এই অসুখে অস্থিসন্ধিতে প্রদাহ হয়। এছাড়াও এই সাথে গলাব্যথা, জ্বর এবং শরীওে বিশেষ এক ধরনের ফুসফুড়ি থাকে। স্যামন মাছের রঙের মত ফুসকুড়ি স্টিল’স ডিজিজে পাওয়া যায়। অসুখটির প্রথম পর্যায়ে জ্বর, গলাব্যথা এবং ফুসকুড়ি থাকে। কয়েক সপ্তাহ পর অস্থিসন্ধিতে ব্যথা শুরু হয়।
স্টিল’স ডিজিজ শিশুদের বেশি হয়। তবে বড়দেরও হতে পারে। স্টিল’স ডিজিজ কেন হয় তা আজো বিজ্ঞানীরা বের করতে পারেননি। জীবাণুর সংক্রমণের ফলে এমন হয় বলে কেউ কেউ প্রমাণ পেয়েছেন। কারো শুধু একবারই অসুখটি হয়। অনেকের আবার দীর্ঘমেয়াদে অসুখটি থাকতে পারে। কারো ক্ষেত্রে একবার হয়ে ভালো হয়ে আবার হয়।
স্টিল’স ডিজিজে বিভিন্ন উপসর্গ দেখা যায়। এসব উপসর্গের মধ্যে আছে-
১। গলা ব্যথা। ২। জ্বর। ৩। ফুসকুড়ি। ৪। অস্থিসন্ধিতে ব্যথা। ৫। মাংসপেশীতে ব্যথা। ৬। চোখে দেখতে সমস্যা। ৭। বাচ্চাদের বৃদ্ধি কমে যাওয়া।
বাচ্চাদের স্টিল’স ডিজিজ থেকে চোখ অন্ধ হয়ে যেতে পারে। এছাড়া অস্থিসন্ধি নষ্ট হয়ে যেতে পারে স্টিল’স ডিজিজ হলে। হার্টের সমস্যা যেমন পেরিকার্ডইটিস এবং মায়োকার্ডাইটিস পর্যন্ত হতে পারে এ রোগ থেকে।
পরীক্ষা: কোন নির্দিষ্ট একটা পরীক্ষা করে স্টিল’স ডিজিজ ডায়াগনসিস সম্ভব নয়। অস্থিসন্ধির এক্সরে এবং রক্ত পরীক্ষা করা হয়। ইতিহাস, শারীরিক পরীক্ষা এবং রক্ত ও এক্সরের রিপোর্ট সবকিছু মিলে স্টিল’স ডিজিজ ডায়াগনসিস করা হয়।
চিকিৎসা: স্টিল’স ডিজিজের চিকিৎসায় ব্যথানাশক এনএসএইড ব্যবহার করা হয়। আইবুপ্রোফেন এবং ন্যাপ্রোক্সেন ভাল কাজ করে। অনেক সময় প্রয়োজনে স্টেরয়েড ব্যবহার করা হয়। তবে স্টেরয়েডের পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া অনেক। অস্থিসন্ধির ভেতরে কখনো কখনো স্টেরয়েড ইনজেকশনও দেয়া হয়। এছাড়া মিথোট্রেক্সেট এবং মুল্যবান টিএনএফ-আলফা ব্যবহার করা হয়। কিছু গবেষণায় দেখা গেছে ওমেগা-৩ ফ্যাটি এসিড এবং ব্যথানাশক কক্সিব গুলোর ভূমিকা আছে। ফিজিওয়েরাপী স্টিল’স ডিজিজে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে।
স্টিল’স আমাদের দেশে বিরল তবে মাঝে মাঝে পাওয়া যায়। এ রোগ হলে চিকিৎসকের পরামর্শমত চিকিৎসা চলা উচিত। প্রয়োজনীয় ব্যায়াম করলে অস্থিসন্ধির ব্যথা এবং অসাড়তা কমে যায়। চিকিৎসকের ব্যবস্থাপত্রে চললে এ রোগের জটিলতা থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়।
ডা. মো. ফজলুল কবির পাভেল
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন