পটুয়াখালীর কলাপাড়ায় ভূমিহীন ও গৃহহীনদের পুনর্বাসনে প্রধানমন্ত্রীর আশ্রয়ন-২ প্রকল্পের নামে ৪২ বিত্তবানের নামে ৩৬ কোটি টাকা মূল্যের ৭২ একর খাস জমি বরাদ্দ দেয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। এভাবে রাষ্ট্রীয় সম্পদ বেহাত করে সংশ্লিষ্টরা বিপুল পরিমান অর্থ হাতিয়ে নিয়ে প্রশ্নবিদ্ধ করেছে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার মহতী উদ্দোগ আশ্রয়ন প্রকল্পকে।
মুজিব শতবর্ষে গৃহহীন ভূমিহীন পরিবারকে দুই শতক খাস জমি সহ সেমিপাকা একটি ঘর প্রদানের লক্ষ্যে তিনটি স্মারকে ১৯৫ টি বন্দোবস্ত কেসের কবুলিয়াত রেজিষ্ট্রি করতে খেপুপাড়া সাব রেজিষ্ট্রি অফিসে প্রেরণ করা হয়। একই সাথে ৪২টি বিত্তবান শ্রেণির কথিত ভূমিহীনের নাম অন্তর্ভূক্ত করে তাদের নামে ৭২ একর ৬৩ শতাংশ খাস জমির দলিল রেজিষ্ট্রী করা হয়। এ বছরের ১৯ এপ্রিল ২২টির স্থলে ৩১টি, ২৪ এপ্রিল ১২০টির স্থলে ১৩২টি এবং ১৯ মে ৫৩টির স্থলে ৭৪টি কবুলিয়াত দলিল রেজিষ্ট্রি করা হয়। এই ৪২টি দলিলে এক একর থেকে তিন একর করে খাস জমি বন্দোবস্ত দেখানো হয়েছে। ৬০ এর দশক থেকে ২০০২-২০০৩ অর্থ বছরের তালিকার কেস নম্বর থেকে ৪২টি নামে এই পরিমান খাস জমি মুজিবশতবর্ষের তালিকায় ঢুকিয়ে রেজিষ্ট্রি করে দেয়া হয়েছে। যার অনুমোদন নিতে হয়েছে জেলা প্রশাসনের কাছ থেকেও। কবুলিয়াতের দুই শতক লেখা জায়গায় হাতের লেখায় কাটা ছেঁড়া করা হয়েছে।
খেপুপাড়া সাব রেজিষ্ট্রার রেহেনা পারভিন বলেন, ‘যেহেতু ভূমিহীন গৃহহীনদের দলিল ছিল, ইউএনওর সই ছিল। সার্ভেয়ার তাড়াহুড়া করে নামজারির কথা বলেছে। তাই সরল বিশ্বাসে প্রত্যেক পাতা দেখিনি। এখন তো দেখি এই অবস্থা।’ সাবরেজিষ্ট্রী অফিসের অপর একটি সূত্র জানায়, প্রতিটি বন্দোবস্ত কেসে ইউএনও’র স্বাক্ষর ছিল।
এদিকে ৪২ বিত্তবানের নাম অন্তর্ভুক্ত করে ৭২ একর খাস জমি দলিল রেজিষ্ট্রি কাজে ইউএনও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক এর সই স্ক্যানিং করে ভূমি অফিসের সার্ভেয়ার হুমায়ুন কবির এমন অপকর্ম করেছে বলে দাবি করেছে কলাপাড়া ইউএনও আবু হাসনাত মোহাম্মদ শহিদুল হক। তিনি সার্ভেয়ারকে অভিযুক্ত করে ব্যবস্থা নিতে জেলা প্রশাসকের কাছে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন।
পটুয়াখালী জেলা প্রশাসক মো: কামাল হোসেন জানান, বিত্তবানদের নামে দেয়া ৭২ একর খাস জমি বন্দোবস্ত কেসগুলো বাতিলের উদ্দোগ নেয়া হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন