পিএইচডি বা ডক্টরেট ডিগ্রি একজন গবেষকের জীবনে অনেক বেশি সম্মান বা গৌরবের বিষয়। নিজেকে দক্ষ গবেষক হিসেবে গড়ে তোলা বা নিজের হাতে গবেষণা পরিচালনা করার সক্ষমতা অর্জন করতে হলে পিএইচডি ডিগ্রি অর্জনের কোনো বিকল্প নেই। পিএইচডি পর্যায়ে একজন শিক্ষার্থী একটি গুরুত্বপূর্ণ সমস্যার আনকোরা কোনো সমাধান বের করে বা সম্পূর্ণ নতুন কোনো বিশ্লেষণ দেয়। নিয়মিত গবেষণার মাধ্যমে সমস্যাটির ধাপে ধাপে সমাধান করে এবং বিভিন্ন কনফারেন্স কিংবা খ্যাতিমান জার্নালে নিয়মিতভাবে গবেষণা প্রবন্ধ প্রকাশ করে তবেই তিনি একজন দক্ষ গবেষক হিসেবে গড়ে ওঠেন। এই ডিগ্রি অর্জন করতে গিয়ে একজন শিক্ষার্থীকে যে কঠিন ত্যাগ ও অধ্যবসায় করা লাগে সেটা আজীবন ডিগ্রিধারীর মনে গেঁথে থাকে। আজকের লেখনীতে আমার অভিজ্ঞতায় পিএইচডির কিছু গুরুত্বপূর্ণ বিষয় নিয়ে আলোকপাত করব।
পিএইচডি শুরু করার আগে সবার মনে নানা ধরনের প্রশ্নের উঁকি দেয়। মনের ভিতর শুরু হয় বিভিন্ন ধরনের কৌতূহল। অজানাকে জানার উদ্দেশ্যে অনেকে দিক-বিদিক ছুটতে থাকে। তাই পিএইচডি শুরু করার আগে বেশ কিছু বিষয় মাথায় নিয়ে এগুনোই বুদ্ধির কাজ। প্রথমে যে বিষয়টি মাথায় আসে সেটি হচ্ছে, পিএইচডিকালীন কাজের চাপ কেমন হবে সেটা নিয়ে অনেকের বিস্ময় জাগে। তবে এক্ষেত্রে গবেষণার বিষয়ের উপর কাজের চাপ নির্ভর করে। যেমন, পলিটিক্যাল সাইন্স ও কেমিস্ট্রি, দুইটিতে গবেষণা ও কাজের চাপ সম্পূর্ণ ভিন্নধর্মী। স্থান, কাল, পরিবেশ ও সংস্কৃতির উপর কাজের চাপ অনেকাংশে নির্ভর করে। যেমন, চীন, জাপানে কাজ বেশি করতেই হবে। কারণ, সেখানকার সংস্কৃতিটাই সেভাবে গড়ে উঠেছে। আবার পিএইচডি সুপাভাইজারের ও ইনস্টিটিউটের ওপর নির্ভর করেও কাজের চাপ কখনো কখনো ভিন্ন হয়। আমেরিকায়ও কাজের চাপ অনেক। আবার ইউরোপে কাজের চাপ তুলনামূলক কম। তবে যে দেশই হোক না কেন, সেখানকার ল্যাবের পরিবেশ দেখে একজন শিক্ষার্থী নিজেই মাইন্ড সেট আপ করে ফেলতে পারবে সপ্তাহে তার কতটুকু কাজ করা প্রয়োজন। যখন কেউ দেখবে আশপাশের সবাই ১২ ঘণ্টা কাজ করছে সেখানে কেউ ৮ ঘণ্টা কাজ করে নিজেই নিরাপত্তাহীনতায় ভুগবে। সেজন্য অবস্থা বুঝে ব্যবস্থা নেওয়াটাই সর্বোত্তম। এক্ষেত্রে বলে রাখা ভালো, পিএইচডি প্রপোজালের সাথে প্রথমে প্রতিটি এক্সপেরিমেন্ট তথা পুরো পিএইচডি’র সময়ের একটি টাইম লাইনের ছক উল্লেখ করা লাগে। যদিও এই ছক অনুযায়ী যাওয়াটা সম্ভবপর হয়ে ওঠে না। তারপরেও সকলের চেষ্টা করা উচিত সময়ের ভিতরে সুপারভাইজারকে খুশি করে ডিগ্রির মিনিমাম রিকোয়ারমেন্ট যত দ্রুত সম্ভব অর্জন করা।
ফান্ড ছাড়া কিন্তু পিএইচডি স্ট্যাডি একটু হলেও অসম্ভব। তাই সবসময় স্কলারশিপ বা ফেলোশিপ নিয়েই পিএইচডি করার জন্য পা বাড়ানো উচিত। এ উদ্দেশে দেশে বা দেশের বাইরে বহু ফান্ড আছে। খুব সহজেই এসব ফান্ড থেকে নিজের গবেষণা কাজের ফান্ড পাওয়া যায়। বাইরের দেশে পিএইচডি করতে হলে সবার আগে নিজের যাবতীয় তথ্য (নিজের একাডেমিক ও রিসার্চ প্রোফাইলকে হাইলাইট করে) দিয়ে একটি বায়োডাটা তৈরি করতে হবে। বায়োডাটার সাথে একটা রিসার্চ প্লান দিলে খুব ভালো হয়। রিসার্চ প্লান সুপারভাইজারের গবেষণার ব্যাকগ্রাউন্ডের সাথে সামঞ্জস্য হওয়া বাঞ্ছনীয়। কীভাবে ভালো মানের বায়োডাটা ও রিসার্চ প্লান লিখতে হবে সে বিষয়ে ইন্টারনেটে বহু নমুনা আছে। অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে বাধ্যতামূলকভাবে রিসার্চ প্লান জমা দেওয়ার নিয়ম আছে। তাই রিসার্চ প্লানের বিষয়টি গুরুত্বের সাথে বিবেচনায় রাখা যুক্তিযুক্ত। বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে প্রফেসরদের প্রোফাইল ঘেঁটে নিজের পছন্দসই গবেষণার ক্ষেত্র দেখে প্রফেসরদের যথাযথ সম্ভাষণ দিয়ে লিখতে হবে। তবে অবশ্যই সেসব বিশ্ববিদ্যালয়ের পিএইচডি আবেদনকারীর যোগ্যতা আগে ভালোভাবে দেখে নিতে হবে এবং নিজের যোগ্যতার সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ ক্ষেত্রে প্রফেসরদের ই-মেইলে আবেদন করতে হবে।
সুপারভাইজার কনফার্ম, ফান্ড কনফার্ম, গবেষণার ক্ষেত্র কনফার্ম হওয়ার পর ভিসা কনফার্ম হতে হবে। অতঃপর সবকিছু গোছ গাছ করে বিদেশে পাড়ি দিতে হবে। এক্ষেত্রে যে দেশে পাড়ি দিতে হবে আগে থেকেই সেই দেশের নিয়ম নীতি, খাদ্যাভ্যাস, আবহাওয়া ইত্যাদি বিষয়াদি জেনে যতটুকু পারা যায় পূর্বপ্রস্তুতি নিতে হবে। দেশ ত্যাগ করার আগে অবশ্যই মানসিকভাবে প্রস্তুত থাকতে হবে সকল প্রতিকূলতা পাড়ি দেওয়ার। বিদেশ পৌঁছে ভালো মন্দ দু’টো অনুভূতিই মনকে পুলোকিত ও শিউরে তুলবে। বিদেশ সবার কাছে একটু হলেও ভিন্ন অনুভূতির। একদিকে যেমন, দেশের প্রিয় মানুষদের ছেড়ে অনেকটা অজানার উদ্দেশ্যে পাড়ি দিয়ে সম্পূর্ণ নতুন পরিবেশে নিজেকে খাপ খাওয়ানো বেশ দুরহ। ঠিক তেমনই নতুন দেশ, নতুন আবহাওয়া, নতুন স্থান, নতুন খাবার, নতুন মানুষ, সবকিছু একটু উলট-পালট মনে হবে। সেটাই স্বাভাবিক! এসব বিষয় একজনের পক্ষে একসাথে সামাল দেওয়া একরকম চ্যালেঞ্জের বিষয়। কেননা, পরিবার-পরিজন ছেড়ে যখন দেশের সীমানা পার হতে হয় ঠিক তখনই অনুভত হয় দেশের টান, মাটি ও মানুষের টান। মনে পড়ে দেশীয় খাবারের স্বাদ, দেশীয় ভাষার টান, সর্বোপরি দেশীয় মানুষের সঙ্গ। এজন্য নতুন পরিবেশে খাপ খাইয়ে নেওয়ার জন্য সবাইকে এই সময় মনের বিরুদ্ধে বেশ যুদ্ধ করা লাগতে পারে। তবে নিজের সিদ্ধান্তে অটল থাকলে আস্তে আস্তে সবকিছু স্বাভাবিক হয়ে যায়। এই পরিস্থিতিকে খুব সহজে মোকাবেলা করতে সেখানকার দেশি ও বিদেশি বন্ধুদের সাথে বেশি বেশি সময় কাটানো দরকার। শেয়ারিং ইজ কেয়ারিং। নিজের গন্ডির ভিতর সীমাবদ্ধ না রেখে সমস্যাগুলো বন্ধুদের ভিতর নির্দ্বিধায় খুলে বলতে হবে। তাহলে নিশ্চয়ই ভালো ফল দেবে।
বেশিরভাগ ক্ষেত্রে পিএইচডি শুরুর আগে কোর্স ওয়ার্ক থাকে। অনেক দেশে পিএইচডি শুরু করার আগে মাস্টার্স করা লাগে। এই সময়টা তাত্ত্বিক পড়ালেখা, পরীক্ষা, অ্যাসাইনমেন্ট, প্রেজেন্টেশন বা অন্য শিক্ষার্থীদের ক্লাস নেওয়ার মতো বেশ কিছু কাজ করতে হয়। এই কোর্সওয়ার্কের ভিতর দিয়েই পিএইচডি’র হাতেখড়ি শুরু হয়। ৬ মাস বা ১ বছর বা ২ বছর (বিভিন্ন দেশে ভিন্নতা আছে) কোর্সওয়ার্কের ভিতর ক্রেডিট আউয়ার, ক্রেডিট পয়েন্ট, পাশ-ফেল ইত্যাদি ইন্ডিকেটর থাকে। এগুলো নির্ধারিত সময়ের ভিতর শেষ করে পরবর্তী ধাপের জন্য প্রার্থীকে উপযোগী করে তুলতে হয়। আবার ওই সময়ের ভিতর নিজের গবেষণার প্লান বা রিসার্চ প্রপোজাল বা ওপেনিং রিপোর্ট তৈরি করতে হয়। এই প্রোপোজাল পিএইচডি এডমিশনের সময়ে লেখা বা জমা দেওয়া প্রোপোজালের থেকে ভিন্ন বা একই হতে পারে। তবে পিএইচডি’র গবেষণা শুরুতে এটি খুব গুরুত্বপূর্ণ একটা অংশ। কেননা আমেরিকায় বা ইউরোপের অনেক বিশ্ববিদ্যালয়ে এটাকে বলে ক্যান্ডেডেন্সি পরীক্ষা। এই পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়াটা বেশ দুরহ। এ সময়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের গঠিত এক্সপার্ট কমিটির (যেখানে এক্সটারনাল এক্সপার্টও থাকবে) সামনে শিক্ষার্থীকে নিজের ভবিষ্যৎ গবেষণার ডিটেলস আউটলাইন উপস্থাপন করতে হয়। সেখানে শিক্ষার্থীকে অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ কোনো সমস্যা নিরূপণ করে কেন এই গবেষণার ক্ষেত্র বেছে নিয়েছে তার উপর হাইপোথিসিস এবং নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে সমস্যা সমাধানের টাইমলাইন দিতে হয়। যার জন্য প্রার্থীর সাজানো ওয়ার্ক প্লানের পক্ষে বিপক্ষে সুগভীর জ্ঞান থাকা বাঞ্ছনীয়। এক্সপার্ট কমিটি এসব হাইপোথিসিসের সত্যতা যাচাই করার জন্য বিভিন্ন প্রশ্ন উত্থাপন করে থাকেন। এসব প্রশ্নের যথাযথ উত্তর দেওয়ার পরেই এক্সপার্ট কমিটি সিদ্ধান্ত নেয় শিক্ষার্থীর পরবর্তী ধাপে যাওয়ার উপযোগী কি না! এই বিষয়গুলো অতটা কঠিন না। নিজের গবেষণা সম্পর্কিত সাম্প্রতিক কিছু পাব্লিকেশন বের করে সেখান থেকে নিজের মেধা খাটিয়ে নিজের মতো করে ওয়ার্ক প্লান বা রিসার্চ প্রপোজাল সজানো যায়। পরীক্ষা নিরীক্ষার জন্য নিজের ল্যাবে যেসব সুযোগ সুবিধা/ইন্সট্রুমেন্ট আছে সেই সক্ষমতার কথা চিন্তা করেই কোনো গুরুত্বপূর্ণ সমধান একটি আনকোরা সমাধান নিয়েই এই প্রোপোজাল লিখলে সবচাইতে ভালো হয়। সাম্প্রতিক বিশ্বের সাথে তাল রেখে একমাত্র ক্রিয়েটিভ থিঙ্কিং এক্ষেত্রে ভালো ফল দেবে। তবে এক্ষেত্রে প্রচুর পড়ালেখা করতে হয়। এই পড়ালেখার ভিতরেও প্রার্থীকে একঘেয়ামি লাগতে পারে। রিসার্চ প্রোপজাল লিখতে গিয়ে পিএইচডি টপিকের সাথে সম্পর্কিত অন্যান্য গবেষকদের সাম্প্রতিক প্রকাশিত প্রচুর গবেষণাপত্র পড়া লাগে। এসব গবেষণা পড়তে গিয়েও প্রথম প্রথম বেশ বিরক্তি লাগবে। লাগাটাই স্বাভাবিক।
এসময় সাধারণত যে বিষয়গুলো বেশিরভাগ প্রার্থীর ক্ষেত্রে লক্ষ করা যায় তার মধ্যে অন্যতম হচ্ছে, প্রতিটি গবেষণা পত্রের পড়ার ক্ষেত্রে কোন অংশটা অধিক গুরুত্বপূর্ণ বা কোনটি সবার আগে পড়লে সম্পূর্ণ গবেষণা পত্রটি সম্পর্কে পুরোপুরি ধারণা হবে এই ধরনের বিষয়গুলো নিয়ে সঠিক ধারণা অভাব; প্রতিটি গবেষণাপত্র পড়তে বা তার সারমর্ম বুঝতে দীর্ঘ সময় ব্যয় হওয়া; মাঝেমধ্যে এই পড়ালেখার বিষয়গুলো নিয়ে চরম হতাশাগ্রস্ত হওয়া। এক্ষেত্রে বলা যায়, সময়ের সাথে সাথে একজন প্রার্থীর উপরিউক্ত ভীতিগুলো একেবারে চলে যাবে। তাছাড়া একটি গবেষণাপত্র পড়া কীভাবে শুরু করতে হবে বা কোন অংশ বেশি গুরুত্বপূর্ণ তার অনেক ধরনের গাইডলাইন ইন্টারনেটে পাওয়া যায়। তাই বিষয়টিকে নিয়ে না ঘাবড়ে প্রার্থী যথাযথ চেষ্টা করলে ভালো ফল পাবে।
সাফল্যের সাথে রিসার্চ প্রপোজাল শেষ করার পরে ল্যাবের কাজ শুরু করতে হয়। রিসার্চ প্রপোজাল অনুযায়ী এখানে কাজ করতে গিয়ে কিন্তু অনেক সমস্যার সম্মুখীন হতে হবে। কেননা, প্রপোজাল অনেকটা কাল্পনিক যেটা বাস্তবে রূপ দেওয়ার সক্ষমতা একমাত্র পিএইচডি ক্যান্ডিডেটের। এছাড়া কোনরকম ল্যাব ওয়ার্কের জাস্টিফিকেশন ছাড়া প্রপোজাল লিখতে হয় (আমার ক্ষেত্রে হয়েছিল)। তাই এক্সপেরিমেন্ট করতে গিয়ে সেটা না মেলার সম্ভবনা অনেক বেশি। কারও ক্ষেত্রে মিলে গেলে সেক্ষেত্রে তিনি সফল। না মিললে তো আর বসে থাকা যাবে না। কেন হচ্ছে না, বিকল্প পথে গিয়ে সেটার সমাধান খুঁজে বের করতে হবে। মনে রাখতে হবে, এরকম অনেক ‘ব্যর্থতা’ ও কিন্তু পিএইচডি ডিগ্রির অত্যাবশ্যকীয় উপাদান। নিত্য নতুন জ্ঞান সন্ধানের জন্য এসব ব্যর্থতায় কঠোর পরিশ্রমের মাধ্যমে প্রার্থীর ভিতরে আরও বেশি জানার আকাক্সক্ষা তৈরি করে। তাই প্রার্থীকে নিজেই সকল সমস্যার সমাধান খুঁজে বের করতে হবে।
পিএইচডি সুপারভাইজার শুধুমাত্র একজন শিক্ষার্থীকে কিছু দিক নির্দেশনা দিতে পারেন। এক্ষেত্রে শিক্ষার্থী নিজেই তার ড্রাইভিং সিটে বসেন। গাড়ি কোন দিকে চালনা করলে সুনির্দিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছাতে সহজ হবে সেটা শিক্ষার্থীকেই নির্ধারণ করতে হবে। সুপারভাইজার বা কো-সুপারপাইজার শুধুমাত্র হেল্পারের কাজটি করতে পারেন। এর বেশি না। কেউ যদি মনে করেন, সুপারভাইজার তাকে সকল সমস্যার সমাধান বের করে দেবেন তাহলে সেটা ভ্রান্ত ধারণা। তবে একথা সত্য, সময়ে সময়ে শিক্ষার্থীকে তার সফলতা ও ব্যর্থতা নিয়ে সুপারভাইজার বা কো-সুপারভাইজারের সাথে আলোচনা করলে অনেক সমস্যার সমাধান বের করতে সহায়ক ভূমিকা রাখে। একজন শিক্ষার্থীর জন্য এই আলোচনা খুবই গুরুত্বপূর্ণ। সুপারভাইজার এটা নিয়ে ল্যাব মিটিং বা গ্রুপ মিটিংয়ের ব্যবস্থা করেন। বাইরের দেশের ব্যাপারে এই গ্রুপ মিটিং বা ল্যাব মিটিং সম্পর্কে আমার ডিটেলস ধারণা নেই। তবে আমার বিশ্ববিদ্যালয়ে এটা খুব কমন একটা চিত্র। আমাদের কলেজের ৩ জন প্রফেসরের সমন্বয়ে একটি গ্রুপ আছে। এই ৩ জন প্রফেসর, যতজন শিক্ষার্থী (মাস্টার্স ও পিএইচডি) সুপারভাইজ করেন তাদের নিয়ে প্রতি ১৫ দিন পরপর একবার গ্রুপ মিটিং করেন। সেখানে আমরা বিগত ১৫ দিনে কী করেছি বা আগামীতে কি করতে যাচ্ছি সেগুলো উপস্থাপন করি। এটাতে বেশ কিছু সুবিধা যেমন আছে ঠিক তেমনি অসুবিধাও আছে। সুবিধা হচ্ছে নিজের কাজ সময়মত শেষ করার জন্য একটা তাড়া থাকে। সমস্যাগুলো আলোচনা করা যায় এবং অন্যদের সাজেশন নেওয়া যায়। অসুবিধা হচ্ছে মাঝেমধ্যে এই মিটিং নিয়ে বেশ মানসিক চাপের মধ্যে থাকা লাগে। তবে সার্বিক দৃষ্টিকোণ থেকে চিন্তা করলে রুটিন মাফিক ল্যাব মিটিং বা গ্রুপ মিটিং এর সুবিধা অনেক বেশি। (চলবে)
লেখক: গবেষক, ফুজিয়ান এগ্রিকালচার এন্ড ফরেস্ট্রি ইউনিভার্সিটি, ফুজো, ফুজিয়ান, চীন।
ajoymondal325@yahoo.com
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন