় এমপির (মুজিবুল হক) ভাতিজা ইউসুফ, আহসান, খোকন ও পরিবারের সদস্যরাসহ ৩৫/৪০জন অস্ত্রধারী সন্ত্রাসী লাঠিসোটা নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে হামলা চালিয়ে ব্যাপক ভাংচুর করে, চেয়ারম্যান কক্ষে তালা ঝুলিয়ে দেয়। যা এখনো পর্যন্ত তালাবদ্ধ অবস্থায় রয়েছে। ওই দিন আমি ইউনিয়ন পরিষদের ছিলাম না। যে কারণে আমি প্রাণে বেঁচে যাই। ঘটনাস্থলে আমাকে হত্যার হুমকি দেয় এবং পদত্যাগ করার নির্দেশ দিয়ে সন্ত্রাসীরা চলে যায়।

এরপর দু’মাস পর তার ওপর আবারো হামলা ও তার ব্যবহৃত ভাড়া করা প্রাইভেট কার ভাংচুর করে জানিয়ে শাহজালাল বলেন, এমন পরিস্থিতে আমি জীবনের ঝুঁকি নিয়ে ইউনিয়ন পরিষদে প্রবেশ করতে না পেরে আমার বাড়িতে এবং বিভিন্নস্থানে বসে পরিষদের দৈনন্দিন কাজ এবং মানুষকে বিভিন্ন সেবা দিয়ে আসছিলাম।

তিনি বলেন, সর্বশেষ গত ১৪ জুলাই বেলা ৩টার সময় আমি একটি সামাজিক অনুষ্ঠানে অংশগ্রহণ শেষ বাড়ি ফেরার পথে স্থানীয় নালঘর বাজারে পৌঁছলে হঠাৎ এমপির আশির্বাদপুষ্ট যুবদল ক্যাডার মোস্তফা মনিরুজ্জামান জুয়েলের নেতৃত্বে ৭/৮ জন সন্ত্রাসী অত্যাধুনিক অস্ত্রশস্ত্র নিয়ে আমার পের হামলা চালায়। এ সময় সন্ত্রাসী জুয়েল আমাকে গুলি করার নির্দেশ দিতে থাকে। যখন একের পর এক গাড়ির গ্লাস ভাঙ্গতে শুরু করে আমি বাঁচার তাগিদে আত্মচিৎকার করতে থাকি এবং তাৎক্ষনিক গাড়ি থেকে নেমে দৌড়ে পার্শ্ববর্তী সামাদ মেম্বারের বাড়িতে আশ্রয় নেই। এ সময় সন্ত্রাসীরা গাড়ির চালক আমজাদ হোসেনকে বেদম মারধর করে গাড়িটি সম্পূর্ণরূপে ভেঙ্গে চুরমার করে ফেলে।

তাকে হত্যার উদ্দেশ্যে হামলা চালানো হয়েছিলো দাবি করে এই ইউপি চেয়ারম্যান বলেন, এই হামলার পরও সন্ত্রাসীর বিরুদ্ধে কোন প্রকার ব্যভস্থা না নিয়ে উল্টো আমাকে ১নম্বর আসামী করে আমার আরো ৫জন কর্মীকে আসামী করে মিথ্যা বানোয়াট তথ্য দিয়ে আমার বিরুদ্ধে তথ্য প্রযুক্তি আইনে একটি মিথ্যা মামলা দায়ের করা হয়েছে।

এর তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়ে তিনি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও স্থানীয় সরকার মন্ত্রীসহ আইনপ্রয়োগকারী সংস্থার কাছে বিচার চেয়েছেন চেয়ারম্যান মো. শাহ জালাল মজুমদার।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (1)
মাইকেল ২৭ জুলাই, ২০২২, ৭:৪৬ পিএম says : 0
শাহজালাল মজুমদার চেয়ারম্যান যে বক্তব্য দিয়েছেন ১০০%সত‍্যতা আছে।
Total Reply(0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন