এর আগে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ানো হয়েছিলো ২০২১ সালের ৪ নভেম্বর। সে সময় বাড়ানো হয়েছিলো ডিজেল ও কেরোসিনের দাম, এছাড়া অপরিবর্তিত ছিলো অকটেন ও পেট্রোলের দাম। তবে এবার জ্বালানি তেলের দাম বৃদ্ধি দেশের পূর্বের সব রেকর্ডকে অতিক্রম করেছে। ডিজেল ও কেরোসিন লিটারে ৩৪ টাকা বাড়িয়ে ৮০ থেকে ১১৪ টাকা, অকটেন লিটারে ৪৬ টাকা বাড়িয়ে ৮৯ থেকে ১৩৫ টাকা, পেট্রল লিটারে ৪৪ টাকা বাড়িয়ে ৮৬ থেকে ১৩০ টাকা করা হয়েছে। হাঠাৎ এমন আকাশছোঁয়া মূল্য বৃদ্ধির কারণটা কী? জ্বালানি তেলের নজিরবিহীন দাম বাড়ানোর জন্য সরকার বিশ্ব বাজারে তেলের মূল্য, পেট্রোলিয়াম কর্পোরেশন বা বিপিসির লোকসান কমানো এবং পাচার হওয়ার আশঙ্কার কথা জানিয়েছে। কিন্তু বৈশ্বিক মন্দা পরিস্থিতিতে চাহিদা হ্রাস পাওয়ায় তেলের দাম যেখানে কমতে শুরু করেছে, সেখানে হঠাৎ বাংলাদেশে লিটারে প্রায় ৫০ শতাংশ তেলের দাম বৃদ্ধি আসলে একটু অস্বাভাবিকই। তবে প্রশ্নটা থেকেই যায়, এর প্রভাব কতটুকু পড়বে আমাদের দেশে সার্বিক বিবেচনায়! প্রথমত ভাড়া বেড়েছে সব ধরনের গণপরিবহনের। এখন প্রশ্ন থাকতেই পারে তাহলে গ্যাস চালিত গণপরিবহনগুলো কেন ভাড়া বৃদ্ধি করবে? উত্তরটা হলো সয়াবিন তেলের অপ্রতুলতার কারণে যেভাবে সরিষার তেলের দাম একলাফে বাড়ে, ঠিক সেভাবেই। আগে শ্যালোমেশিনে এক ঘণ্টা সেচ দিতে ১০০ টাকা লাগলেও এখন এর পেছনে ব্যয় হবে ১৫০ টাকা। কৃষিখাতে বিদ্যমান সমস্যাগুলোর সাথে এটা উপরি পাওনা। কৃষকদের উৎপাদন ব্যয় বৃদ্ধি চরম সংকট সৃষ্টি করবে কৃষি খাতে। পরিবহন ব্যায় বাড়ায় নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসসহ সব ধরনের জিনিসের মূল্য অনেক বৃদ্ধি পাবে। কারণ, বাজার ব্যাবস্থার বৃহৎ অংশ হলো পণ্য পরিবহন। ইতোমধ্যে দেখা গিয়েছে কাঁচা বাজারে সবজি কেজিতে ১৫-২০ টাকা বৃদ্ধি পেয়েছে। এখন আপনি কী করবেন? মোটরসাইকেলের পরিবর্তে সাইকেল ব্যাবহার বাড়িয়ে দিবেন, লঞ্চে না উঠে নৌকা চড়বেন, ভ্রমণ কমিয়ে দিবেন, কর্মস্থলে আধঘণ্টা বেশি সময় নিয়ে পায়ে হেঁটে পাড়ি দিবেন? আর কী করবেন? অতি প্রয়োজনীয় জিনিসের বাইরে ভোগ কমিয়ে দেবেন? হ্যাঁ, তা আপনি করতেই পারেন। তবে এটা কি স্থায়ী সমাধান?
নিশিতা জামান নিহা
শিক্ষার্থী, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন