বাংলাদেশের প্রধান অর্থকরী ফসলগুলোর মধ্যে দ্বিতীয় প্রধান ফসল হচ্ছে চা। জিডিপির ১ শতাংশ আসে এই চা থেকে। দুঃখজনক হলেও সত্য যে, বিশ্ববাজারে চায়ের রফতানি দিন দিন বৃদ্ধি পেলেও বদলাচ্ছে না চা শ্রমিকদের ভাগ্য। অনুন্নতই রয়ে যাচ্ছে তাদের জীবনযাত্রার মান। বাংলাদেশের ১৬৬টি চা বাগানে কয়েক লক্ষ শ্রমিক কাজ করে জীবিকা নির্বাহ করে। সারাদিনে রোদে পুড়ে, ঘাম ঝরিয়ে দিনশেষে মজুরি পেতে হয় ১০২-১২০ টাকা, যা দিয়ে একটি পরিবারের ভরণপোষণ তো দূরের কথা, একজন মানুষের পকেট খরচ চালানোও দুষ্কর। দেশের অন্য সব খাতে শ্রমিকদের মজুরি মোটামুটিভাবে বাড়ানো হলেও চা শ্রমিকদের বেতন বাড়ানো হচ্ছে না। অত্যন্ত কম মজুরি হওয়ায় পরিবারের ছোট বড় প্রায় সব সদস্যদের লেগে থাকতে হয় কর্মে। ফলে তাদের শিশুরা পারছে না হাতে কলমে শিক্ষিত হয়ে উঠতে। বলতে গেলে তাদের সবাই মৌলিক অধিকারগুলো থেকেও বঞ্চিত। বর্তমানে দ্রব্য মূল্যে যে ঊর্ধ্বগতি তাতে তাদের জীবন নিয়ে বেঁচে থাকা অত্যন্ত কষ্ট সাধ্য হয়ে পড়েছে। পরিবারে পুষ্টিকর খাদ্য ক্রয়ের সামর্থ্য নেই বলে অপুষ্টিকর, অনিরাপদ খাবার খেয়ে তাদের শরীরে সৃষ্টি হচ্ছে নানা রকম মরণঘাতী রোগ-ব্যাধি। নেই উন্নত চিকিৎসা ব্যাবস্থাও। সরকার যদিও চা শ্রমিকদের জীবনমান উন্নতয়ন কর্মসূচি হাতে নিয়েছে। কিন্তু তাতেও আর সব খাতের মতো রন্ধ্রে রন্ধ্রে ঢুকে পড়েছে অনিয়ম-দুর্নীতি। যার প্রভাব পড়ছে এই খেটে খাওয়া অসহায় দিনমজুর মানুষদের উপর। তাই সরকার এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি আহ্বান, চা শ্রমিকদের মজুরি বাড়িয়ে তাদের জীবনমান উন্নয়নে সুপরিকল্পিত কর্মসূচি গ্রহণ করুন। উন্নত চিকিৎসা সেবা নিশ্চিত করে তাদেরকে স্বস্তিতে দীর্ঘশ্বাস ফেলার সুযোগ করে দিন।
মিলাদ হোসেন সুজন
শিক্ষার্থী, কুলাউড়া সরকারি কলেজ, মৌলভীবাজার
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন