রোববার, ২৮ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ বৈশাখ ১৪৩১, ১৮ শাওয়াল ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

চাচা-ভাতিজাতন্ত্র, মামা-ভাগিনাতন্ত্র গোষ্ঠী বিশেষ সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছে : সুজন

‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানি সঙ্কট নাগরিক ভাবন’ শীর্ষক আলোচনা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ১৮ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

উন্নয়নের নামে দেশে এখন চাচা-ভাতিজাতন্ত্র, মামা-ভাগিনাতন্ত্রে একটি গোষ্ঠী বিশেষ সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন সুশাসনের জন্য নাগরিক সুজনের সম্পাদক ড. বদিউল আলম মজুমদার। তিনি বলেছেন, দেশে কার্যত মতলববাজির উন্নয়ন চলছে। যা করা উচিত নয়, তা করা হচ্ছে। যেগুলো করার কথা নয়, সেগুলো করা হচ্ছে। চাচা-ভাতিজাতন্ত্র, মামা-ভাগিনাতন্ত্রে একটি গোষ্ঠী বিশেষ সুযোগ-সুবিধা পাচ্ছে। জনগণকে দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে। দেশে চার কোটির বেশি মানুষ নিম্নবিত্ত। জ্বালানিসংকটে তারা আরও বিপদে পড়বেন। গতকাল ‘বিদ্যুৎ ও জ্বালানিসংকট : নাগরিক ভাবন’ শীর্ষক এক আলোচনা অনুষ্ঠানে তিনি এ মন্তব্য করেন। জাতীয় প্রেসক্লাবে এ আলোচনার আয়োজন করে সুশাসনের জন্য নাগরিক (সুজন)।

এ সময় সরকার ইচ্ছে করেই দেশীয় গ্যাস উত্তোলনে নজর দেয়নি বলে জ্বালানি খাতের বিশেষজ্ঞরা অভিযোগ তোলেন। তারা বলছেন, দেশের গ্যাসক্ষেত্রে প্রচুর সম্ভাবনা থাকার পরও উত্তোলন না করে একটি গোষ্ঠীকে লুটপাটের সুযোগ করে দেওয়া হয়েছে।

অনুষ্ঠানে মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূতত্ত্ব বিভাগের অধ্যাপক বদরূল ইমাম। প্রবন্ধে বলা হয়, দেশের নিজস্ব জ্বালানির অনুসন্ধান ও উত্তোলন না করা এবং বিদেশি জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতা বাড়ানো জ্বালানিসংকটের কারণ। ২০১৭ সাল থেকে দেশের গ্যাসক্ষেত্রগুলো থেকে বার্ষিক গ্যাস উৎপাদন ও সরবরাহ কমছে। অতি গ্যাস সম্ভাবনাময় দেশ হওয়ার পরও বিশ্বের অন্যান্য গ্যাসধারক বেসিনের থেকে বাংলাদেশে অনুসন্ধান কূপের সংখ্যা অনেক কম।

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের সাবেক অধ্যাপক আনু মুহাম্মদ বলেন, জ্বালানি ও বিদ্যুৎ খাতে শক্তিশালী ভিত্তি তৈরি না হলে অর্থনৈতিক উন্নয়ন ও রাজনৈতিক স্থিতিশীলতায় সংকট তৈরি হয়। দেশের জ্বালানিসংকট আকস্মিক নয়। এখন যা ঘটছে, তা তৈরি হওয়ার মতো পরিকল্পনাই নেওয়া হয়েছিল। এ সংকটের কারণে একটি সুবিধাভোগী গোষ্ঠী লাভবান হচ্ছে। গত ১২ বছরে বিদ্যুৎ খাতে ভর্তুকির বড় অংশ গেছে কয়েকটি বেসরকারি বিদ্যুৎকেন্দ্রে, যারা উৎপাদন করেনি, তাদের ভাড়া দিতে। এ সময়ে ৯০ হাজার কোটি টাকা ভাড়া দেওয়া হয়েছে। দেশি-বিদেশি ১২টি কোম্পানিকে দেওয়া হয়েছে ৬০ হাজার কোটি টাকা।

জ্বালানি বিশেষজ্ঞ অধ্যাপক বদরূল ইমাম বলেন, দেশীয় গ্যাস খাতে সম্ভাবনা প্রচুর। গ্যাস অনুসন্ধান না করে হাত গুটিয়ে বসে থাকাতেই আজকের পরিস্থিতি। ২০১২ সালে সমুদ্রসীমা বিরোধ নিষ্পত্তি হওয়ার পর মিয়ানমারের সমুদ্রবক্ষে অনেক গ্যাসক্ষেত্র আবিষ্কৃত হলেও বাংলাদেশে তা হয়নি।

জ্বালানিবিশেষজ্ঞ বিডি রহমতউল্লাহ বলেন, ১৯৯৫ সাল থেকেই বলা হচ্ছে, বছরে মোট জ্বালানি চাহিদার ৫ শতাংশ মেটানো হবে নবায়নযোগ্য জ্বালানি থেকে। কিন্তু এ বিষয়ে কোনো ধরনের উদ্যোগ নেওয়া হয় না।
জ্বালানিসংকটকে পুঁজি করে সরকার পকেট ভরছে মন্তব্য করেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়ক জোনায়েদ সাকি বলেন, আগে বলত খাম্বা আছে, বিদ্যুৎ নেই। এখন তো বিদ্যুতের কারখানা আছে, জ্বালানি ও সঞ্চালন নেই। সরকার এমন পরিস্থিতি তৈরি করেছে, জ্বালানিসংকট নিয়ে প্রশ্ন তোলারও সুযোগ নেই। ন্যূনতম জবাবদিহি নেই।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন