বৃহস্পতিবার ২১ নভেম্বর ২০২৪, ০৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৮ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

স্বাস্থ্য

এট্রোপিক রাইনাইটিস বা নাকের ক্ষয়রোগ

প্রকাশের সময় : ১৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৬, ১২:০০ এএম

এট্রোপিক রাইনাইটিস বা নাকের ক্ষয়রোগ
এট্রোপিক রাইনাইটিস এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী ক্ষয়রোগ যাতে নাকের ঝিল্লী, ঝিল্লীর নিচের অংশ বা তার আশেপাশের হাড় ক্ষয় হয়ে যায়।
এ ক্ষয়রোগের কারণ হলো নাকের রক্তনালী এবং তার আশেপাশের নালীর প্রদাহ যা রক্তসরবরাহে বাধা দেয়। এটি একটি বিশেষ ধরনের রোগ যা বিলম্বে নির্ণয় হয় কারণ এটা একটা ব্যতিক্রমী রোগ এবং রোগী প্রথমে এই সমস্যা নিয়ে জেনারেল ফিজিসিয়ানের কাছে যায়।
কাদের বেশি হয়?
এই রোগটি সাধারণত মহিলাদের বেশি হয়।
কারণসমূহ :
১। বংশগত
২। অপুষ্টি এবং পুষ্টিহীনতা
৩। নাক এবং সাইনাসের দীর্ঘমেয়াদী প্রদাহ
৪। রক্তনালী প্রদাহ
৫। হরমোনজনিত
৬। নাকের হাড়ের অসামঞ্জস্য
৭। ইমিউনোলজিক্যাল
উপসর্গ এবং চিহ্নসমূহ :
১। নাক দিয়ে দুর্গন্ধ বের হয় যা রোগী নিজে বুঝতে পারে না কিন্তু তার আশেপাশের লোকজন দুর্গন্ধ পায়।
২। নাক বন্ধ থাকে যা নাকের একদিকে বা দু’দিকেই হতে পারে এবং এক ধরনের সবুজ, দুর্গন্ধযুক্ত রস নিঃসরণ করে।
৩। মাঝে মাঝে নাক দিয়ে রক্তপাত হতে পারে।
৪। মাথা ব্যথা, নাক ও গলা শুষ্ক হয়ে যেতে পারে।
৫। নাকের পরীক্ষায় দেখা যায়, নাকের গহ্বর বেশ বড় এবং নাকের ভিতরে সবুজ আস্তরণ বা অনেক ক্রাস্ট এ পরিপূর্ণ।
৬। এছাড়া নাকের আশেপাশের মাংসগুলো শুকিয়ে ছোট বা ক্ষয় হয়ে যায়।
৭। নাক দিয়ে দুর্গন্ধ বের হয় বলে রোগীর বিভিন্ন ধরনের সামাজিক সমস্যা দেখা দিতে পারে।
পরীক্ষা-নিরীক্ষা:
১। নাক ও সাইনাসের এক্স-রে
২। রক্ত পরীক্ষা সমূহ-রক্তের রুটিন পরীক্ষা
ঠউজখ (ভি, ডি, আর, এল)
ঞচঐঅ (টি, পি, এইচ, এ)
রক্তের গ্লুকোজ
এবং অন্যান্য
৩। এইচ, আই, ভি
৪। নাক ও সাইনাসের সিটি স্ক্যান, নাকের নিঃসৃত রসের কালচার ও সেনসিভিটি পরীক্ষাগুলো উন্নত দেশে নিয়মিত করা হয় কিন্তু আমাদের দেশের আর্থসামাজিক প্রেক্ষাপটে পরীক্ষাগুলো নিয়মিত ভিত্তিতে করা হয় না।
চিকিৎসা :
প্রধানত ওষুধের মাধ্যমেই চিকিৎসা করা হয়, মাঝে মাঝে এ রোগের জন্য অপারেশনেরও প্রয়োজন হতে পারে যদি তা ওষুধের মাধ্যমে না সারে।
ওষুধের মাধ্যমে চিকিৎসা :
১। গ্লিসারিনের সাথে শতকরা ২৫ ভাগ গ্লুকোজের মিশ্রণ প্রতিদিন চার ফোঁটা করে দুইনাকের ছিদ্রে দিনে ৩-৪ বার করে দীর্ঘমেয়াদে দেয়া হয়।
২। অ্যালকালাইন দ্রবণ দিয়ে নাকের গহ্বর নিয়মিত পরিষ্কার করা হয়।
৩। অ্যান্টিবায়োটিক প্রয়োজন হতে পারে যখন ব্যাকটেরিয়া দ্বারা সংক্রমিত হয়।
৪। এছাড়া পরিপূরক হিসেবে ভিটামিন দেয়া যেতে পারে।
৫। উপরোক্ত চিকিৎসা ছাড়া ও অন্যান্য চিকিৎসা রয়েছে।
অস্ত্রোপ্রচারের মাধ্যমে চিকিৎসা :
১। ইয়াংগস অপারেশন (ণড়ঁহম’ং ঙঢ়বৎধঃরড়হ)
২। আরো অন্যান্য সার্জারি আছে।
রোগের পরিনতি :
এটি একটি দীর্ঘমেয়াদী রোগ যা পুরোপুরি সারে না, রোগী মানসিক হতাশায় ভোগে। এজন্য রোগীকে এ রোগের বিস্তারিত বোঝাতে হবে। কিন্তু উপযুক্ত চিকিৎসার মাধ্যমে নিয়ন্ত্রণে রাখা যায়। এবং রোগী স্বাভাবিক জীবন-যাপন করতে পারে। সবচেয়ে ভালো চিকিৎসা হলো গ্লিসারিনে শতকরা ২৫ ভাগ গ্লুকোজের সারা বছর ব্যবহার করা এতে রোগটি নিয়ন্ত্রণে থাকে। একজন নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞের অধীনে নিয়মিত চেকআপে থাকলে ভাল হয়।
ষ অধ্যাপক ডাঃ এম আলমগীর চৌধুরী
নাক, কান, গলা বিশেষজ্ঞ সার্জন, বিভাগীয় প্রধান, ইএনটি বিভাগ, আনোয়ার খান মডার্ণ মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল, রোড ৮, ধানমন্ডি, ঢাকা, ০১৯১৯ ২২২ ১৮২, ই-মেইল : ধষধসমরৎ.পযড়ফিযঁৎু০৭@মসধরষ.পড়স

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন