বুধবার, ২২ মে ২০২৪, ০৮ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১৩ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

জ্বালানি তেলের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধি, যা বলছে সাধারণ জনগণ

রুহুল আমিন | প্রকাশের সময় : ৬ আগস্ট, ২০২২, ৬:২৮ পিএম

সব ধরনের জ্বালানি তেলের দাম রাতারাতি ৪২ থেকে ৫২ শতাংশ বাড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ডিজেল ও কেরোসিনের দাম লিটারপ্রতি ৮০ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১১৪ টাকা করা হয়েছে। এছাড়া পেট্রোলের দাম ৮৬ টাকা থেকে ১৩০ টাকা এবং অকটেনের দাম ৮৯ টাকা থেকে বাড়িয়ে ১৩৫ টাকা হয়েছে। অর্থাৎ নতুন ঘোষণা অনুযায়ী, ডিজেল ও কেরোসিনের দাম প্রতি লিটারে বেড়েছে এক লাফে ৩৪ টাকা। অকটেনের দাম বেড়েছে লিটারে ৪৪ টাকা। সবচেয়ে বেশি বেড়েছে পেট্রোলের দাম। প্রতি লিটারে এর দাম বাড়ে ৪৬ টাকা। গতকাল শুক্রবার রাত ১২টার পর থেকে ভোক্তা পর্যায়ে নতুন এই মূল্য কার্যকর হয়।

রাতে সরকারি এক বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বিশ্ববাজারে জ্বালানি তেলের দাম বেড়ে যাওয়ায় মূল্যবৃদ্ধি অপরিহার্য হয়ে পড়েছে।

এদিকে, রাত ১০টায় তেলের দাম হঠাৎ বাড়ার ঘোষণা আসার সঙ্গে সঙ্গে ঢাকাসহ সারা দেশের পেট্রোল পাম্পগুলোতে অরাজকতা নেমে আসে। একযোগে সব পেট্রোল পাম্প তেল বিক্রি বন্ধ করে দেয়।

এতে তেলের জন্য রাস্তায় বিশাল লাইন তৈরি হয়। তেল না দেওয়ায় অনেক জায়গায় পেট্রোল পাম্পে হামলার ঘটনাও ঘটেছে। এর ফলে আজ রাস্তায় গণপরিবহন নেই বললেই চলে। যা ছিল তাও সামান্য। এরপর থেকেই শুরু হয় সোস্যাল মিডিয়ায় তুমুল সমালোচনা।

মো. কেবলা জান সজীব নামে ফেসবুকে একজন লিখেছেন, দেশ শ্রীলঙ্কার পথে হাটতেছে, এর প্রমাণ হয়ে গেল। তারপরও আমাদের দেশের এমপি মন্ত্রীরা বলবে-আমরা আমেরিকার চেয়েও অনেক উন্নত।

মো. মামুন মানিক নামে একজন লিখেছেন, ঢাকা শহরসহ সমগ্র বাংলাদেশে এখন গরুর গাড়ি চালানো উচিত। এভাবে অযুক্তিকভাবে হুট করে তেলের দাম এতটা বাড়ানো উচিত হয়নি সরকারের। আর যদিওবা বাড়ান তাহলে তার সমন্বয় করে আমাদের বেতনটা বাড়িয়ে দিন। তাহলে আর কোনো অভিযোগ থাকবে না।

মো. আলামিন নামে একজন লিখেছেন, আমরা সিঙ্গাপুর পেরিয়ে আমেরিকা এবং কানাডার দিকে যাচ্ছিলাম। কিন্তু আবহাওয়া পরিস্থিতি খারাপ থাকায় শ্রীলঙ্কার দিকে এখন যেতে হচ্ছে।

মো. সাব্বির হোসাইন নামে একজন লিখেছেন, মনে মনে ভাবছিলাম একটা মোটরসাইকেল কিনবো, এখন তেলের দাম যে ভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে- বাইক কেনার স্বপ্ন বাদ দিয়ে নতুন স্বপ্ন দেখতেছি।

মাহবুবুর রহমান নামে একজন লিখেছেন, দেশের উন্নয়নের স্বার্থেই জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছে। আপনি যদি উন্নয়ন বিরোধী হোন তাহলে পাকিস্তানে চলে যান।

হাবিব জিওন নামে একজন লিখেছেন, বাংলাদেশ জিম্বাবুয়ের সাথে হেরে যাওয়াতে সরকার রাগ করে জ্বালানি তেলের দাম বাড়িয়ে দিয়েছে।

সাহানুল করিম চাপল নামে একজন লিখেছেন, এটা জনজীবনে মারাত্মক প্রভাব ফেলবে। সব জিনিষপত্রের দাম প্রায় দ্বিগুণ হয়ে যাবে। গরিব মানুষ দূরে থাক মধ্যবিত্তদেরও জীবন দুর্বিসহ হয়ে যাবে। যদিও সরকার উপায়হীন, তবুও সরকারের এই বিষয়টা ভেবে দেখা উচিত ছিল। কারণ দুর্নীতির লাগাম কিছুটা টেনে ধরলেই এই মন্দা সামাল দেওয়া সম্ভব ছিল। সরকার তা না করে জনগণের উপর চাপিয়ে দিল, এটা চরম দুঃখজনক।

আশরাফ সামির নামে একজন লিখেছেন, দুর্নীতি করবে আওয়ামী লীগ, আর কষ্ট করবে জনগণ।

মোহাম্মদ সাদ্দাম হোসাইন নামে একজন লিখেছেন, মাঝরাতে নির্বাচন, মাঝ রাতেই তেলের দাম বৃদ্ধি।

শাহরিয়ার পলাশ নামে একজন লিখেছেন, তেলের মূল্য বৃদ্ধির এই অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার করুন। বিশ্ববাজারে তেলের দাম প্রতিনিয়ত কমছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী নিজেই বলেছেন অকটেন-পেট্রোল আমাদের আমাদানি করতে হয় না। বরং মাঝেমধ্যে রপ্তানি করি। তাহলে নিজেদের পণ্যের এই অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির কারণ কি?

এটা কি আইএমএফ এর ঋণ প্রাপ্তির শর্ত? যদি সেটা হয় তাহলে তা খোলাসা করুন। দেশের জনগণকে ভোগান্তিতে ফেলে আইএমএফ এর ঋণ আমাদের নিতে হচ্ছে কেন, সেটাও জনগণকে জানান।

প্রধানমন্ত্রীকে কি সঠিক তথ্য সরবরাহ করা হয় না? প্রধানমন্ত্রী যখন বললেন অকটেন-পেট্রোল আমাদের আমদানি করতে হয় না। তারপর বিশ্ববাজারের দোহাই দিয়ে তেলের দাম কেন বাড়ল? অথচ গতকালই খবর ছিল বিশ্ববাজারে তেলের দাম ব্যারেল প্রতি ৯০ ডলারের নিচে। যা সাম্প্রতিক সময়ে সর্বনিন্ম।

অনেকেই লিখেছেন, আমরা শ্রীলঙ্কার পথে যাচ্ছি এর প্রমাণ হয়ে গেলো।

এছাড়া কেউ কেউ লিখেছেন, বিশ্ববাজারে তেলের দাম এখন কমেছে, আগে বাড়তি ছিল। সরকার ভর্তুকি দিয়ে এতদিন চালাইছিল বলে আমরা বুঝেনি। কিন্তু এখনও যা বেড়েছে তা অন্য দেশের তুলনায় কম। কিছু লোক না জেনেই সরকারের সমালোচনা করছে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন