বুধবার ২০ নভেম্বর ২০২৪, ০৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১, ১৭ জামাদিউল সানী ১৪৪৬ হিজরি

জাতীয় সংবাদ

তিস্তার ফাইল চাপা রেখে কুশিয়ারা নিয়ে ভারতের আগ্রহ

এক যুগ পর যৌথ নদী কমিশনের বৈঠক শুরু

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৪ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

এক যুগ পর বাংলাদেশ-ভারতের যৌথ নদী কমিশন (জেআরসি) বৈঠকে বসছে। তিস্তার পানি ভাগাভাগি নিয়ে কিছু না হলেও কুশিয়ারার পানি নিয়ে সমঝোতা হচ্ছে। দুই দেশের মধ্যে বহমান ৫৪টি নদীর মধ্যে যে অমীমাংসিত ইস্যু রয়েছে, বৈঠকে সেসবের কোনো কোনোটির সমাধানের ইঙ্গিত রয়েছে। তিস্তার ফাইল চাপা রেখে কুশিয়ারার নিয়ে ভারতের আগ্রহ বেশি। এছাড়া নৌ পথে ভারতে যাত্রীবাহী নৌ জাহাজ চলাচলের বিষয়ও আলোচনায় থাকছে বলে জানা গেছে।

গতকাল মঙ্গলবার নয়াদিল্লিতে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত শুরু হয়েছে। ঢাকার পক্ষে পানিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের সিনিয়র সচিব কবির বিন আনোয়ার নেতৃত্ব দিচ্ছেন। নয়াদিল্লির পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন দেশটির জলশক্তি মন্ত্রণালয়ের সচিব পঙ্কজ কুমার। তবে বহুল প্রতিক্ষীত তিস্তার জট খোলা নিয়ে বাংলাদেশের জন্য কোনো সুসংবাদ থাকছে না। ভারতের দিক থেকে চাওয়া- বৈঠকে তিস্তার ইস্যুটি যেন ওঠানোই না হয়। যদিও ঢাকা বলছে, আলোচনায় তিস্তা ইস্যুতে জোর দেওয়া হবে।

নয়াদিল্লি বলছে, তিস্তা আলোচনায় থাকলে দীর্ঘ বিরতির পর অনুষ্ঠেয় বৈঠকে ভালো কিছু হবে না। অন্যদিকে ঢাকা বলছে, নয়াদিল্লি তিস্তা নিয়ে অনাগ্রহ দেখালেও আলোচনায় তিস্তাতে জোর দেবে ঢাকা। আর এই চাপ কিংবা আলোচনা তিস্তার সুরাহা না হওয়া পর্যন্ত জিইয়ে রাখা হবে। তবে এবারের জেআরসিতে তিস্তা ইস্যুতে অগ্রগতি হচ্ছে না বলেই ধরে নিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা। জেআরসি ও বাংলাদেশের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির আমন্ত্রণে সেপ্টেম্বরের প্রথম সপ্তাহে বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নয়াদিল্লি সফরের কথা রয়েছে। ওই বৈঠককে সামনে রেখে জেআরসিতে কুশিয়ারা নদীর বিষয়ে সমাধানে পৌঁছাতে চায় ঢাকা। প্রধানমন্ত্রীর সফরে আনুষ্ঠানিকভাবে সমঝোতা স্মারক (এমওইউ) সইয়ের লক্ষ্য নির্ধারণ করা হয়েছে। আর এই সমঝোতা স্মারকের আলোকে বাংলাদেশ কুশিয়ারা নদীর পানি রহিমপুর খাল দিয়ে কৃষিকাজে ব্যবহার শুরু করার পর ভারতকে প্রতিদিন ফেনী নদীর ১.৮২ কিউসেক পানি দেবে। ২০১৯ সালে দু’দেশের মধ্যে স্বাক্ষরিত সমঝোতা স্মারক অনুযায়ী, ফেনী নদী থেকে ১.৮২ কিউসেক পানি ত্রিপুরার সাব্রুম শহরে সরবরাহ করা হবে, যাতে সেখানে পানীয় জলের প্রয়োজন মেটানো যায়।

গঙ্গা নদীর ওপর অবকাঠামো নির্মাণ এবং বছর চারেক পরে শেষ হতে যাওয়া গঙ্গা পানিবন্টন চুক্তির মেয়াদ সময়ভিত্তিক না করার বিষয়েও আলোচনা করবে ঢাকা। অন্যদিকে ছয়টি অভিন্ন নদী নিয়ে আলোচনা হবে। আর নয়াদিল্লির পক্ষ থেকে এ ব্যাপারে গুরত্ব দেওয়া হবে বলে ইঙ্গিত রয়েছে। বৈঠকে দুদেশের অভিন্ন ৫৪টি নদী নিয়ে অমীমাংসিত ইস্যু কুশিয়ারার পানিবণ্টন, মনু, ধরলা, খোয়াই, গোমতী, মুহুরী ও দুধকুমার, গঙ্গা চুক্তির নবায়ন ও তিস্তা নিয়ে আলোচনা হতে পারে। এছাড়া চলতি বর্ষা মৌসুমে দুদেশের অভিন্ন নদীর পানিবৃদ্ধি ও বন্যা প্রসঙ্গে আলোচনা হতে পারে। আগামীকাল বিরতি দিয়ে বৃহস্পতিবার মন্ত্রী পর্যায়ে এই বৈঠক হবে। ওই দিন বাংলাদেশের পক্ষে পানিসম্পদ প্রতিমন্ত্রী জাহিদ ফারুক এবং ভারতের পক্ষে নেতৃত্ব দেবেন দেশটির জলশক্তিমন্ত্রী গজেন্দ্র সিং শেখাওয়াত। এই বৈঠকেও তিস্তা চুক্তি হওয়ার সম্ভাবনা নেই। যোগাযোগ করা হলে বাংলাদেশে জেআরসি সদস্য মাহমুদুর রহমান বলেন, তিস্তা পানিবণ্টন চুক্তি সংক্রান্ত নথিপত্র আমরা ২০১০ সালে সম্পন্ন করে রেখেছি। আমার এখন সইয়ের অপেক্ষা করছি।

বাংলাদেশ ও ভারতের মধ্যে বিভিন্ন নদীর জলসম্পদ বণ্টন, সেচ এবং বন্যা ও এই জাতীয় প্রাকৃতিক দুর্যোগ যৌথভাবে মোকাবিলা করতে ১৯৭২ সালের ১৯ মার্চ ভারতের তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী ইন্দিরা গান্ধী ও বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের মধ্যে সমঝোতার মধ্যে দিয়ে গঠিত হয় যৌথ নদী কমিশন (জেআরসি)। সবশেষ ২০১০ সালে জেআরসি বৈঠক হয়েছিল। ##

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন