দিনাজপুরের চিরিরবন্দর উপজেলার আলোকডিহি ইউনিয়নের আলীপাড়ার রিক্সাচালক পরিবারের দ্বিতীয় সন্তান সুমাইয়ার জীবন কাহিনী গ্রামের সকল শ্রেনীর নারী-পুরুষকে বিস্মিত করে তুলেছে। বাড়ি থেকে দুই কিলোমিটার দূরে আলোকডিহী প্রাথমিক বিদ্যালয়ের তৃতীয় শ্রেনীর ছাত্রী সে। এক পায়ে লাফিয়ে লাফিয়ে প্রতিদিন এই রাস্তা পেরিয়ে স্কুলে যায়। বিকলাঙ্গতার কারণে নিয়মিত স্কুলেও যেতে পারে না।
তার ক্লাশ শিক্ষিকা জানালেন, পড়ালেখায় সে খুব মনোযোগী। প্রধান শিক্ষক বললেন, স্কুল থেকে যতটুকু সম্ভব বই খাতা দিয়ে সাহায্য করা হয়। পড়ালেখার প্রতি আগ্রহ দেখে এলাকাবাসী হতবম্ব হয়ে যায়। তার আগ্রহ এখন গ্রামের গরীব পরিবারের সন্তান ও অভিভাবকদের অনুপ্রেরণা হয়ে দাঁড়িয়েছে।
সুমাইয়ার মা জানান, দুই বছর বয়সে একটি দুঘর্টনায় একটি পা বেঁকে যায়। পাটি এখন ডান পা থেকে ছোট হয়ে গেছে। ছোট হয়ে যাওয়ায় দাঁড়ানো অবস্থায় পা’টি আর মাটি স্পর্শ করতে পারে না। ফলে তাকে এক পায়ে লাফিয়ে লাফিয়ে চলতে হয়। আর এভাবেই সে স্কুলে যায় এবং বাসাতে মাকেও সাহায্য করে।
দুর্ঘটনার পর প্রথমে স্থানীয়ভাবে এবং রংপুরে ডাক্তার দেখিয়েছে। টাকার অভাবে নিয়মিত চিকিৎসা করা সম্ভব হচ্ছে না। যখন টাকা জমা হয় তখন ডাক্তার দেখানো হয়। মেয়েটির বাবা রিক্সাচালক শফিকুল জানান আট বছর ধরে চিকিৎসা করিয়েছি। কোনো ফল পাইনি। অর্থপেডিক্স চিকিৎসকরা বলেছেন, তিন থেকে পাঁচ লাখ টাকা লাগবে মেয়ের পা ভালো করতে। কিন্তু আমি কোথায় পাব এত টাকা। সুমাইয়ার চিকিৎসায় হৃদয়বান মানুষেরা এগিয়ে আসলে হয়তো সে তার স্বপ্ন পূরণ করতে পারবে। পারবে গরীব পিতা-মাতার সংসারে হাসি ফোটাতে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন