শনিবার, ০৪ মে ২০২৪, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

সম্প্রতি গণমাধ্যমে আসা বড় বড় দুর্নীতির দায়ে অভিযুক্তদের গ্রেফতার করুন: দুর্নীতি মুক্তকরণ বাংলাদেশ ফোরাম

সিলেট ব্যুরো | প্রকাশের সময় : ৪ আগস্ট, ২০২২, ৬:৪৬ পিএম

দুর্নীতি মুক্তকরণ বাংলাদেশ ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির উদ্যোগে এক মাসিক সভা গতকাল (৩ আগস্ট) বিকাল ৩টায় বন্দরবাজারস্থ একটি হোটেলে অনুষ্ঠিত হয়। দুর্নীতি মুক্তকরণ বাংলাদেশ ফোরাম কেন্দ্রীয় কমিটির সভাপতি সিনিয়র আইনজীবী নাসির উদ্দিনের সভাপতিত্বে ও কেন্দ্রীয় সাধারণ সম্পাদক মকসুদ হোসেনের পরিচালনায় অনুষ্ঠিত বক্তারা বলেন, দেশের ব্যাংকিং খাতে সবচেয়ে বড় অপরাধ সংঘটিত হচ্ছে বলে মহামান্য হাইকোর্টের মন্তব্য। নেতৃবৃন্দ বাপেক্স ‘থ্রিডি-টুডি’ দুর্নীতি সাইসমিক প্রকল্পে ৬১০ কোটি টাকা লোপাট এবং গত ২৬ জুলাই মানব জমিনে প্রকাশিত মুন্সিগঞ্জ জেলার শ্রীনগর উপজেলার বাসিন্দা, বাদম বিক্রেতা থেকে আজিজুল হক শত শত কোটি টাকার মালিক হওয়ার সংবাদে গভীর উদ্বোগ, উৎকণ্ঠা ও তীব্র নিন্দা প্রকাশ করে বলেন, গত এক দশক ধরে ব্যাংকিং খাতে বড় বড় আর্থিক কেলেংকারী হলেও খুব কম ক্ষেত্রেই দুর্বৃত্ত এই অপরাধী শাস্তি পেয়েছেন। বিশেষ করে সোনালী ব্যাংকের হলমার্ক কেলেংকারী, বেসিক ব্যাংকের লুটপাটকারী আব্দুল হাই বাচ্চু ও জনতা ব্যাংকের লুটপাটের ঘটনার নায়কদেরকে এখনও গ্রেফতার করা হয়নি এবং আজও বিচার হয়নি। বেসরকারী পদ্মা, এনআরবি কমার্শিয়াল, এবি ব্যাংক, ইউনিয়ন ব্যাংক সহ একাধিক বেসরকারি ব্যাংকে অনিয়ম নৈরাজ্যের ঘটনায় কেউ গ্রেফতার হয়নি।

ন্যাশনাল ব্যাংক সহ বেসরকারি খাতে বেশ কিছু ব্যাংক কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা উপেক্ষা করলেও বাংলাদেব্যাংক কোন ব্যবস্থা নেয়নি। এর কারণ এসব ব্যাংক যারা পরিচালনা করেন তাদের অদৃশ্য ক্ষমতা বাংলাদেশ ব্যাংকের দৃশ্যমান ক্ষমতার চেয়ে অনেক বেশি। পি.কে হালদারের পিপলস লিজিং কোম্পানির সঙ্গে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাবেক শীর্ষস্থানীয় একাধিক কর্মকর্তার যোগসাজসের ঘটনাও ফাঁস হয়েছে। এসব বেসরকারি ব্যাংকের মালিক বদল হয়েছে অদৃশ্য শক্তির ইশারায়। যার সঙ্গে ক্ষমতাসীন দলের প্রভাবশালী নেতারা জড়িত বলে অভিযোগ রয়েছে। ব্যাংকিং খাতের দুর্নীতিও নৈরাজ্য দূর করতে এখনই সরকারকে কঠোর পদক্ষেপ নিতে হবে। তখন ব্যাংকিং খাতে শৃঙ্খলা ফিরে আসবে।
নেতৃবৃন্দ বলেন, বাপেক্স ‘থ্রিডি-টুডি’ দুর্নীতি সাইসমিক প্রকল্পে ৬১০ কোটি টাকা লোপাটে খবরে সচেতন দেশপ্রেমিক ব্যক্তিবর্গ হতবাক। পাশাপাশি বাদম বিক্রেতা থেকে আজিজুল হক শত শত কোটি টাকার মালিক হওয়ার সংবাদটি খুবই আশ্চর্য্যজনক। সংবাদ থেকে জানা যায়, আজিজুল ইসলামের জন্ম দরিদ্র কৃষক পরিবারে। অভাবের সংসারে না খেয়েই দিন কাটতো। ক্ষুধার জ্বালায় শুরু করেন বাদাম বিক্রি। কিছুদিন আইসক্রিমও বিক্রি করেছেন। অন্যের জমিতে কাজ করে সংসারের খরচ চালাতেন। কিন্তু সিনেমার কাহিনীর মতো হঠাৎ তার জীবনের দৃশ্যপট পাল্টাতে থাকে। সবকিছু যেন রাতারাতি বদলাতে থাকে। কয়েক বছরের ভেতরে আমদানি ব্যবসা থেকে শুরু করে, বাড়ি-গাড়ি, ফ্ল্যাট-প্লট, আওয়ামী লীগের পদ-পদবি সবই হয়েছে। বাদাম বিক্রেতা থেকে হয়ে যান শ্রীনগরের অধিপতি।
সভায় বলা হয়, দেশের পাসপোর্ট অফিসে দুর্নীতি আজ ওপেন সিক্রেট। সিলেটের পাসপোর্ট অফিসে দুর্নীতি নিয়ে পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্ষুব্ধ হয়েছেন বলে গণমাধ্যমে প্রকাশ পেয়েছে। দেশবাসীর দাবী সিলেট সহ দেশের সকল পাসপোর্ট অফিসের কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের বিষয় সম্পত্তির হিসাব সরকারের কাছে দাখিল করা এবং দুর্নীতিবাজদের তালিকা তৈরী করে জড়িতদের চাকুরী থেকে বরখাস্তের জোর দাবী জানানো হয়।
নেতৃবৃন্দ গণমাধ্যমে প্রকাশিত এই সব বড় বড় দুর্নীতি দায়ে অভিযুক্ত আজিজুল হক, বাপেক্স ‘থ্রিডি-টুডি’ দুর্নীতি সাইসমিক প্রকল্পের পরিচালক মেহেরুল হাসান সহ ৮ জন কর্মকর্তাদের অবিলম্বে গ্রেফতার করে দুর্নীতির মামলা দায়ের করার জোর দাবী জানান। অন্যথায় অত্র সংগঠনের পক্ষ থেকে দেশব্যাপী গণআন্দোলন গড়ে তোলা হবে।
সভায় বক্তব্য রাখেন, কেন্দ্রীয় সহ সভাপতি ইকবাল হোসেন চৌধুরী, চট্টগ্রাম ফার্টিলাইজার কলেজের সাবেক অধ্যক্ষ ড. রমেন্দ্র নাথ ভট্টাচার্য, কেন্দ্রীয় যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক, সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মাওলানা আবুল হোসেন চতুলী ও মামুন রশীদ এডভোকেট, সাংগঠনিক সম্পাদক ডাঃ অরুণ কুমার দেব, বিশিষ্ট শিক্ষাবিদ ও সমাজসেবী নেছারুল হক চৌধুরী বুস্তাম, কেন্দ্রীয় প্রচার সম্পাদক মীর আব্দুল করিম পাখি মিয়া, সমবায় বিষয়ক সম্পাদক এম.এ লাহিন, ছাত্র ও যুব বিষয়ক সম্পাদক রফিকুল ইসলাম সেনাজ, সাবেক যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক তারেক আহমদ বিলাস, সহ দপ্তর সম্পাদক এম বরকত আলী, কেন্দ্রীয় সদস্য আব্দুল মোতাওয়াল্লী ফলিক, কয়েছ আহমদ সাগর, আমিরুল হোসেন চৌধুরী আমনু, আব্দুস সালাম চৌধুরী সোহেল, রফিকুল ইসলাম শিতাব, সরোজ ভট্টাচার্য্য, ইসমত ইবনে ইসহাক সানজিদ, আদনান খান হেলাল, দুর্নীতি মুক্তকরণ বাংলাদেশ যুব ফোরামের কেন্দ্রীয় সভাপতি ইমাম হোসেন, সিনিয়র সহ সভাপতি নিয়াজ কুদ্দুস খান, সহ সভাপতি নুরুল ইসলাম জিতু, সাধারণ সম্পাদক মাহবুব ইকবাল মুন্না, যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক রিকন তালুকদার লিখন, আজিজুল হক কাজী, সাংগঠনিক সম্পাদক সৈয়দ নুর আহমদ জুনেদ, সম্পাদক মন্ডলীর সদস্য বিজয় চন্দ্রনাথ বিপ্লব, সৈয়দ রাসেল, মোঃ আরিফুল ইসলাম নাহিদ, ফুজায়েল আহমদ চৌধুরী, অনুকুল চন্দ্র দাস, অপু দাস, রফিকুল ইসলাম, হেলাল আহমদ চৌধুরী প্রমুখ। বিজ্ঞপ্তি

 

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন