রোববার, ১৯ মে ২০২৪, ০৫ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ১০ জিলক্বদ ১৪৪৫ হিজরী

জাতীয় সংবাদ

কোভিড টিকা নিয়ে ফাইজারের বিরুদ্ধে মডার্নার মামলা

স্টাফ রিপোর্টার | প্রকাশের সময় : ২৭ আগস্ট, ২০২২, ১২:০০ এএম

করোনাভাইরাসের টিকা নিয়ে ফাইজার-বায়োএনটেক কোম্পানির বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে মার্কিন কোম্পানি মডার্না। কোভিড টিকা উদ্ভাবনে ফাইজার প্যাটেন্ট লঙ্ঘন করেছে বলে মডার্নার অভিযোগ। কোম্পানিটির দাবি, মহামারির কয়েক বছর আগে মডার্না যে প্রযুক্তি উদ্ভাবন করেছিল সেই প্রযুক্তি ‘কপি’ করেছে ফাইজার-বায়োএনটেক। ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স এখবর জানিয়েছে।

এক বিবৃতিতে গতকাল মডার্না জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাসাচুসেটসের একটি ডিস্ট্রিক্ট কোর্ট এবং জার্মানির ডুসেলডর্ফের একটি আঞ্চলিক আদালতে মামলা দায়ের করা হয়েছে। এতে আর্থিক ক্ষতিপূরণ দাবি করা হয়েছে।
বিবৃতিতে মডার্নার প্রধান নির্বাহী স্টেফানে ব্যানসেল বলেন, আমরা এই মামলা দায়ের করছি যে উদ্ভাবনী এমআরএনএ প্রযুক্তিতে আমরা পথিকৃত, যা তৈরিতে বিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে এবং কোভিড-১৯ মহামারির শুরু হওয়ার দশক আগে প্যাটেন্ট করা হয়েছে সেই প্রযুক্তি রক্ষার জন্য। করোনাভাইরাসের টিকা উদ্ভাবনকারী প্রথম কয়েকটি কোম্পানির মধ্যে ছিল মডার্না ও ফাইজার-বায়োএনটেক। এক দশক আগে ম্যাসাচুসেটসের ক্যামব্রিজভিত্তিক মডার্না মেসেঞ্জার আরএনএ (এমআরএনএ) টিকা প্রযুক্তি উদ্ভাবন করে। যা করোনাভাইরাসের টিকা উদ্ভাবনের অভূতপূর্ব গতি এনে দেয়। টিকা অনুমোদনে আগে যেখানে কয়েক বছর লাগত তা কয়েক মাসে সম্পন্ন হয়। এতে বড় ভূমিকা ছিল মূলত এমআরএনএ টিকা। যা মানুষের কোষকে শেখায় কীভাবে প্রোটিন ইমিউন প্রতিক্রিয়া শুরু করতে পারে। জার্মানিভিত্তিক বায়োএনটেকও এই খাতে কাজ করছিল যখন তারা মার্কিন ফার্মা জায়ান্ট ফাইজারের সঙ্গে অংশীদার হয়।
২০২০ সালের ডিসেম্বর মাসে যুক্তরাষ্ট্রের ফুড অ্যান্ড ড্রাগ অ্যাডমিনিস্ট্রেশন ফাইজার-বায়োএনটেকের কোভিড টিকাকে প্রথম অনুমতি দেয়। এর এক সপ্তা পর অনুমোদন পায় মডার্নার টিকা। এই বছর কোভিড টিকা থেকে মডার্না আয় করেছে ১০.৪ বিলিয়ন ডলার। আর ফাইজারের টিকা থেকে আয় এসেছে ২২ বিলিয়ন ডলার।
মডার্নার দাবি, অনুমতি ছাড়াই ফাইজার-বায়োএনটেক তাদের এমআরএনএ প্রযুক্তি কপি করেছে। যা ২০১৬ থেকে ২০২০ সালের মধ্যে প্যাটেন্ট করেছে মডার্না।

মহামারির শুরুতে মডার্না জানিয়েছিল, অন্যরা যাতে নিজেদের কোভিড টিকা উদ্ভাবন করতে পারে সেজন্য তারা নিজেদের কোভিড-১৯ টিকার প্যাটেন্ট প্রয়োগ করবে না। বিশেষ নিম্ন ও মধ্য আয়ের দেশগুলোর ওপর। কিন্তু ২০২২ সালের মার্চ মাসে মডার্না জানায়, তাদের প্রত্যাশা ফাইজার ও বায়োএনটেকের মতো কোম্পানিগুলো মেধাস্বত্ব অধিকারের প্রতি শ্রদ্ধাশীল হবে। কোম্পানিটি আরও বলেছিল, ২০২২ সালের ৮ মার্চের আগে তারা কোনও ক্ষতিপূরণ চাইবে না। কোনও নতুন প্রযুক্তির প্রাথমিক ধাপে প্যাটেন্ট লঙ্ঘন অস্বাভাবিক নয়।
ফাইজার-বায়োএনটেকের বিরুদ্ধে ইতোমধ্যে বেশ কয়েকটি কোম্পানি একাধিক মামলা করেছে। যাদের দাবি, অংশীদারিত্বে উদ্ভাবিত টিকাটি তাদের প্যাটেন্ট লঙ্ঘন করেছে। ফাইজার-বায়োএনটেক জানিয়েছে, তারা তাদের প্যাটেন্ট দৃঢ়ভাবে রক্ষা করবে।

জুলাই মাসে জার্মানির কিউরভ্যাক জার্মানিতে বায়োএনটেকের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে। ওই সময় এক বিবৃতিতে বায়োএনটেক দাবি করেছে, তাদের কাজ মৌলিক।
যুক্তরাষ্ট্রে মডার্নার বিরুদ্ধেও প্যাটেন্ট লঙ্ঘনের অভিযোগে মামলা হয়েছে এবং এমআরএনএ প্রযুক্তি নিয়ে মার্কিন ন্যাশনাল ইন্সটিটিউট অব হেলথ-এর সঙ্গে বিবাদ চলমান রয়েছে।

বিবৃতিতে মডার্না বলেছে, ফাইজার-বায়োএনটেক তাদের দুই ধরনের মেধা সম্পদ ব্যবহার করেছে। প্রথমটি হলো এমআরএনএ কাঠামো, যা তাদের বিজ্ঞানীরা ২০১০ সালে উদ্ভাবন শুরু করেন এবং ২০১৫ সালে প্রথম মানবদেহে ট্রায়াল হয়। দ্বিতীয়টি হলো একটি পূর্ণদৈর্ঘ্যের স্পাইক প্রোটিন। মডার্না বলছে, যা তাদের বিজ্ঞানীরা মিডল ইস্ট রেসিপাইরেটরি সিনড্রোম (মার্স) রোগের টিকার জন্য উদ্ভাবন করেছিলেন। যদিও মার্স টিকা কখনও বাজারে আসেনি। তবে এর উদ্ভাবন মডার্নাকে কোভিড-১৯ টিকা দ্রুত উদ্ভাবনে সহযোগিতা করেছে। ফাইজার জানিয়েছে, তারা এখনও মামলার বিষয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে কিছু জানে না এবং এই মুহূর্তে কোনও মন্তব্য করতে পারছে না।

 

Thank you for your decesion. Show Result
সর্বমোট মন্তব্য (0)

এ সংক্রান্ত আরও খবর

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন