২৫টি সিসি ক্যামেরার আওতায় পুরো উত্তরা পূর্ব থানা মনিটরিং করা হয়। থানা থেকে বসে আব্দুল্লাহপুর বাস স্ট্যান্ড এলাকা থেকে শুরু করে থানা এলাকার গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতে নজরদারি করা যাচ্ছে। ফুটপাতের হকার মুক্ত করা হয়েছে। হাইওয়েতে বাসের যাত্রীদের কাছ থেকে জালানা দিয়ে মোবাইল ছিনতাই রোধে কাজ করা হচ্ছে। এজন্য সিসি ক্যামেরাগুলো ভাল উপকারে লাগছে। সিসি ক্যামেরা দেখে ছিনতাইকারীদের শনাক্ত করা যাচ্ছে।
আজ বৃহস্পতিবার সাংবাদিকদের সাথে এক মতবিনিময় সভায় এসব কথা জানান ডিএমপির উত্তরা পূর্ব থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মোহাম্মদ জহিরুল ইসলাম। রাজধানীর অন্যতম ছোট এই থানার সভায় মাদক নিয়ন্ত্রণ, কিশোর গ্যাং নিয়ন্ত্রণ, হাইওয়েতে মোবাইল ছিনতাইসহ অন্যান্য অপরাধ দমনে নানা উদ্যোগের কথা তুলে ধরেন ওসি। এ সময় এলাকার বিভিন্ন অপরাধ প্রতিরোধে করণীয় বিষয়ে বক্তব্য তুলে ধরেন বাংলাদেশ প্রতিদিনের সাংবাদিক আলী আজম। উপস্থিত ছিলেন, দৈনিক ইনকিলাবের সাংবাদিক ইয়াছিন রানা, দৈনিক নয়া শতাব্দীর সাংবাদিক ইদ্রিছ আলম, ভোরের পাতার সাংবাদিক যোবায়ের হোসাইন, দৈনিক ইত্তেফাকের সাংবাদিক জাহাঙ্গীর কবির।
ওসি জহিরুল ইসলাম বলেন, মাদকের বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স মেনে চলছি। থানা এলাকায় সকল ফুটপাত উচ্ছেদ করেছি। কারণ ফুটপাতের হকাররা হকারি করার পাশাপাশি মাদক ব্যবসা করছিল। তাই সকল হকার উচ্ছেদ করেছি। থানার কোন পুলিশ সদস্য যদি মাদকের সাথে জড়িত থাকে তাহলে তাদের বিরুদ্ধেও ব্যবস্থা নিচ্ছি।
তিনি জানান, উত্তরা পূর্ব থানার সমস্যাগুলোর মধ্যে উল্লেখ্য যোগ্য হল, এই এলাকায় যত ক্রাইম হয় তা অন্য এলাকা থেকে লোকজন এসে করে যায়। এটা দক্ষিণ খান, উত্তরখান, টঙ্গী, আশুলিয়া থেকে লোকজন এসে করে। তাই ক্রিমিনালদের শনাক্ত করা মুশকিল হয়ে যায়। সেজন্য পুরো থানা এলাকায় সিসি ক্যামেরা বসানো হয়েছে। সিসি ক্যামেরায় দেখে পরবর্তীতে ছিনতাইকারী থেকে শুরু করে অন্যান্য আসামী শনাক্ত করতে পারছি। এছাড়া থানার পুলিশ সদস্য ডিউটিতে আছে কিনা তাও সিসি ক্যামেরাও মনিটরিং করা সম্ভব হচ্ছে।
ওসি জহির জানান, দায়িত্ব নেয়ার পর থেকে থানার ডেকোরেশন সুন্দর করা হয়েছে। ডিউটি অফিসারের রুমে সোফা, কার্পেট বসানো হয়েছে। পুলিশ সদস্যদের বিনোদনের জন্য থানায় কয়েকটি টিভি কেনা হয়েছে। থানার উপরে পুলিশের থাকার ব্যবস্থাও সুন্দর করা হয়েছে। থানা হাজতে নামাজ পড়ার ব্যবস্থা, বই পড়ার ব্যবস্থা করা হয়েছে। কোন আসামী বা হাজতি যেন হতাশ না হোন তাই সুন্দর সময় কাটানোর জন্য এ ব্যবস্থা করা হয়েছে।
তিনি বলেন, কোন সেবা প্রার্থী থানা এসে যদি ফিরে যায় তাহলে সে বিষয়ে ডিউটি অফিসারকে জবাবদিহি করতে হয়। ওসির রুমে যে কারো প্রবেশে কোন বাধা দেয়া হয় না। সবাই সমস্যার কথা মন খুলে বলতে পারে।
ওসি জহিরুল জানান, গত এক বছরে উত্তরা পূর্ব থানায় থানায় ৪৫২ জন মাদকের আসামী গ্রেফতার করা হয়েছে। প্রায় ১৮ হাজার পিচ ইয়াবা, ২৬ কেজি গাঁজা, ১২ গ্রাম হেরোইন, ১৪৩ বোতল ফেন্সিডিল, ২৩ বোতল চোলাই মদ উদ্ধার করেছি। ভিক্টিম উদ্ধার করা হয়েছে ৬৮ জন, গাড়ি উদ্ধার ৫টি, মোইল উদ্ধার ১৫১টি, ছিনতাইকারী আটক ৩৬ জন। ৫২৪ প্রসিকিউশনে আটক ৬৫৬ জন, মামলায় গ্রেফতার ২৮৭ জন, পরোয়ানার মূলে গ্রেফতার ১১ জন।
ওসি আরও বলেন, এলাকায় আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতিসহ নানা অপরাধ ও প্রতিবন্ধকতা দূর করতে সাংবাদিক ও পুলিশের সমন্বয় খুবই জরুরী। তবে শুধু পুলিশ ও সাংবাদিকদের সমন্বয়ের ভিত্তিতে থানা এলাকায় নানা অপরাধ প্রতিরোধ ও নির্মূল করা সম্ভব।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন