বগুড়ায় একটি সার বোঝাই অবৈধ গোডাউন সিলগালা করে ওই গোডাউনে মজুদ ১২ হাজার বস্তা সার নিলামে বিক্রি করে সেই অর্থ সরকারি কোষাগারে জমার নির্দেশনার পর ঐ খাতের নানা কেলেংকারী বেরিয়ে আসতে শুরু করেছে।
জানা গেছে, সাধারণভাবে বিসিআইসি ও বিএডিসির একজন সার ডিলারের বার্ষিক বরাদ্দকৃত সার বিক্রি করে ৫-৭ লাখ টাকা লাভের সুযোগ থাকায় ডিলারশিপ নিয়ে শুরু থেকেই চালবাজি চলছিলেন। শুধুমাত্র ডিলারশিপ লাইসেন্স হাতিয়ে নিতেই ব্যবহার করা হয়েছে রাজনৈতিক প্রভাব। যারা সার ব্যবসার ধারে কাছেও নেই এমন সব রাজনৈতিক নেতা, বব্যবসায়ী এমনকি গৃহবধূর নামেও ডিলারশিপ নিয়ে সেগুলো সিন্ডিকেটের কাছে হস্তান্তর করা হয়। সিন্ডিকেটবাজির কারণেই সরকারি সার ব্যবস্থাপনার সুফল কৃষক পর্যায়ে পৌঁছাতে পারেনা বলে চাষিদের অভিমত।
বগুড়ার বিসিআইসির ১৬৩ এবং বিএডিসির ২২৩ মোট ৩৮৬ সার ডিলারের মধ্যে বেশ কয়েকজন রাজনৈতিক নেতার নাম রয়েছে যারা সারতো পরের কথা অন্য ব্যবসার সাথেও সংশ্লিষ্টতা নেই। সরকারি দলের পাশাপাশি বিরোধী দলেরও কয়েকজন নেতা যেমন নুর আফরোজ, মাফতুন আহম্মেদ, মোরশেদ মিল্টন প্রমুখের নামে সারের ডিলারশিপ রয়েছে। আবার সরকারি দলের ও বগুড়া চেম্বারের নেতা মাসুদার রহমান মিলনের নামেও রয়েছে সারের ডিলারশিপ লাইসেন্স। এমনকি গৃহবধূর নামেও রয়েছে সারের ডিলারশিপ। ডিলার নির্বাচনে যে এলাকার জন্য লাইসেন্স দেওয়া হবে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিকে ওই এলাকার বাসিন্দা হতে হবে এমন বাধ্যবাধকতা থাকলেও বাস্তবে বগুড়া শহরে স্থায়ীভাবে বসবাসকারী অনেকেই বিভিন্ন উপজেলা ও ইউনিয়নের ঠিকানা ব্যবহার করে নিয়েছেন ডিলারশিপ।
জানা গেছে, বগুড়ায় সার ডিলারদের অর্ধেকের বেশি লাইসেন্সের বরাদ্দ একটি সিন্ডিকেট তুলে নিয়ে অবৈধ মজুদ করে বাজারে কৃত্রিম সংকট সৃষ্টি করে থাকে। অভিযোগ রয়েছে, উত্তম, রিবন,আলম ও কনকের নেতৃত্ব পরিচালিত একটি সিন্ডিকেট বগুড়ার সার ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করে থাকে। গত ৮ আগষ্ট রাতে বগুড়া শহরতলীর এরুলিয়া এলাকার একটি গোডাউন সিলগালা করেন বগুড়া সদরের টিএনও সমর কুমার পাল।
কনক পারভেজ নামের ওই ডিলার শিবগঞ্জ উপজেলার নামে ডিলারশিপ নিয়ে মুলত বগুড়ায় সারের মজুদ করে সিন্ডিকেটবাজি করে থাকেন। তার গোডাউনে মজুদ সারের পরিমাণ ১০ থেকে ১২ হাজার বস্তা হতে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। সিলগালাকৃত ওই গোডাউনের মজুদ সার ভ্রাম্যমান আদালতের নির্দেশে আগামী ১৬ আগষ্ট প্রকাশ্যে নিলামে বিক্রি করে সরকারি কোষাগারে বলে জানিয়েছেন উপজেলা কৃষি অফিসার মোঃ মাহফুজ আলম। তিনি জানান, উন্মুক্ত এই নিলামে যাতে সবাই অংশ নিতে পারে সেজন্য প্রত্যেক ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের কাছে নোটিশ করা হয়েছে। পাশাপাশি সংবাদপত্র অফিসগুলোতেও সংবাদ বিজ্ঞপ্তি পাঠানো হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন