শুক্রবার, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

সারা বাংলার খবর

টাঙ্গাইলে বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণ মামলা: মূল পরিকল্পনাকারীসহ আরো দুই আসামীর স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি

টাঙ্গাইল জেলা সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ১১ আগস্ট, ২০২২, ৬:০৮ পিএম

কুষ্টিয়া থেকে আসা ঈগল পরিবহনের বাসে টাঙ্গাইলে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনায় তিন দিনের রিমান্ডে থাকা ৪ আসামীর মধ্যে মূল পরিকল্পনাকারী মোঃ রতন হোসেন (২১) ও মো: আব্দুল মান্নান (২২) আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছে। বৃহস্পতিবার বিকেলে মধুপুর আমলী আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নওরিন করিম আসামীদের এ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ করেন। জবানবন্দি লিপিবদ্ধ শেষে বিচারক আসামীদের জেলা হাজতে প্রেরন করেন। এছাড়াও রিমান্ডে থাকা অপর দুই আসামী দীপু ও জীবনকে আদালতে তোলা হলে তাদেরও জেলা হাজতে প্রেরণ করা হয়।

টাঙ্গাইলের আদালত পরিদর্শক তানবীর আহম্মদ জানান, মামলার তদন্ত কর্মকর্তা বৃহস্পতিবার দুপুরে রিমান্ডে থাকা ৪ আসামীর মধ্যে মূল পরিকল্পনাকারী রতন ও মান্নানকে মধুপুর আমলী আদালতের বিচারক সিনিয়র জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট নওরিন করিম এর আদালতে প্রেরন করেন। দুই আসামী বাসে ডাকাতি ও ধর্ষণের ঘটনায় জড়িত থাকা মর্মে স্বেচ্ছায় আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে। পরে আদালতের বিচারক জবানবন্দি লিপিবদ্ধ শেষে বিকেলে আসামীদের জেল হাজতে প্রেরন করেন। এছাড়াও এ মামলায় রিমান্ডে থাকা অপর দুই আসামীকেও জেলা হাজতে প্রেরন করা হয়। এ নিয়ে মোট ১১জন আসামী আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করেছে।

স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেওয়া ১১ আসামী হলো- মূল পরিকল্পনাকারী টাঙ্গাইলের মধুপুর উপজেলার মজিবুর রহমানের ছেলে মোঃ রতন হোসেন (২১), খাগড়াছড়ি জেলার মাটিরাঙ্গা এলাকার মো: খলিলের ছেলে মো: আব্দুল মান্নান (২২), ব্রাহ্মণবাড়িয়া জেলার নবীনগর এলাকার মো: সাদেক মিয়ার ছেলে মো: আলাউদ্দিন (২৪), গাজীপুর জেলার কাশেমপুর এলাকার মো: মমিন সরকারের ছেলে মো: নাঈম তালুকদার (১৯), সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ এলাকার মো: আবুল তালুকদারের ছেলে রাসেল তালুকদার (৩২) এবং সিরাজগঞ্জ জেলার কামারখন্দ এলাকার মৃত আবুল তালুকদারের ছেলে মো: আসলাম তালুকদার রায়হান, জামালপুর জেলার মেলান্দহ এলাকার শামসুল মন্ডলের ছেলে মো: সোহাগ মন্ডল (২০), ঢাকা জেলার আশুলিয়া এলাকার মো: জামির হোসেনের ছেলে মো: বাবু হোসেন জুলহাস (২১)। এরআগে এ মামলায় রাজা মিয়া (৩২), আব্দুল আওয়াল (৩০) ও নুরনবী (২৬) কে গ্রেফতার করা হয়। পরে আদালতে তারা এ ঘটনায় জড়িত থাকা মর্মে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেয়। পরে তাদের জেল হাজতে প্রেরন করা হয়।

জেলা হাজতে প্রেরন করা দুই আসামী হলো- জামালপুর জেলার সরিষাবাড়ি এলাকার মো: সোলায়মান খন্দকারের ছেলে খন্দকার মো: হাসমত আলী দিপু (২৩) ও নীলফামারী সদর থানার মৃত জাবেদের ছেলে মো: জীবন প্রামানিক (২১)। এ মামলায় মোট ১৩ জন আসামীকে গ্রেফতার করা হয়েছে। এরমধ্যে ১১ আসামী আদালতে স্বেচ্ছায় স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি প্রদান করে।

উল্লেখ্য, গত ২ আগস্ট মঙ্গলবার সন্ধ্যায় কুষ্টিয়ার দৌলতপুর থেকে ঈগল পরিবহনের একটি বাস নারায়নগঞ্জের উদ্দেশ্যে রওনা হয়। রাত সাড়ে ১১টার দিকে সিরাজগঞ্জের একটি খাবার হোটেলে যাত্রা বিরতি করে। সেখান থেকে যাত্রা শুরুর পর তিন দফায় যাত্রীবেশি কয়েক জন ডাকাত বাসে ওঠে। বাসটি টাঙ্গাইল অতিক্রম করার পর ডাকাতরা অস্ত্রের মুখে চালককে জিম্মি করে বাসটি তাদের নিয়ন্ত্রণে নেয়। তারা যাত্রীদের হাত, পা, চোখ বেঁধে তাদের সব মালামাল লুট করে নেয়। এ সময় বাসে থাকা এক নারী যাত্রী ধর্ষণ ও নির্যাতনের শিকার হন। ডাকাতরা বাসটি টাঙ্গাইল-ময়মনসিংহ সড়কের দিকে নিয়ে যায়। রাত সাড়ে ৩টার দিকে বাসটি মধুপুর উপজেলার রক্তিপাড়া নামক স্থানে রাস্তার খাদে নামিয়ে দেয় তারা। পরে স্থানীয় লোকজন ও ফায়ার সার্ভিস সদস্যরা যাত্রীদের উদ্ধার করে। পরে পুলিশ আসলে যাত্রীরা ডাকাতি ও নির্যাতনের বিষয়টি জানান। ওই বাসের যাত্রী হেকমত মিয়া বাদী হয়ে মধুপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন