অর্থনৈতিক রিপোর্টার : পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলোর মধ্যে যথেষ্ট সমন্বয়হীনতা রয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন অর্থনীতিবিদ ও তত্ত¡াবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা ড. এবি মির্জা আজিজুল ইসলাম। গতকাল শনিবার ইনস্টিটিউট অব ডিপ্লোমা ইঞ্জিনিয়ার্স বাংলাদেশে (আইডিইবি) মিলনায়তনে ক্যাপিটাল মার্কেট এক্সপো-২০১৬তে ‘তালিকাভুক্ত কোম্পানির সুশাসন : বর্তমান অবস্থা ও করণীয়’ শীর্ষক সেমিনারে তিনি প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি মন্তব্য করেন।
আজিজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশ ব্যাংক, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি), বিমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষ (আইডিআরএ), এনার্জি রেগুলেটরি অথরিটিসহ পুঁজিবাজারে সঙ্গে জড়িত নিয়ন্ত্রণ সংস্থাগুলোর নিজস্ব আইনগুলোর মধ্যে অসামঞ্জস্য রয়েছে। এগুলো ঠিক করছে না প্রতিষ্ঠানগুলো। তিনি বলেন, তাদের মধ্যে এতটাই সমন্বয়হীতা রয়েছে যে, একটি প্রতিষ্ঠান অন্য প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কে বড় তা দেখাতে একে অন্যের সঙ্গে প্রতিদ্ব›িদ্বতা করছে।
কোম্পানির সুশাসন নিশ্চিত করতে ইস্যুয়ারদের দ্রæত বিচারের আওতায় এনে শাস্তি বিধান নিশ্চিত করতে হবে উল্লেখ করে আজিজুল ইসলাম বলেন, বাংলাদেশে এখন পর্যন্ত আর্থিক খাতে অনিয়ম করে পার পেয়ে যাচ্ছে ইস্যুয়াররা। কিন্তু তাদের শাস্তির আওতায় আনা যাচ্ছে না। যে ক’টি কোম্পানির ইস্যুয়ারের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে বিচারের দীর্ঘসূত্রতায় এই জীবনে বিচার হবে বলে মনে হয় না। তাই কোম্পানির সুশাসনের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক, কমিশনসহ সব কয়টি রেগুলেটরি প্রতিষ্ঠান মিলে অর্থ ও আইন মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় হাইকোর্টের সঙ্গে বসে দ্রæত মামলা নিষ্পত্তির ব্যবস্থা করা দরকার।
সেমিনারে বিএসইসি কমিশনার স্বপন কুমার বালা বলেছেন, নতুন করপোরেট আইনে পরিবর্তন আসছে। কোম্পানির সুশাসন সংক্রান্ত বিষয়ে যে গ্যাপ রয়েছে তা অনেকাংশ দূর হয়ে যাবে। কোম্পানির সুশাসন আরও সুদৃঢ় হবে। নতুন করপোরেট গভর্নেন্স আইনে অনেকগুলো বিষয় থাকছে। কোম্পানি ও তার ম্যানেজমেন্ট আইনের ফাঁক-ফোকর দিয়ে যাতে কেউ কোনো সমস্যা করতে না পারেÑ নতুন আইনে সে বিষয়গুলো প্রধান্য পাচ্ছে।
তিনি বলেন, কোম্পানির স্বতন্ত্র পরিচালক নির্বাচনের ক্ষেত্রে নানা সিস্টেমে আত্মীয় স্বজনকে যোগসাজশ করে অনেক কোম্পানি প্রাধান্য দিয়ে থাকে। নতুন করপোরেট আইনে সেই সুযোগ থাকবে না। ভালো মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানি আনার ক্ষেত্রে তিনি বলেন, আমরা মার্চেন্ট ব্যাংকগুলোকে ইতোমধ্যে তাগিদ দিয়েছি ভালো মৌলভিত্তিসম্পন্ন কোম্পানি আনার ক্ষেত্রে। তারা ভালো আইপিও ইস্যু নিয়ে আসুক। রেগুলেটর আইপিও আনবে এমন চর্চা পৃথিবীর কোথাও নেই। তিনি মার্জার নিয়ে বলেন, দুটি কোম্পানির মার্জার হওয়ার বিষয়টি এখন বেশ পরিচিতি পাচ্ছে। কোম্পানিগুলো হাইকোর্টের অনুমতি নিয়েই আবেদন করছে। তবে সেখানে অনেক সমস্যা থেকেই যাচ্ছে। এসব সমস্যারও সমাধান হবে। ডিভিডেন্ড পলিসি ও স্টক এক্সচেঞ্জগুলো নিয়ে কোনো অভিযোগ থাকলে বিএসইসি খতিয়ে দেখবে বলে জানান তিনি।
সেমিনারে সেশন চেয়ার হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ অর্থনীতি সমিতির সাধারণ সম্পাদক ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ। মূল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন আইসিএবির সাবেক সভাপতি মাহমুদুল হাসান খসরু। বীমা উন্নয়ন ও নিয়ন্ত্রণ কর্তৃপক্ষের সদস্য সুলতান-উল-আবেদিন মোল্লা, ডিবিএ সিনিয়র সহ-সভাপতি মোশতাক আহমেদ সাদেক, শাইনপুকুর সিরামিকের সিইও হুমায়ুন কবীর।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন