ভোলার দৌলতখান পৌরসভার ১নং ওয়ার্ডের বেড়িবাঁধে ভাঙন দেখা দিয়েছে। সম্প্রতি সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে মেঘনা নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পাওয়ায় এ ভাঙন দেখা দেয়। হঠাৎ করে বেড়িবাঁধ ভাঙনের কবলে পড়ায়
চরম আতঙ্কের মধ্যে রয়েছে এলাকাবাসী। স্থানীয়রা জানায়, নিম্নচাপের কারণে মেঘনা নদীর জোয়ারের ঢেউয়ের আঘাতে গত দুই দিনে অন্তত ১০০ মিটার বেড়িবাঁধের ব্যাপক ক্ষতি হয়। এছাড়াও বেড়িবাঁধের বাহিরে ভবানীপুর ইউনিয়নের ৭ ও ৮ নং ওয়ার্ডের নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয়েছে। এতে পানি বন্দি হয়ে ভোগান্তি পোহাচ্ছে ইউনিয়নের অর্ধশত পরিবার। দৌলতখান উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোহাম্মদ তারেক হাওলাদার, ভোলা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ হাসানুজ্জামান ক্ষতিগ্রস্ত বেড়িবাঁধ ও প্লাবিত এলাকা পরিদর্শন করেন। সরেজমিনে দেখা গেছে, পৌরসভার ১ নং ওয়ার্ডের রাধাবল্লভ এলাকায় জোয়ারের পানি আঁচড়ে পড়ছে বেড়িবাঁধে। এতে বাঁধের কমপক্ষে ১০০ মিটার ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ভাঙনকবলিত এলাকায় নদীতে বালুভর্তি বস্তা ফেলা হয়েছে। তবুও জোয়ারে ভাঙছে বেড়িবাঁধ। ইতোমধ্যে বেড়িবাঁধের ওপর বসবাসকারী অন্তত ১০ টি পরিবারের ঘর ও বসতভিটা নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। কেউ কেউ ঘর ভেঙে অন্যত্র সরিয়ে নিচ্ছে। চরম আতঙ্কের মধ্যে আছেন স্থানীয় বাসিন্দারা। স্থানীয়রা জানায়, এখনই বেড়িবাঁধ রক্ষায় প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ না নিলে যেকোনো মুহূর্তে বাঁধ ভেঙে জোয়ারের পানি লোকালয়ে প্রবেশ করে ফসলি জমি, মাছের ঘেরসহ মানুষের ব্যাপক ক্ষতি হবে। স্থানীয় বাসিন্দা সহিজল মাঝি বলেন, নদীতে মাছ ধরে সংসার চালাই। জমি- জমা নাই। তাই নদীর কূলে বেড়িবাঁধে ৩০ বছর ধরে পরিবারসহ বসবাস করছি। পরশু দুপুরে(গত বুধবার) পরিবারের সবাই মিলে খাইতে বইছি। হঠাৎ জোয়ার আইসা মুখের খাবার ও থালাবাসন নিয়া গেছে। বসতভিটাও নদীর পেটে গেছে। বিধবা ফরিদা বেগম বলেন, 'ভিক্ষা করে সংসার চালাই। কোথাও জায়গা- জমি নাই। ১০ বছরের একমাত্র ছেলে জিহাদকে নিয়ে বেড়িবাঁধে ছোট্ট ঘরে থাকতাম। নদীর ভাঙনে তাও চলে গেছে। কোথাও যাওয়ার উপায় নাই'।' পৌর কাউন্সিলর মোঃ জাকির হোসেন বলেন, বেড়িবাঁধের ওপর গরীব মানুষ জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে। এসব মানুষের অন্যত্র পুনর্বাসন করা জরুরী। ভোলা জেলা পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মোঃ হাসানুজ্জামান বলেন, সম্প্রতি সৃষ্ট নিম্নচাপের কারণে মেঘনা নদীর পানির উচ্চতা বৃদ্ধি পেয়েছে। এতে করে দৌলতখানে বেড়িবাঁধের বাহিরে নিম্নাঞ্চল প্লাবিত হয় এবং বেড়িবাঁধের একটি অংশে আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয় । সেই অংশে মেরামত কার্যক্রম শুরু হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন