পূর্ণ মর্যাদাসহকারে প্রত্যাবাসন ও ন্যয় বিচার দাবী করে গতকাল রোহিঙ্গা ক্যাম্প গুলোতে পালিত হয় 'রোহিঙ্গা গণহত্যার'পাঁচ বছর।
গতকাল ছিল রোহিঙ্গা গণহত্যার পাঁচ বছর পুর্তি। দিবসটি উদযাপন উপলক্ষে উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে ছিল নানা আয়োজন। এউপলক্ষে রোহিঙ্গারা বিভিন্ন ক্যাম্পে মানববন্ধন করে এবং কুতুপালং লম্বাশিয়া ক্যাম্পে বড় সমাবেশের আয়োজন করে।
উখিয়া ও টেকনাফের ৩৪টি ক্যাম্পে আশ্রিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোর অধিকাংশ ক্যাম্পে, তাদের নিজের দেশ মিয়ানমারের সেনাবিহিনী ও মগ কর্তৃক ৫ বছর পূর্বে সংঘটিত অগ্নিসংযোগ, ধর্ষণ, নিপীড়ন, নির্যাতন, গনহত্যা ও জোরপূর্বক বাংলাদেশে ঠেলে দেবার বিচার দাবী ও পূর্ণ নাগরিক অধিকার দিয়ে তাদের দেশ মিয়ানমারে মর্যাদাপূর্ণ প্রত্যাবাসন দাবিতে শান্তিপূর্ণ এ মানববন্ধন ও বিক্ষোভ সমাবেশ করেছে। এ সমাবেশ গুলোতে বিপুল সংখ্যক রোহিঙ্গাদের উপস্হিতি ছিল লক্ষ্য করার মত। তবে রোহিঙ্গা আগমনের ৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে রোহিঙ্গা ক্যাম্পের অভ্যন্তরের ব্যাপক নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদার করা হয়। এছাড়া রোহিঙ্গা ক্যাম্পে নিয়োজিত সেবা সংস্থা গুলোর কার্যক্রম প্রায় বন্ধ ছিল।
সরেজমিনে দেখাযায়,২৫-আগষ্ট বৃহস্পতিবার সকাল দশটার দিকে উখিয়ার লম্বাশিয়া ১/ইষ্ট সংলগ্ন রোহিঙ্গা ক্যাম্পে পূর্ব নির্ধারিত মানববন্ধন ও বড় জন সমাবেশটি অনুষ্ঠিত হয়। তাছাড়া, উখিয়া ও টেকনাফের আরো ১৫টি রোহিঙ্গা ক্যাম্পে মানববন্ধন সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়েছে। 'গো ব্যাক হোম’প্রতিপাদ্য নিয়ে ওই মানববন্ধনে নানা দাবি নিয়ে বক্তব্য রাখেন ক্যাম্প ও ব্লকভিত্তিক কমিউনিটি রোহিঙ্গা নেতারা। এসময় উপস্থিত রোহিঙ্গাদের এক দাবি- ‘উই ওয়ান্ট জাস্টিস’ বলে শ্লোগান দেয়।
খবর নিয়ে জানা যায়, কালকের দিন কথা ছিল সমাবেশ নয়, শ’খানেক রোহিঙ্গারা মানববন্ধন করতে পারবে। কিন্তু নিপীড়নের বিচার দাবিতে স্বতঃস্ফূর্তভাবে মানববন্ধনে জড়ো হয়ে যান হাজারো রোহিঙ্গা। এতে মানববন্ধনগুলো সমাবেশে রূপ নেয়।
সকাল ১১টা পর্যন্ত মানববন্ধনও
সমাবেশ অনুষ্ঠিত হয়। উক্ত সমাবেশে ২০১৭ সালে তাদের ওপর ঘটে যাওয়া হত্যা ধর্ষণসহ নিপীড়নের সুষ্ঠু বিচার দাবিতে বিক্ষোভ করে তারা। পূর্ণ মর্যাদায় দ্রুত প্রত্যাবাসন কামনা করেন তারা। এ সময় তাদের নিরাপদ আশ্রয় দেয়ায় বাংলাদেশ সরকারের প্রতিও ধন্যবাদ জানান।
উখিয়া কুতুপালং, বালুখালী, পালংখালী, থাইংখালীর তাজনিমারখোলাসহ ১৪টি ক্যাম্পে এ সমাবেশ ও মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে গতকাল।
জানা যায়, ২০১৭ সালের ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের (রাখাইন) আরাকান রাজ্যে নির্যাতন ও গণহত্যার শিকার হয়ে রোহিঙ্গারা দেশ ছাড়া হবার ৫ বছর পূর্তি উপলক্ষে সমাবেশ ও মানববন্ধনের আয়োজন করেছেন রোহিঙ্গারা।
এর আগে, ২০১৯ সালের ২৫ আগস্ট ক্যাম্পে প্রথম বড় সমাবেশ করা হয়েছিল। যার নেতৃত্ব দিয়েছিলেন মাস্টার মুহিবুল্লাহ। পরে তিনি স্বগোত্রীয় সন্ত্রাসীদের হাতে নিহত হন। এবারের সমাবেশে কারা নেতৃত্ব দিচ্ছেন তা গোপন রাখা হয়েছে। এতে বক্তব্য রাখেন মাস্টার জুবায়ের, মুহাম্মদ রফিক,সিরাজুল ইসলাম ও জুমালিকা বেগম নামের এক মহিলা।
একটি সূত্র জানায়, ক্যাম্পে এবারও সমাবেশ আয়োজনে সাধারণ রোহিঙ্গাদের সঙ্গে নিয়ে নেতৃত্বে দিচ্ছে মাস্টার মুহিবুল্লাহর হাতে গড়া সংগঠন আরাকান রোহিঙ্গা সোসাইটি পিস ফর হিউম্যান রাইটস।#
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন