মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৫ চৈত্র ১৪৩০, ০৮ রমজান ১৪৪৫ হিজরী

আন্তর্জাতিক সংবাদ

নিউইয়র্ককে নারকীয় ধ্বংসস্তূপে পরিণত করার হুমকি ইরানের

ইনকিলাব ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ৩ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

যুক্তরাষ্ট্র কোনো ভুল পদক্ষেপ নিলে নিউইয়র্ককে নারকীয় ধ্বংসস্তূপে পরিণত করতে দ্রুত পারমাণবিক ওয়ারহেড তৈরি করবে ইরান। ইসলামিক রেভুল্যুশনারি গার্ড কর্পস (আইআরজিসি) টেলিগ্রাম চ্যানেল ক্ষেপণাস্ত্রের জন্য এই পারমাণবিক ওয়ারহেড তৈরির হুমকি দিয়েছে, এমনটাই টুইট করেছেন ইরানের পারমানবিক বিশেষজ্ঞ বেন সাবতি। চ্যানেলটির বার্তা : ‘ইরান অবিলম্বে এমাদ প্রকল্পে ফিরে আসতে পারে এবং নাতাঞ্জ স্থাপনাগুলোতে হামলা হলে একটি পারমাণবিক বোমা তৈরি করতে পারে।

আইআরজিসি-সংশ্লিষ্ট বিসিমচি মিডিয়া (রেডিওম্যান মিডিয়া) তার টেলিগ্রাম চ্যানেলে ‘ইরানের ঘুমন্ত পারমাণবিক ওয়ারহেড কবে জাগ্রত হবে’ শিরোনামে ভিডিওটি পোস্ট করেছে। সংক্ষিপ্ত ভিডিওটিতে ঘোষণা করা হয়েছে, ইরান সরকার দ্রুত সময়ের মধ্যে পারমাণবিক অস্ত্র তৈরি করবে যদি আমেরিকা বা ইহুদিবাদী সরকার কোনো ভুল করে।

ইরান ইন্টারন্যাশনালের মতে, ভিডিওটিতে বলা হয়েছে, ইরানের ব্যালিস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রের নিউইয়র্ককে নারকীয় ধ্বংসাবশেষে পরিণত করার ক্ষমতা রয়েছে। এছাড়া ফোরডোর পারমাণবিক স্থাপনাগুলো ইরানের পাহাড়ের গভীরে তৈরি করা হয়েছে এবং পরিখা-বাস্টিং বোমা এমনকি পারমাণবিক বিস্ফোরণ থেকে সুরক্ষিত পারমাণবিক ব্রেকআউটের জন্য প্রয়োজনীয় সমস্ত অবকাঠামো এখানে প্রস্তুত করা হয়েছে।

ভিডিও অনুসারে, সরকার তার শান্তিপূর্ণ পারমাণবিক কর্মসূচিকে দ্রুত গতিতে পারমাণবিক অস্ত্র কর্মসূচিতে স্থানান্তর করতে পারে। ইউরোপীয় ইউনিয়ন মার্চ মাস থেকে থমকে যাওয়া আলোচনা সমঝোতার লক্ষ্যে একটি প্রস্তাব পেশ করার পর ইরান বলেছে, তারা ২০১৫ সালের পারমাণবিক চুক্তির সম্ভাব্য পুনরুজ্জীবন সম্পর্কে আশাবাদী রয়ে গেছে।

পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের মুখপাত্র নাসের কানানি তার সাপ্তাহিক সংবাদ সম্মেলনে বলেছেন, আমরা আশাবাদী যে, আলোচনা প্রক্রিয়া আমাদের একটি যৌক্তিক এবং যুক্তিসঙ্গত ফলাফলের দিকে নিয়ে যাবে। ইইউ পররাষ্ট্র নীতির প্রধান এবং ইরান ও বিশ্বশক্তির মধ্যে পারমাণবিক আলোচনার সমন্বয়ক জোসেপ বোরেল গত মঙ্গলবার একটি নতুন খসড়া পাঠ্য জমা দেন এবং আলোচনায় বিভিন্ন পক্ষকে তা মেনে নেওয়ার আহ্বান জানান।

চুক্তিটি পুনরুদ্ধারের জন্য ২০২১ সালের এপ্রিল মাসে ভিয়েনায় আলোচনা শুরু হয়েছিল, তবে বেশ কয়েকটি বিষয়ে তেহরান এবং ওয়াশিংটনের মধ্যে মতপার্থক্যের কারণে মার্চ থেকে সেটি স্থবির হয়ে পড়ে। তেহরান তার পরমাণু প্রতিশ্রুতিতে ফিরে আসবে এই ভিত্তিতে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রকে চুক্তিতে ফিরিয়ে আনতে এবং ইরানের উপর থেকে নিষেধাজ্ঞা তুলে নেওয়ার জন্য ইউরোপীয় ইউনিয়ন সমন্বয়কের মাধ্যমে পরোক্ষভাবে আলোচনা হয়েছিল। ভিয়েনা প্রক্রিয়াকে ট্র্যাকে ফিরিয়ে আনার জন্য মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র এবং ইরানের মধ্যে জুনের শেষের দিকে কাতার আয়োজিত পরোক্ষ আলোচনাও হয়েছিল, কিন্তু সেই আলোচনাগুলো কোনও অগ্রগতি ছাড়াই দুই দিন পরে ভেঙে যায়। এদিকে মার্কিন সরকার আইআরজিসিকে বিদেশী সন্ত্রাসী সত্ত্বা হিসেবে শ্রেণীবদ্ধ করেছে।

জনাব নাসের কানানি বলেছেন, আমরা সম্ভবত একটি নতুন রাউন্ডের আলোচনা দেখতে পাব। তবে তিনি আরো উল্লেখ করেছেন, এটি সম্পূর্ণভাবে বিশেষ করে আমেরিকান পক্ষের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করে। ওয়াশিংটনকে অবশ্যই দেখাতে হবে যে, তারা একটি যুক্তিসঙ্গত, যৌক্তিক এবং স্থায়ী চুক্তির জন্য প্রস্তুত। কিন্তু ২০১৮ সালে তৎকালীন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের অধীনে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র চুক্তি থেকে প্রত্যাহার করার পরে এবং ওয়াশিংটনের অর্থনৈতিক নিষেধাজ্ঞা পুনর্বহাল করার পর ইরানকে তার নিজের প্রতিশ্রুতিতে পিছিয়ে যেতে দেখা যায়।

তারপর থেকে ইরান ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধকরণের মাত্রা বাড়িয়েছে ৬০ শতাংশের কাছাকাছি যা চুক্তিতে নির্ধারিত সীমার থেকে বেশি। ইরানের পরমাণু শক্তি সংস্থার উপ-প্রধান বেহরুজ কমলাভান্দি সোমবার সন্ধ্যায় রাষ্ট্রীয় গণমাধ্যমে বলেছেন, সংস্থাটি উন্নত আইআর-৬সহ ‘শত’ নতুন সেন্ট্রিফিউজে গ্যাস সরবরাহ শুরু করেছে। আন্তর্জাতিক পারমাণবিক শক্তি সংস্থাকে (আইএইএ) ইতোমধ্যেই এ পদক্ষেপের বিষয়ে অবহিত করা হয়েছে। জুলাই মাসে (আইএইএ) রিপোর্ট করেছে যে, তেহরান একটি জ্বালানি সমৃদ্ধকরণ প্ল্যান্টে একটি ক্যাসকেড সেন্ট্রিফিউজ সরবরাহ শুরু করেছে। এসব কৌশল প্রক্রিয়াটিকে সহজতর করে এবং ইরানের জন্য ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার একটি ভিন্ন স্তরে পরিবর্তন করেছে। সূত্র : ডেইলি মেইল অনলাইন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (11)
আবির ৩ আগস্ট, ২০২২, ১:২৯ এএম says : 0
পারমাণবিক অস্ত্র যুদ্ধ থামাই না। বরং আরো যুদ্ধ লাগাই। এজন্য ক্ষমতাধর রাষ্ট্রগুলোর উচিত হবে কোনো গরিব দেশের প্রতি অন্যায় আচরণ না করা।
Total Reply(0)
আবির ৩ আগস্ট, ২০২২, ১:২৭ এএম says : 0
বিশ্বকে অস্থিতিশীল করার একমাত্র মূল কারণ উন্নত রাষ্ট্রগুলো। তারা ঠিক থাকলে বিশ্বে শান্তি আসবে।
Total Reply(0)
Mostofa Kamal ৩ আগস্ট, ২০২২, ১০:৪৭ এএম says : 0
আমেরিকা আগে নিজ দেশের মানবাধিকার ও গণতন্ত্র রক্ষায় কাজ করুক। আমেরিকা নিজে প্রতিদিন মধ্যপাচ্য বিভিন্ন দেশের মানবাধিকার গণতন্ত্র স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব লঙ্ঘন করে চলেছে।
Total Reply(0)
Monir Ahmad ৩ আগস্ট, ২০২২, ১০:৪৬ এএম says : 0
ইউরোপে যুদ্ধ লাগিয়ে এখন যুক্তরাষ্ট্র এশিয়াতেও যুদ্ধ বাধানোর পায়তারা করছে! তাইওয়ানকেও ইউক্রেনের অবস্থায় পরতে হতে পারে!
Total Reply(0)
Jony Aarad ৩ আগস্ট, ২০২২, ১০:৪৭ এএম says : 0
আমেরিকা চাচ্ছে এই অঞ্চলে আরো একটি যুদ্ধ লাগিয়ে অস্ত্র বিক্রির ধান্ধা করা!
Total Reply(0)
Ti Tan ৩ আগস্ট, ২০২২, ১০:৪৭ এএম says : 0
পৃথিবীর উপনিবেশ অঞ্চলগুলো স্বাধীনতা পাওয়ার জন্য মরিয়া তারা চাই নিজস্ব দেশ হোক আর কতকাল যাবত উপনিবেশ হয়ে থাকবে, কাশ্মীর, জিনজিয়াং, হংকং,তিব্বত, তাইওয়ান আরো অনেক অঞ্চল যা স্বাধীনতাকামী, দেশগুলোকে তাদের নিজস্ব স্বাধীন দেশ হিসেবে সীকৃতি দেওয়া উচিত।
Total Reply(0)
Muhammad Shopon ৩ আগস্ট, ২০২২, ১০:৪৭ এএম says : 0
সবকিছুতে আমেরিকার নাক গলানো ঠিক না।তাইওয়ান চিনের একটি সায়ত্তশাসিত অঞ্চল। চিনের মতো শক্তিশালী দেশকে এভাবে চেতিয়ে তুল্লে পরে আমেরিকার ই ক্ষতি।
Total Reply(0)
Md Parves Hossain ৩ আগস্ট, ২০২২, ১০:৪৭ এএম says : 0
আমেরিকার সাথে চীনের যুদ্ধ না লাগলেও তাইওয়ানের অবস্থা ইউক্রেনের মতোই হবে।
Total Reply(0)
Mariful Karim Rifat ৩ আগস্ট, ২০২২, ১০:৪৭ এএম says : 0
আমেরিকার কুটনীতি খুব জটিল। তাদেরকে বুঝা বড় দায়।। শান্ত পৃথিবীকে অশান্ত করে নিজেদের আধিপত্য বিস্তার অন্যতম লক্ষ্য। বাস্তবে তারা যুদ্ধ কখনো জড়াবেনা,বিপরীতে অন্যকে জড়িয়ে দেয়।যাতে ২য় রাষ্ট্রকে অর্থনৈতিকভাবে কাবু করে ঐ রাষ্ট্রের উপর কর্তৃত্ব বজায় রাখবে।যেমনটি ঘটেছে,রাশা-ইউক্রেন যুদ্ধ।
Total Reply(0)
Omar Faruk Heron ৩ আগস্ট, ২০২২, ১০:৪৭ এএম says : 0
মার্কিনিরা পুরো পৃথিবীর জন্য এখন হুমকি। তারা বিভিন্ন দেশের সার্বভৌমত্বের কোন তোয়াক্কাই করছেনা। অন্য সকল শক্তিশালী দেশগুলো তাদের বিরুদ্ধে একজোট হওয়া এখন সময়ের দাবি
Total Reply(0)
Abul bashar ৪ আগস্ট, ২০২২, ৯:১২ এএম says : 0
আমেরিকা পৃথিবিকে একটি স্থিতিশীল করতে চাচ্ছে তাদের অস্ত্র বিক্রিতে কোন দেশ ধ্বংস হয়ে গেল তা তারা দেখেনা,এমনকি সিরিয়ায় ইয়েমেন আফগানিস্থান ইউক্রেন ইরাক ধ্বংস করেছে, সে নিজে যুদ্ধ জড়ায়না,প্রতিবেশীকে দিয়ে ঝগড়া লাগায়, যেমন তাইওয়ানের সাথে চীনের উত্তর কোরিয়ার সাথে দক্ষিণ কোরিয়ার ইরানের সাথে ইজরায়েলের,এমনকি সে ইজরাইলকে এমন ভাবে সাপোর্ট করছে, মনে হচ্ছে ইসরাইল একটা আমেরিকা,আমি মনে করি টাকা উপার্জন করার অন্য রাস্তা আছে,শক্তি থাকলে সুযোগ প্রয়োগ করতে নেই, বিশ্বের শান্তি আসুক সকলে মিলে মিশে চলি, আর এরকম অস্থিশীল সৃষ্টি করার দেশের প্রতি আমরা সব দেশ মিলে ঐক্য গড়ে তুলি।
Total Reply(0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন