রাতে উদ্ধার করা হয়েছে ৮০ কেজি হরিণের গোস্ত। কিন্তু সকালে হয়ে গেলো মাত্র ৭ কেজি। এমনকি গোস্ত উদ্ধারের কোনো ছবিও তুলে রাখতে পারেনি তারা। হরিণের গোস্ত উদ্ধার নিয়ে শরণখোলার বনরক্ষীদের এমন লুকোচুরিতে এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে। এলাকাবাসী জানান, গত মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আওতাধীন ভোলা টহল ফাঁড়ির রায়বাঘিনী খালে অভিযান চালায় বনরক্ষীরা। এসময় একটি ডিঙ্গি নৌকায় রাখা বস্তা ভর্তি প্রায় ৮০ কেজি হরিণের গোস্ত ও এক বোতল রিপকড কীটনাশকসহ ৮০ কেজি চিংড়ি জব্দ করেন তারা। এসময় দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলিও ছোড়া হয়। তবে কোন শিকারীকে আটক করতে পারেনি বনরক্ষীরা। কিন্তু সকালে জব্দ তালিকায় মাত্র ৭ কেজি হরিণের গোস্ত ও ২০ কেজি চিংড়ি দেখানো হয়।
অভিযানকালে বনরক্ষীদের সাথে থাকা কমিউনিটি পেট্রোলিং গ্রুপ (সিপিজি)-এর কয়েকজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, হরিণ শিকারের গোপন সংবাদ পেয়ে তারা বনবিভাগের ভোলা টহল ফাঁড়ির বনরক্ষীদের জানান। এরপর রাতে ওই টহল ফাঁড়ির বনরক্ষীদের সাথে নিয়ে তারা অভিযানে যান। অভিযানকালে বনরক্ষীদের উপস্থিতি টের পেয়ে শিকারীরা পালিয়ে যায়। এসময় শিকারীদের ব্যবহৃত ডিঙ্গি নৌকা তল্লাশি করে প্রায় ৮০ কেজি হরিণের ও ৮০ কেজি বিষ দিয়ে ধরা চিংড়িসহ এক বোতল রিপকড কীটনাশক উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা অধিকাংশ মাংস ও চিংড়ি ওই রাতেই ঘটনাস্থলের বনে মাটিচাপা দেয়া হয়েছে। এছাড়া ৫-৭ কেজি মাংস ও ১৫-২০ কেজি চিংড়ি শরণখোলা ষ্টেশনে নিয়ে মাটিচাঁপা দেয় বনরক্ষীরা। তবে এসব বিষয়ে তাদের মুখ খুলতে নিষেধ করেছে বন কর্মকর্তারা। শরণখোলা সুন্দরবন সুরক্ষা পরিষদের সভাপতি নজরুল ইসলাম আকন বলেন, বনরক্ষীদের হরিণের গোস্ত উদ্ধার নিয়ে লুকোচুরি কর্মক্ষেত্রে অস্বচ্ছতার সামিল। বনবিভাগের এসব বিষয়ে আরো স্বচ্ছতার সাথে দায়িত্ব পালনের দাবি জানান তিনি। এ ব্যপারে শরণখোলা স্টেশন কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান আসাদ ৮০ কেজি হরিণের গোস্ত উদ্ধারের বিষয়ে অস্বীকার করে বলেন, রাতে ৫ থেকে ৭ কেজি হরিণের গোস্ত ও ২০ কেজি চিংড়িসহ একটি ডিঙ্গি নৌকা জব্দ করে মামলা দেয়া হয়েছে। বিগত সময় হরিণের গোস্ত উদ্ধারের ছবি তোলা হলেও এ ঘটনার কোন ছবিও তুলতে পারেনি। শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, কে কী বললো সেটা বিষয় নয়।
বন বিভাগ যেটি বলবে সেটি হচ্ছে রেকর্ড। উদ্ধার করা ৭ কেজি হরিণের গোস্ত ও ২০ কেজি চিংড়ি রেঞ্জ অফিস সংলগ্ন বনে কেরোসিন দিয়ে মাটি চাপা দেয়া হয়েছে।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন