শনিবার ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ২৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

সারা বাংলার খবর

প্রধানমন্ত্রী’র আশ্বাসে চা শ্রমিকরা আগামীকাল কাজে যোগ দিবে

চা শ্রমিকদের আন্দোলন সংগ্রামের ১৫ দিন

শ্রীমঙ্গল (মৌলভীবাজার) সংবাদদাতা | প্রকাশের সময় : ২৩ আগস্ট, ২০২২, ৬:৩৫ পিএম

আজ ১৫তম দিনে চলছে চা শ্রমিকদের ৩শ টাকা মজুরি দাবির আন্দোলন। মঙ্গলবার সকাল থেকে সিলেট, মৌলভীবাজার, হবিগঞ্জ, শ্রীমঙ্গল’সহ বিভিন্ন চা বাগানের শ্রমিকরা তাদের নিজ নিজ বাগানের সামনে অবস্থান নিয়ে ধর্মঘট পালন করেন। পরবর্তী কর্মসূচি কিংবা কাজে যোগদানের বিষয়ে কেন্দ্রীয় নেতা ও ভ্যালি প্রধানদের নির্দেশনার অপেক্ষায় চা শ্রমিরা। ৩শ টাকা মজুরির দাবি আদায় হলেই কাজে যোগ দেয়ার কথা জানান তারা। গত সোমবার কয়েকটি বাগানের শ্রমিকরা কাজে যোগ দিলেও মঙ্গলবার তারাও আন্দোলনে অংশ নিয়েছে।

বাংলাদেশ বিশ্বের তিন শতাংশ চা উৎপাদন করে। ২০২১ সালের তথ্য অনুযায়ী বাংলাদেশি চায়ের বাজারের মূল্য প্রায় ৩ হাজার পাঁচশ’ কোটি টাকা। জিডিপিতে এই শিল্পের অবদান প্রায় ১ শতাংশ। আজ চা শ্রমিকদের ধর্মঘটের কারণে প্রতিদিন ২০ কোটি টাকারও বেশি দামের চাপাতা নষ্ট হচ্ছে বলে দাবি চা বাগান মালিকদের।

চা বিশ্লেষকের তথ্য মতে, এই অঞ্চলে প্রথম চা বাগান করার উদ্যোগ নেয়া হয় ১৮২৮ সালে। অবিভক্ত ভারতে চট্টগ্রামের কোদালায় তখনই জমি নেয়া হয়। বর্তমানে চট্টগ্রাম ক্লাব ১৮৪০ সালে সেখানেই পরীক্ষামূলকভাবে রোপণ করা হয় প্রথম চা গাছ। তবে প্রথম বাণিজ্যিক আবাদ শুরু হয় সিলেটে ১৮৫৪ সালে। সে বছর সিলেট শহরের উপকণ্ঠে মালনিছড়া চা বাগান প্রতিষ্ঠিত হয়। বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউটের প্রধান কার্যালয়টিও শ্রীমঙ্গলে অবস্থিত। গবেষণার মাধ্যমে উন্নততর প্রযুক্তি উদ্ভাবন ও প্রয়োগের ধারাবাহিকতার লক্ষ্যেই ১৯৫৭ সালে প্রতিষ্ঠিত হয় বাংলাদেশ চা গবেষণা ইনস্টিটিউট (বিটিআরআই)। আজ সেই চা শ্রমিকরা নিজেদের মজুরি বৃদ্ধির দাবিতে ঐক্যবদ্ধ যে আন্দোলন শুরু করেছিলেন তা এখন বিভক্তির সুর শোনা যাচ্ছে। প্রধানমন্ত্রীর আশ্বাসে আস্থা রেখে স্থানীয় চা শ্রমিক নেতারা আন্দোলন থেকে সরে আসতে চাইলেও কেন্দ্রীয় নেতারা এখন বেঁকে বসেছেন। কিন্তু কেন্দ্রীয় নেতারাই একপর্যায়ে আন্দোলন প্রত্যাহারের ঘোষণা দিয়ে চা শ্রমিকদের কাজে যোগ দেওয়ার আহবান করেন।

এদিকে, স্থানীয় চা শ্রমিক নেতাদের অনেকেই এখন আন্দোলন নিয়ে শঙ্কিত। তারা মনে করছেন, আন্দোলন বিপথগামী হয়ে যাচ্ছে। বাংলাদেশ চা- শ্রমিক ইউনিয়ন বা ভ্যালির নেতাদের আন্দোলনে দেখা না যাওয়ায় সাধারন চা শ্রমিকরা তাদের বিরুদ্ধে ক্ষোভ প্রকাশ করছেন। নারী চা-শ্রমিক সন্ধ্যা রানী ভৌমিক বলেন, ইউনিয়ন ও ভ্যালির নেতারা আমাদের আন্দোলনে নামিয়ে এখন সটকে গেছেন। আজ ১৫ দিন ধরে কাজ বন্ধ রেখে আমরা আন্দোলন করছি।

মঙ্গলবার (২৩ আগস্ট) চা শ্রমিকরা কাজে যোগ দেওয়ার লক্ষে প্রধানমন্ত্রীর বার্তা নিয়ে মৌলভীবাজার জেলা প্রশাসক মীর নাহিদ আহসান, পুলিশ সুপার মোহাম্মদ জাকারিয়া, বিভাগীয় শ্রম দপ্তরের উপ-পরিচালক মো. নাহিদুল ইসলাম’সহ প্রশাসনের কর্মকর্তাবৃন্দ বাগানে বাগানে গিয়ে চা-শ্রমিকদের প্রধানমন্ত্রী মজুরি বৃদ্ধির আশ্বাস দিয়ে কাজে যোগ দেওয়ার আহবান করেন। জেলা প্রশাসনের আহবানে চা বাগানের শ্রমিকরা কাজে যোগ দিয়েছেন।

মাঠ পর্যায়ের একাদিক চা শ্রমিক নেতারা দৈনিক ইনকিলাব’র এই প্রতিবেদককে জানান, বুধবার (২৪ আগস্ট) প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা’র মজুরি বৃদ্ধির আশ^াসে দেশের প্রায় ৭০% চা শ্রমিকরা কাজে যোগ দিবে।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন