ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ মৎস্যজীবী লীগের সম্মেলনের আড়াই মাস পাড় হয়ে যাবার পর বৃহস্পতিবার রাতে আনুষ্ঠানিকভাবে কমিটি ঘোষণা করে সংগঠনটি। সম্মেলনে ঢাকা মহানগর উত্তরে সভাপতি পদে ‘বিতকির্ত’ তাজরীণ ফ্যাশন্স গার্মেন্সের কর্ণধার দোলোয়ার হোসেন ও সাধারণ সম্পাদক পদে ‘বহুল বিতর্কিত’ আবদুল জলিলের নাম ঘোষণা করায় সংগঠনে ও সংগঠনের বাইরে তীব্র সমালোচনার সৃষ্টি হয়। এ নিয়ে গত ২২ মে মৎস্যজীবী লীগের প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর আলোচনা সভায় আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের কমিটির বিষয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তিনি বিষয়টি খতিয়ে দেখবেন বলেও বলেছিলেন। পরবর্তীতে গত জাতীয় সংসদ অধিবেশনেও এ নিয়ে তীব্র সমালোচনা হয়। এদিকে ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি শাজাহান হাওলাদার পিরোজপুর জেলার একটি ইউনিয়নের নির্বাচিত চেয়ারম্যান। তিনি বেশিরভাগ সময় তার এলাকাতেই থাকেন। এরপরও কোনো তাকে এখানে রাখা হয়েছে এ নিয়েও সমালোচনা রয়েছে। কিন্তু কোনো সমালোচনাকে পাত্তা না দিয়ে ‘বিতর্কিতদের’ কমিটি রাখায় সংগঠনে ও সংগঠনের বাইরে তীব্র অসন্তোষ বিরাজ করছে।
জানা গেছে, উপরের নির্দেশে তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছিলো। কিন্তু সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত করে দিয়ে ‘নাম সর্বস্ব’ তদন্ত কমিটি করে দেওয়া হয়। যদিও কমিটির প্রধান আবুল বাশার এই তদন্ত করতে অপরাগতা প্রকাশ করে উল্টো সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক আজগর নস্করের কাছে চিঠি দেন। ফলে তদন্তের কাজ আর এগোয়নি। অবশেষে সব সমালোচনকে উপেক্ষা করে গত বৃহস্পতিবার রাতে কমিটি ঘোষণা করে মৎস্যজীবী লীগ। এ নিয়ে দলের মধ্যে চলছে তীব্র অসন্তোষ। তদন্তের বিষয়ে আবুল বাশারের ভাষ্য ছিলো, যেহেতু তদন্ত স্বাধীনভাবে করা যাবে না তাই নিয়ে তদন্ত করতে অপরাগতা প্রকাশ করেছেন।
গত বৃহস্পতিবার রাতে প্রকাশিত সংগঠনের সভাপতি সায়ীদুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক আজগর লস্কর ও কার্যকরী সভাপতি সাইফুল আলম মানিক স্বাক্ষরিত চিঠিতে ঢাকা মহানগরের দুই নেতাকে আগামী ৪৫ দিনের মধ্যে ৮৫ সদস্যের পূর্ণাঙ্গ কমিটি করে তা কেন্দ্রে জমা দিতে বলা হয়েছে।
মৎস্যজীবী লীগের নেতারা জানান, দেলোয়ার হোসেন রাজনীতিতে সক্রিয় না থাকলেও সংগঠনের সভাপতি সায়ীদুর রহমানের পছন্দের লোক। এর আগে ২০১৮ সালে তাকে ঢাকা উত্তরের আহ্বায়ক করা হয়। সেই সময় মৎস্যজীবী লীগ লীগ আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন ছিল না। ২০১৯ সালের ডিসেম্বরে অনুষ্ঠিত সর্বশেষ সম্মেলনে সংগঠনটিকে আওয়ামী লীগের সহযোগী সংগঠন করা হয়।
এত সমালোচনার পরও দেলোয়ার হোসেনকে কেন সভাপতি পদে রাখা হলো তা জানতে সংগঠনের কার্যকরী সভাপতি সাইফুল আলম মানিক বলেন, ‘আপনি বিষয়টি নিয়ে সভাপতির সঙ্গে যোগাযোগ করেন।’ অবশ্য কমিটি ঘোষণার আগে তিনি আমাদের সময়কে বলেছিলেন, ‘কখন কাকে রাখবো তা আমাদের ব্যক্তিগত ব্যাপার। সায়ীদুর রহমানের ব্যক্তিগত মোবাইল নম্বরে কয়েকবার কল করা হলেও তিনি ধরেননি।
উল্লেখ্য, ঢাকা মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ আওয়ামী মৎস্যজীবী লীগের সম্মেলন গত ১১ ও ১২ মে অনুষ্ঠিত হয়।##
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন