শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

আন্তর্জাতিক সংবাদ

ডোনাল্ড ট্রাম্পের মার-এ-লাগোর বাড়ি থেকে জব্দ হলো যেসব গোপন ও স্পর্শকাতর নথি

অনলাইন ডেস্ক | প্রকাশের সময় : ১৪ আগস্ট, ২০২২, ১১:৫৩ এএম

সাবেক আমেরিকান প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের ফ্লোরিডার বাড়ি থেকে মার্কিন গোয়েন্দা সংস্থা এফবিআই সর্বোচ্চ গোপনীয় নথিপত্র জব্দ করেছে বলে জানা যাচ্ছে। এফবিআই এজেন্টরা ১১ সেট নথিপত্র সরিয়ে নিয়েছেন, যেগুলির মধ্যে কিছু নথি "টিএস/এসসিআই" বলে চিহ্ণিত করা। এর অর্থ হল এসব দলিলপত্রে এমন সব তথ্য আছে যা আমেরিকার জাতীয় নিরাপত্তার জন্য "নজিরবিহীন গুরুতর ক্ষতির" কারণ হতে পারে। -বিবিসি বাংলা

ট্রাম্প বলেছেন, এসব নথি গোপনীয় বলে যে তকমা ছিল তা তুলে নেয়া হয়েছিল। এই প্রথম আমেরিকার কোন সাবেক প্রেসিডেন্টের বাড়িতে অপরাধ তদন্তে অভিযান চালানো হয়েছে। তার বাড়ি থেকে যেসব নথিপত্র জব্দ করা হয়েছে তার একটি তালিকা প্রকাশ করা হয়েছে শুক্রবার বিকালে। এর আগে একজন বিচারক সাত পৃষ্ঠার একটি নথি প্রকাশ করেন যার মধ্যে ছিল ফ্লোরিডার পাম বিচে মি. ট্রাম্পের বাসভবন মার-এ-লাগোতে তল্লাশি চালানোর জন্য একটি পরোয়ানার অনুমোদনপত্র।

এতে বলা হয় সোমবার তার বাড়ি থেকে বিশটির বেশি বাক্স ভর্তি কাগজপত্র জব্দ করা হয়েছে। এসব বাক্সে ছিল ফটোর একটি অ্যালবাম, হাতে লেখা একটি নোট, "ফ্রান্সের প্রেসিডেন্ট" সম্পর্কে কিছু তথ্য এবং মি. ট্রাম্পের দীর্ঘদিনের ঘনিষ্ঠ মিত্র রজার স্টোনের পক্ষ হয়ে লেখা একটি ক্ষমা প্রদর্শনের চিঠি। সর্বোচ্চ গোপনীয় (টপ সিক্রেট) বলে চিহ্ণিত নথিপত্রের চারটি ফাইল ছাড়া আরও জব্দ করা কাগজপত্রের মধ্যে রয়েছে তিন সেট "অতি গোপন দলিল" (সিক্রেট ডকুমেন্টস) এবং আরও তিন সেট অপেক্ষাকৃত নিচু স্তরের "গোপনীয়" (কনফিডেনশিয়াল) দলিল।

গুপ্তচর আইন লংঘনের তদন্ত

তার বিরুদ্ধে জারি করা এই পরোয়ানা থেকে ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে যে, মি. ট্রাম্প দেশটির গুপ্তচর আইন লংঘন করে থাকতে পারেন কিনা এফবিআই সেটা তদন্ত করে দেখছে। এই আইন অনুযায়ী জাতীয় নিরাপত্তার জন্য সম্ভাব্য ঝুঁকিপূর্ণ তথ্য নিজের কাছে রাখা বা তা পাচার করা অবৈধ। গোপনীয় বলে চিহ্ণিত যে কোন নথি বা অন্যান্য জিনিস সরিয়ে নেয়া আইনে নিষিদ্ধ। মি. ট্রাম্প যখন ক্ষমতায় ছিলেন, তখন এই অপরাধে সাজা তিনি আরও কঠোর করেছিলেন। বর্তমানে এই অপরাধে পাঁচ বছর পর্যন্ত কারাদণ্ডের বিধান রয়েছে।

পরোয়ানাতে বলা হয়েছে, মি. ট্রাম্পের ফ্লোরিডার বাড়ি মার-এ-লাগোর ''৪৫ অফিস'' নামে চিহ্ণিত একটি এলাকা এবং সেখানকার গুদাম ঘরগুলোতে তল্লাশি চালানো হয়েছে। মি. ট্রাম্প এবং তার কর্মচারীরা যে ব্যক্তিগত অতিথি ভবনগুলো ব্যবহার করেন, সেগুলোতে কোন তল্লাশি চালানো হয়ে না।

বিচার মন্ত্রণালয় বৃহস্পতিবার আদালতকে তল্লাশি সংক্রান্ত কাগজপত্র সাধারণের জন্য প্রকাশ করে দিতে বলে। কোন তদন্ত চলাকালীন এ ধরনের পদক্ষেপ খুবই বিরল।

তল্লাশি চালানোর জন্য বিচারক অনুমোদন দেন ৫ই অগাস্ট এবং তল্লাশি চালানো হয় সোমবার ৮ই অগাস্ট। কে ছিলেন ডোনাল্ড ট্রাম্পের ধনকুবের বাবা? ভোটের ফল বাতিল করতে 'নির্বাচন কর্মকর্তাদের হুমকি দিয়েছিল' ট্রাম্প সমর্থকরা।আমেরিকার কোন প্রেসিডেন্ট সবচেয়ে বেশি মিথ্যাচারী ছিলেন।

কী বলছে ট্রাম্পের দফতর?

শুক্রবার রাতে ট্রাম্পের কার্যালয় থেকে দেয়া এক বিবৃতিতে আবার বলা হয়েছে যে ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রেসিডেন্ট পদে থাকাকালীন এই নথিগুলোকে আর গোপনীয় রাখা হবে না বলে সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন। "তার নির্দেশ ছিল ওভাল অফিস থেকে যেসব নথিপত্র সরানো হবে এবং তার বাসভবনে নিয়ে যাওয়া হবে সেগুলো ডি-ক্লাসিফাইড নথি- অর্থাৎ সরকারিভাবে গোপনীয় নয়," বিবৃতিতে বলা হয়। ''কোন্ নথিকে গোপনীয় বলে চিহ্ণিত করা হবে এবং কোন্ নথিকে এই শ্রেণিতে রাখা হবে না, সেই সিদ্ধান্ত নেবার ক্ষমতা রয়েছে একমাত্র মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্টের। "একটা নথিকে গোপনীয় রাখা হবে না এমন সিদ্ধান্তের জন্য প্রেসিডেন্টেরই নির্ধারিত কোন আমলার অনুমোদন লাগবে- এ ধারণা অবাস্তব," বলা হয় ঐ বিবৃতিতে।

আইন বিশেষজ্ঞরা আমেরিকান মিডিয়াকে বলেছেন ট্রাম্পের অফিস থেকে দেয়া এই যু্ক্তি আদালতে ধোপে টিকবে কিনা তা স্পষ্ট নয়। "প্রেসিডেন্ট অবশ্যই একটা নথিকে ডি-ক্লাসিফাই করতে পারেন, কিন্তু তাকে সেটা করতে হবে প্রক্রিয়া মেনে," বিবিসিকে বলেন আইনজীবী টম ডুপ্রে, যিনি বিচার বিভাগে আগে কাজ করেছেন। "তাদের এ জন্য যথাযথ ফর্ম পূরণ করতে হবে, তাদের নিয়ম অনুযায়ী একটা অনুমোদন দিতে হবে। শুধু তো বললেই হবে না যে আমি এই নথিগুলোর ওপর থেকে গোপনীয়তা তুলে নিচ্ছি। যথাযথ নিয়ম মেনে এই নথিগুলো গোপন না রাখার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছিল কিনা তা স্পষ্ট নয়," তিনি বলেন। ট্রাম্পের একজন মুখপাত্র টেইলর বুডোউইচ এই হানা দেবার পদক্ষেপকে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলে অভিহিত করেছেন।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন