নারায়ণগঞ্জ থেকে স্টাফ রিপোর্টার : নারায়ণগঞ্জে আলোচিত ৭ খুন মামলার অন্যতম আসামি নূর হোসেন, র্যাবের সাবেক কর্মকর্তা মাসুদ রানা ও মিজানুর রহমান দিপুর পক্ষে তাদের আইনজীবীরা আদালতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেছেন। গতকাল মঙ্গলবার নারায়ণগঞ্জের সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ সৈয়দ এনায়েত হোসেনের আদালতে ২৩ আসামির উপস্থিতিতে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করা হয়। এ নিয়ে ৩৫ আসামির মধ্যে মোট ৩১ আসামির পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন হলো। গতকাল সকাল ১০টা থেকে বেলা দেড়টা পর্যন্ত নূর হোসেন ও মিজানুর রহমান দিপুর পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ হলেও মাসুদ রানার পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন অসমাপ্ত রয়েছে। আজ বুধবার যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের পরবর্তী তারিখ ধার্য আছে।
গতকাল সকাল ১০টা থেকে দুপুর সাড়ে ১২টা পর্যন্ত মামলার অন্যতম আসামি নূর হোসেনের পক্ষে তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট খোকন সাহা যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। এরপর নূর হোসেনের পক্ষে যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন তার অপর আইনজীবী অ্যাডভোকেট লুৎফর রহমান আকন। পরে তিনি নূর হোসেনের গাড়িচালক আসামি মিজানুর রহমান দিপুর পক্ষেও যুক্তিতর্ক উপস্থাপন করেন। র্যাবের চাকরিচ্যুত কর্মকর্তা আসামি মাসুদ রানার পক্ষে তার আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফরহাদ আব্বাস যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শুরু করলেও গতকাল তা শেষ হয়নি।
নূর হোসেনের আইনজীবীরা আদালতকে বলেন, এই মামলায় ১০৬ জন সাক্ষীর কেউই বলেননি অপহরণের সময় থেকে শুরু করে লাশ গুম হওয়া পর্যন্ত তারা নূর হোসেনকে দেখেছেন। এমনকি নূর হোসেনের টাকায় র্যাব সদস্যরা ৭ জনকে অপহরণ ও হত্যা করেছে সাক্ষীদের এমন কথারও কোনো দালিলীক প্রমাণ মামলার তদন্ত কর্মকর্তা মামুনুর রশিদ মÐল আদালতে উপস্থাপন করতে পারেননি। এ ছাড়াও তিনি ৭ জনকে হত্যার ঘটনাস্থল চিহ্নিত করতে পারেননি। অ্যাডভোকেট খোকন সাহা আদালতকে আরো বলেন, মামলার বাদী নিহত নজরুলের স্ত্রী তার এজাহারে লিখেছেন, ২০১৪ সালের ১ ও ২ ফেব্রæয়ারির ঘটনাকে কেন্দ্র করে নূর হোসেন নজরুলকে হত্যার হুমকি দিয়েছিল। এরপর থেকে নজরুল বাড়িতে থাকতে পারেনি। কিন্তু মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ওই দুই ঘটনা তদন্ত করেননি। এমনকি ওই ঘটনায় নজরুলের বিরুদ্ধে দায়ের করা মামলার বাদী মোবারককেও জিজ্ঞাসাবাদ বা আসামি করা হয়নি। সেই ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত কেউ নূর হোসেনের বিরুদ্ধে মামলা করেনি বা আদালতে এসে সাক্ষীও দেয়নি। ১৬৪ ধারার জবানবন্দিতে র্যাবের সাবেক কর্মকর্তা তারেক সাইদ সরাসরি নূর হোসেনে নাম বলেননি। সাক্ষী নিহত চন্দন সরকারের ভাতিজা প্রিতম আদালতকে বলেছেন, তিনি বিভিন্ন মিডিয়ার মাধ্যমে জানতে পেরেছেন অপহরণের সময় অ্যাডভোকেট চন্দন কুমার সরকার প্রতিবাদ করায় নূর হোসেনের সহায়তায় র্যাব সদস্যরা ৭ জনের সঙ্গে চন্দন সরকারকেও অপহরণ করেছে। কিন্তু একজন সাক্ষীও আদালতে বলেননি অপহরণের সময় চন্দন সরকার প্রতিবাদ করেছিল। এসব কথা বায়বীয়।
র্যাবের সাবেক কর্মকর্তা মাসুদ রানার পক্ষে তার আইনজীবী ফরহাদ আব্বাস যুক্তিতর্ক উপস্থাপনের সময় আদালতকে বলেন, তথাকথিত অপহরণের যে বিষয়টি বলা হচ্ছে, সেটি আসলে কোনো অপহরণের ঘটনা ছিল না। সেটা ছিল অধিনায়কের নির্দেশে অপর টিমকে সহায়তা করা। যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষ না হওয়ার মাসুদ রানার পক্ষে তার আইনজীবী যুক্তি উপস্থাপন অসমাপ্ত রেখেই গতকালের কাজ শেষ করেন।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন