বঙ্গোপসাগরে ঝড়ের কবলে পড়ে সুন্দরবনে আশ্রয় নেয়া জেলেদের কাছ থেকে জোরপূর্বক চাঁদা আদায় করেছে সুপতি স্টেশনের বনরক্ষীরা। ট্রলারপ্রতি ৫ হাজার করে বিকাশের মাধ্যমে ওই চাঁদার টাকা আদায় করেন তারা। এমনকি স্টেশন কর্মকর্তার পা জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করেও কেউ রেহাই পায়নি বলে জেলেদের অভিযোগ।
ভূক্তোভোগী জেলেরা জানায়, গত শুক্রবার বিকেলে নিম্নচাপের প্রভাবে বঙ্গোপসাগরে ঝড় শুরু হলে ২৮/৩০টি মাছধরা ট্রলার পূর্ব সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের সুপতি স্টেশনের ঘাটে আশ্রয় নেয়। এসময় স্টেশন কর্মকর্তা মো. সামসুল আরেফিন সুন্দরবনে অবৈধ প্রবেশের অভিযোগ এনে জেলেদের আটক করে মামলা দেয়ার হুমকি দেন। পরে মামলা থেকে রেহাই দিতে প্রতিটি ট্রলার থেকে ৫ হাজার টাকা জোরপূর্বক আদায় করে নেন। তাৎক্ষনিক জেলেদের কাছে টাকা না থাকায় তাদের মহাজনদের সাথে যোগাযোগ করে বনরক্ষীদের মোবাইল ফোনে বিকাশের মাধ্যমে টাকা পাঠিয়ে দিতে বাধ্য হন। বরগুনা জেলার পাথরঘাটা উপজেলার পদ্মা গ্রামের আজিজুল ইসলাম, রফিকুল ইসলাম, আবুল মাঝি, বাদশা মাঝি, হারিটানা গ্রামের ইসমাইল মাঝি, আ. হক মাঝি, চরলাঠিমারা গ্রামের জাকির মাঝি জানান, সুপতির বনরক্ষীরা বিভিন্ন প্রকার ভয়ভীতি দেখিয়ে বিকাশের মাধ্যমে প্রত্যেকের কাছ থেকে ৫ হাজার টাকা চাঁদা আদায় করেছেন। এসময় ওই ঘাটে অবস্থান করা ২৮/৩০টি মাছধরা ট্রলার থেকে তারা এভাবে চাঁদা আদায় করে নেয়। এমনকি ঝড়ে ট্রলার ডুবিতে নিখোঁজ হওয়া পিরোজপুরের তেলিখালি এলাকার একটি ট্রলার সুপতি স্টেশনে আশ্রয় নিলে বনরক্ষীরা তাদের কাছ থেকে ১০টি ইলিশ মাছ ও চার হাজার টাকা জোরপূর্বক আদায় করে নেন। এসময় এক জেলে টাকা দিতে না পারায় তাকে বেধড়ক মারধর করা হয়েছে বলে তারা জানান। অপরদিকে কটকা অভয়ারণ্য কেন্দ্রের বনরক্ষীরা সেখানে আশ্রয় নেয়া হাতিয়া এলাকার এফবি রাব্বি ও ভোলার এফবি ওমরসহ ১৩টি ফিসিং ট্রলারের জেলেদের কাছ থেকে তিন হাজার করে বিকাশের মাধ্যমে চাঁদা আদায় করেছে বলে জেলেরা অভিযোগে জানান। এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সুপতি স্টেশন কর্মকর্তা মো. সামসুল আরেফিন জানান, ঝড়ের কারণে ওই দিন আমরা টহলেও যাইনি এবং কোন জেলেদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করা হয়নি।
শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, বিষয়টি তদন্ত করে সত্যতা পাওয়া গেলে জড়িতদের বিরুদ্ধে বিভাগীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন