ভারতের রাজধানীতে ধর্ষণের ঘটনা যে বাড়ছে, তা স্বীকার করে নিল দিল্লি পুলিশ। চলতি বছরে এখনও পর্যন্ত প্রতিদিন দিল্লিতে ৬টি করে ধর্ষণের ঘটনা রেকর্ড করা হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে শ্লীলতাহানির ঘটনাও ঘটছে বলে জানানো হয়। আর এই তথ্য প্রকাশ্যে আসতেই তৈরি হয়েছে উদ্বেগ।
দিল্লি পুলিশ জানিয়েছে যে, ২০২২ সালের প্রথম ছয় মাসে রাজধানীতে ১ হাজার ১০০-র বেশি ধর্ষণের মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে। মহিলা হেল্পলাইন ও বুথ চালুর পর এই ধরনের মামলার নথিভুক্তর পরিমাণ বৃদ্ধি পেয়েছে বলে জানানো হয়। তথ্য অনুযায়ী আগের বছরের তুলনায় এ বছর ধর্ষণের ঘটনা বেড়েছে প্রায় ৬ শতাংশ। এছাড়া নারী নির্যাতনের ঘটনা বেড়েছে প্রায় ১৭ শতাংশ। জানুয়ারি থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত ১ হাজার ৪৮০টি শ্লীলতাহানি ও লাঞ্ছিতের মামলা নথিভুক্ত করা হয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়ে। ২০২১ সালে একই সময়ে ১ হাজার ২৪৪টি শ্লীলতাহানির মামলা রুজু করা হয়েছিল।
চলতি বছরে রাজধানীতে নারী অপহরণের ঘটনাও উল্লেখযোগ্যভাবে বৃদ্ধি পেয়েছে বলে পুলিশের পক্ষ থেকে জানানো হয়। গত জানুয়ারি থেকে ১৫ জুলাই পর্যন্ত ২ হাজার ১৯৭টি অপহরণের ঘটনা ঘটেছে বলে প্রকাশিত তথ্যে উল্লেখ করা হয়েছে। গত বছরের তুলনায় এই অপরহণের ঘটনা ২০ শতাংশের বেশি বৃদ্ধি পেয়েছে।
পুলিশের এক কর্মকর্তা জানিয়েছেন যে নারী নিগৃহের ঘটনাগুলি হয়েছে হয় নিজেদের বাসভবনে, বা তার কাছাকাছি। আর অধিকাংশ ক্ষেত্রেই নিগৃহীতরা অভিযুক্তদের চেনেন বলে পুলিশের পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছে। পুলিশ আরও জানিয়েছে যে কোভিড মহামারির পর গার্হস্থ্য সহিংসতাও বহুগুণে বৃদ্ধি পয়েছে। এই ধরনের অপরাধ চলতি বছরের এখনও পর্যন্ত ২ হাজার ৭০৪টি নথিভুক্ত হয়েছে বলে জানানো হয়। গত বছর এই সংখ্যাটি ছিল ২ হাজার ৯৬।
১.২২ শতাংশ ধর্ষণের ঘটনায় অভিযুক্তরা নিগৃহীতাকে চেনেনা বলে প্রকাশিত তথ্যে উল্লেখ। ধর্ষণের ঘটনার পর ৭ থেকে ৮ দিনের মধ্যে ৬০ শতাংশের বেশি অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে বলে পুলিশ জানায়। পুলিশের আরও দাবি, ২০২১ সালে ৯৫ শতাংশের বেশি ধর্ষণের মামলায় অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। রাজধানীতে অপরাধ বৃদ্ধির কারণ নিয়ে সাফাই দিতে ভোলেননি দিল্লি পুলিশের মুখপাত্র সুমন নালওয়া। যৌন নির্যাতনের ঘটনাগুলি অপরাধের পাশাপাশি সামাজিক সমস্যা বলে জানান তিনি। আর মামলা নথিভুক্ত হওয়ার পর সেগুলি গুরুত্ব সহকারে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন ওই কর্মকর্তা।
নারী নিগৃহের ঘটনা রুখতে বেশি করে মহিলা পুলিশকে কাজে লাগানো হয়েছে বলে দাবি করেছেন দিল্লি পুলিশের মুখপাত্র। সেই সঙ্গে অপরাধ রুখতে জাতীয় সড়ক এলাকায় টহলদারি বৃদ্ধি করা হয়েছে বলেও জানান তিনি। সূত্র: টিওআই।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন