স্টাফ রিপোর্টার : নতুন পদ সৃজন করে প্রশিক্ষিত ও দক্ষ দুই সহশ্রাধিক স্যানিটারি ইন্সপেক্টরদের কাজে লাগিয়ে খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধের আহ্বান জানিয়েছেন সংসদ সদস্যসহ বিভিন্ন শ্রেণি পেশার প্রতিনিধিরা। জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি এবং বিশ্ব খাদ্য সংস্থা ও বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার গাইডলাইন অনুসারে নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষকে কাজ করার আহ্বান জানিয়ে তারা বলেছেন, গাইড লাইন অনুসরণ করলে খাদ্যে ভেজাল দূর হবে এবং জনস্বাস্থ্যেরও উন্নয়ন হবে। গতকাল জাতীয় প্রেসক্লাবে ‘খাদ্যে ভেজাল নিয়ন্ত্রণ ও রোগ প্রতিরোধে সরকারের করণীয়’ শীর্ষক এক সেমিনারে বক্তারা এসব কথা বলেন। বাংলাদেশ স্যানিটারি ইন্সপেক্টরশিপ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন ও বাংলাদেশ পাবলিক হেলথ অ্যাসোসিয়েশনের (বিপিএইচএ) যৌথ উদ্যোগে আয়োজিত এ সেমিনারে সভাপতিত্ব করেন বিপিএইচএ’র সভাপতি ড. আবুল কাশেম। স্যানিটারি ইন্সপেক্টরশিপ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি আবুল ফাত্তাহ জুনায়েদের পরিচালনায় সেমিনারে মূল প্রবন্ধ পাঠ করেন অ্যাসোসিয়েশনের উপদেষ্টা এম খসরু মিয়া চৌধুরী। প্রধান অতিথি ছিলেন সংসদ সদস্য প্রফেসর গোলাম মোস্তফা। আলোচনায় অংশ নেন এলায়েন্স ফর কনজ্যুমার রাইটস বাংলাদেশের বোর্ড অব ট্রাস্টি এম রফিকুল ইসলাম মিলন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ওষুধ প্রযুক্তি বিভাগের প্রফেসর ফিরোজ আহমদ, ব্র্যাক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রফেসর ড. কামাল আহমদ, পেশাজীবী নেতা হারুন অর রশীদ, আমিনুর রহমান, ফারহানা উর্মি, আবু জিহাদ, মোমিনুর রহমান প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধের জন্য দুই হাজার ২০০ স্যানেটারি ইন্সপেক্টর ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করে তিন বছরের বেশি সময় ধরে বেকার বসে আছেন। কিন্তু স্বাস্থ্য ও খাদ্য মন্ত্রণালয়ের রশি টানাটানির কারণে তাদের নিয়োগ দেয়া হচ্ছে না। অথচ সরকারি অর্থ ব্যয় করে এই দুই সহশ্রাধিক লোককে প্রশিক্ষণ দেয়া হয়েছে। শুধু তাই নয়, সরকারি অর্থে প্রতি বছর সাড়ে তিন শত স্যানিটারি ইন্সপেক্টর ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করছেন। কিন্তু তাদরেকে কাজে লাগানে হচ্ছে না।
বক্তারা বলেন, খাদ্যে ভেজাল প্রতিরোধে গঠিত নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এসব প্রশিক্ষিত ও দক্ষ জনবলকে কাজে লাগিয়ে খাদ্যের ভেজাল প্রতিরোধের কাজে লাগাতে পারে। তারা বলেন, ডিপ্লোমা কোর্স সম্পন্ন করা দুই সহশ্রাধিক স্যানিটারি ইন্সেপেক্টর দীর্ঘ দিন ধরে দাবি জানিয়ে আসলেও সরকারের নীতিনির্ধারকরা এ ব্যাপারে কোনো সিদ্ধান্তই নিচ্ছে না। যার ফলে গ্রামেগঞ্জে, হাট-বাজারে ভেজাল মিশ্রিত খাদ্য অবাধে বিক্রি হলেও নিরাপদ খাদ্য কর্তৃপক্ষ এখন পর্যন্ত ঢাল-তলোয়ার বিহীন নিধিরাম সর্দার।
সেমিনার থেকে স্যানিটারি ইন্সপেক্টরশিপ ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশন এবং বিপিএইচএ সরকারের কাছে সাত দফা দাবি উত্থাপন করেছে। দাবিগুলো হলোÑ দেশের প্রতিটি ইউনিয়নে একজন করে নিরাপদ খাদ্য পরিদর্শক বা স্যানিটারি ইন্সপেক্টর পদ সৃজন করে নিয়োগ দেয়া; স্যানিটারি ইন্সপেক্টরশিপ ডিপ্লোমাধারী ২২শ’ স্বাস্থ্য সহকারীকে ৯ হাজার ৩শ’ টাকার স্থলে উচ্চতর ডিপ্লোমা স্কেল ১২ হাজার ৫শ’ টাকা হারে বেতন প্রদান; প্রিভেন্টিভ হেলথ ওয়ার্কারদের নিয়োগ বিধিতে নন-মেডিকেল না বলে নন-ক্লিনিক্যাল বলা; জাতীয় স্বাস্থ্যনীতি ২০১১, ডব্লিউএইচও ও এফএও’র গাইড লাইন এবং ভ্যাকসিনেশন আইন ১৮৮০-এর পূর্ণ বাস্তবায়ন; জনস্বাস্থ্যের উন্নয়নে প্রস্তাবিত আইনকানুন ও বিধিমালা প্রণয়নে গঠিত কমিটিতে বিপিএইএ’র প্রতিনিধিদের অন্তর্ভূক্ত করা; খাদ্য-স্বাস্থ্য ও প্রিভেন্টিভ হেলথ উন্নয়ন কাজের সমন্বয়ের জন্য জনপ্রশাসন মন্ত্রণালয় কর্তৃক মনিটরিং সেল গঠন করা এবং প্রিভেন্টিভ হেলথ সার্ভিসের জনবল বাড়ানোসহ আধুনিকায়ণ ও স্বাস্থ্যসেবার মানন্নোয়নে স্বাস্থ্য সহকারী ও সিএইচপি পদে হেলথ টেকনোলজিস্ট নিয়োগের ব্যবস্থা চালু করা।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন