ঝিনাইদহের কালীগঞ্জ সরকারি মাহতাব উদ্দীন কলেজে গতকাল বুধবার দুপুরে বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণে ক্যাম্পাস কেঁপে ওঠে। এ সময় কলেজের শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়েছে। সরজমিনে দেখা গেছে, ককটেলের আঘাতে ৪/৫ স্থানে ঘাস পুড়ে গেছে। তবে পুলিশ বলছে, ককটেল নয় পটকা বা বাজি ফুঠিয়েছে।
তথ্য নিয়ে জানা গেছে, সরকারি মাহতাব উদ্দীন কলেজের প্রিন্সিপাল ড. মাহবুবুর রহমান গতকাল কলেজ ক্যাম্পাসে আসার পর পরই ছাত্রলীগ পরিচয় দিয়ে ইরফান রাজা বাবু, শিখ হাসিবুল, রিয়াজ ও আব্দুস সালাম জয়ের নেতৃত্বে কিছু যুবক মিছিল বের করে। তারা সেøাগান দিয়ে বিক্ষোভ করে। বিক্ষোভ চলাকালেই ৪/৫টি ককটেলের বিস্ফোরণের শব্দ শোনা যায়। এ সময় শিক্ষার্থী ও শিক্ষক-কর্মচারীদের মধ্যে আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে। কলেজের হেডক্লার্ক রজব আলী জানান, সকালে প্রিন্সিপাল কলেজে আসার পরপরই বিশৃঙ্খলা ছড়িয়ে পড়ে। ছাত্রলীগের ছেলেরা বিক্ষোভ শুরু করে। এ কারণে বেতন বিলে কোন স্বাক্ষর করাতে পারেন নি।
তিনি আরো বলেন, ২০২০ সালে ৭ মাস, ২০২১ সালে ৬ মাস ও চলতি বছরের দুই মাসসহ মোট ১৫ মাসের বেতন পাবেন শিক্ষকরা। হেডক্লার্ক রজব আলী বলেন, ককটেল নয়, ক্যাম্পাসে ছেলেরা বাজি ফুটিয়েছে বলে আমি শুনেছি।
এ বিষয়ে কলেজের প্রিন্সিপাল জানান, কলেজে প্রবেশের পরপরই ছাত্রলীগ নামধারী যুবকরা আমার রুমে এসে খারাপ আচরণ করেন। অথচ তারা সবাই এই কলেজের ছাত্র। ছাত্ররা বিভিন্ন কুরুচিপূর্ণ সেøাগান দিতে থাকে। তিনি অভিযোগ করে বলেন, কলেজ ক্যাম্পাসে বেশ কয়েকটি ককটেলের বিস্ফোরণ ঘটানো হলে আমি কালীগঞ্জ থানার ওসি আব্দুর রহমান মোল্লা ও কলেজের সভাপতি ও কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া জেরিনকে একাধিকবার নিরাপত্তার জন্য ফোন করি। কিন্তু তারা আমার ফোন রিসিভ করেন নি। পরে পুলিশ সুপারকে ফোন করা হলে তিনি ডিবি পুলিশ পাঠিয়ে ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা নিশ্চিত করেন।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার সাদিয়া জেরিন জানান, কলেজে এতো কিছু হয়েছে আমি জানি না। আমি জেলা শহরে একটি মিটিংয়ে ছিলাম। তিনি বলেন, কলেজ নিয়ে অনেক বিষয়ে আদালতে বিচারাধীন আছে। কাজেই আমি তো আর অন্ধকারে স্বাক্ষর করতে পারি না। ঘটনা জানতে কালীগঞ্জ থানার ওসি আব্দুর রহিম মোল্লাকে একাধিকবার ফোন করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেন নি।
ছাত্রলীগ কর্মী ও চাচড়া হাই স্কুলের শিক্ষক আব্দুস সালাম জয় জানান, সাধারণ শিক্ষার্থীদের হৈচৈ শুনে তিনি সেখানে গিয়েছিলেন। সেখানে কোন ককটেল বিস্ফোরণ ঘটানো হয়নি। আমরা অবৈধ প্রিন্সিপালকে না মানতে পেরে বিক্ষোভ করেছি। জয় দাবি করেন, তিনি শিক্ষক হলেও এখনো ওই কলেজের ডিগ্রীর ছাত্র।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন