দেশের চা শ্রমিকদের চলমান আন্দোলনের মধ্যেই ১৪৫ টাকা মজুরির ঘোষণা আসে প্রধানমন্ত্রীর দপ্তর থেকে। তবে সরকার ঘোষিত ১৪৫ টাকা মজুরির এই প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে ধর্মঘট চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছে বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়ন। শনিবার রাতে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গল চৌমহনা চত্বরে কয়েকটি বাগানের শ্রমিকরা অবস্থান নিয়ে ঢাকা-সিলেট আঞ্চলিক সড়ক অবরোধ করে দৈনিক মজুরি ১৪৫ টাকা বাড়ানোর প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে চা শ্রমিকরা।
এর আগে শনিবার বিকেল ৪টার দিকে মৌলভীবাজারের শ্রীমঙ্গলে বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের কার্যালয়ে আন্দোলনরত চা শ্রমিকদের নিয়ে বৈঠকে বসেন মৌলভীবাজার-৪ আসনের সংসদ সদস্য মো. আবদুস শহীদ, শ্রম অধিদপ্তরের মহাপরিচালক খালেদ মামুন চৌধুরী’সহ মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, সিলেট ও চট্টগ্রামের জেলা প্রশাসকের প্রতিনিধিসহ কর্মকর্তাবৃন্দ।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের সাংগঠনিক সম্পাদক বিজয় হাজরা বলেন, ‘আমাদের সেক্রেটারিসহ অন্যান্য শ্রমিক নেতাসহ সাধারন শ্রমিকরা এই প্রস্তাব মেনে নেয়নি। তাই আমরা প্রধানমন্ত্রীকে এই প্রস্তাব পুর্নবিবেচনা জন্য আবেদন জানাচ্ছি। আমাদের শ্রমিক ধর্মঘট আগের মতোই চলবে।’
এদিকে চা শ্রমিকদের ১৪৫ টাকা মজুরি প্রত্যাখ্যান করে শনিবার দুপুর ১১টার দিকে হবিগঞ্জের বাহুবলে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক অবরোধ করেছেন চা শ্রমিকরা। এ সময় মহাসড়কের অবস্থান করে বাহুবলের ফয়জাবাদ, রশীদপুর, বৃন্দাবন ও কামাইছড়াসহ পাঁচটি বাগানের হাজার হাজার চা শ্রমিক। যার ফলে মহাসড়কের দু’পাশে শত শত যানবাহন আটকা পড়ে। সৃষ্টি হয় তীব্র যানজটের। খবর পেয়ে স্থানীয় সংসদ সদস্য শাহ নওয়াজ গাজী মিলাদ, বাহুবল উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শারমিন ফাতেমাসহ প্রশাসনের কর্মকর্তা ও স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা ঘটনাস্থলে পৌঁছে শ্রমিকদের শান্ত করেন। এছাড়াও বিষয়টি সরকারের উচ্চ পর্যায়ে পৌঁছে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিলে দুপুর ২টার দিকে অবরোধ প্রত্যাহার করেন চা শ্রমিকরা।
বাংলাদেশ চা শ্রমিক ইউনিয়নের (ভারপ্রাপ্ত) সাধারন সম্পাদক নিপেন পাল বলেন, ‘আমাদের ধর্মঘট চলমান থাকবে। প্রশাসনের সঙ্গে ভেতরে আমরা একমত হলেও বাইরে বিভিন্ন ভ্যালির শ্রমিক নেতাসহ সাধারন শ্রমিকরা তা মানেনি। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে চা শ্রমিকদের সঙ্গে আছি। সাধারন চা শ্রমিকরা সরকারের বেঁধে দেওয়া এই ২৫ টাকা মজুরি বৃদ্ধির সিদ্ধান্ত মেনে নেয়নি। শ্রমিকরা আন্দোলন করলে আমি তাঁদের সঙ্গে আছি।’
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন