জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৪৭ তম শাহাদাত বাষির্কী ও জাতীয় শোক দিবস উপলক্ষ্যে কুমিল্লা বিশ্ববিদ্যালয়ের নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরাণী হলে আলোচনা সভা ও কুইজ প্রতিযোগিতার পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠিত হয়েছে। ২৯ আগস্ট (সোমবার) সন্ধ্যা সাড়ে ৭ টায় এ আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে বিকাল ৫ টায় হলের আবাসিক শিক্ষার্থীদের অংশগ্রহণে "বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে বঙ্গবন্ধু" শীর্ষক কুইজ প্রতিযোগিতা অনুষ্ঠিত হয়।
হলের প্রাধ্যক্ষ জিল্লুর রহমানের সভাপতিত্বে আলোচনা সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির এবং কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোঃ আসাদুজ্জামান।
প্রধান অতিথির বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন বলেন, বঙ্গবন্ধু শুধু বাংলাদেশের জন্য নেতা ছিলেন না, তিনি ছিলেন বৈশ্বিক নেতা। তিনি ছিলেন সারাবিশ্বের গরীব ও শোষিত মানুষদের নেতা। মিডিয়ার কথা দিয়ে যদি শুরু করি বিবিসি, নিউইয়র্ক টাইমস, দ্য গার্ডিয়ান লন্ডন টাইমস সহ এমন কোনো বিখ্যাত পত্রিকা ছিলনা যেটা বঙ্গবন্ধুর ৭ ই মার্চের বক্তৃতা কাভার করেনি। নেতা ছাড়া নেতৃত্ব হয়না। তার দর্শন, মূল্যবোধ ও নীতির কারণে বিশ্বের অনেক মানুষের আকর্ষণ ছিলেন তিনি। তিনি মানুষকে ভালোবাসতেন, বিশেষ করে শোষিত মানুষকে ভালোবাসতেন। তিনি বলেছিলেন পৃথিবী আজ দুইভাগে বিভক্ত। একদল শোষক আরেকদল শোষিত, আমি শোষিতের পক্ষে। বঙ্গবন্ধু সারাবিশ্বে প্রথম কোন নেতা যিনি জাতিসংঘে প্রথম বাংলায় ভাষণ দেন। তিনি আরো বলেন, তার বৈদেশিক নীতি ছিল সবার সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে শত্রুতা নয়। যেকারণে আজকে আমরা ইন্ডিয়ার সাথেও কাজ করি, চায়নার সাথেও কাজ করি, আমেরিকার ও রাশিয়ার সাথে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছি। যেটি দেখিয়েছিলেন আমাদের নেতা বঙ্গবন্ধু। উনার সুযোগ্য কন্যা বর্তমান প্রধানমন্ত্রীও একই ধারায় এগিয়ে চলছেন।
উপ-উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির বলেন, এই আলোচনার উদ্দেশ্য আমরা নিজেকে শাণিত করবো মুজিব আদর্শে। পৃথিবীতে কারো আদর্শ জানার উপায় আত্মজীবনী পড়া। শেখ মুজিবুর রহমানের তিনটি মহাকাব্যিক রচনা কারাগারের রোজনামচা, আমার দেখা নয়াচীন ও অসমাপ্ত আত্মজীবনী। যেখানে তাকে আমরা জানতে পাই। তিনি মানুষকে কিভাবে দেখেছেন, তার আদর্শ কেমন ছিল। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ছিল মানুষের পাশে দাঁড়ানো। তার জীবনের অধিকাংশ সময় কারাগারে কাটিয়েছেন, সেখানেও মানুষকে বুঝার চেষ্টা করেছেন। তিনি আরো বলেন, আজকে বিশ্ববিদ্যালয়গুলোতে আমরা দেখি ছাত্রলীগ ছাড়া আর কোনো রাজনৈতিক দল নেই। ছাত্রলীগের কজন আমরা বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ধারণ করি। বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ছিল শোষণমুক্ত বাংলাদেশ গড়া, সেটা আমরা কজন ধারণ করার চেষ্টা করি।
কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. মোঃ আসাদুজ্জামান বলেন, বঙ্গবন্ধুর জন্ম এবং বাংলাদেশের জন্ম অঙ্গাঅঙ্গীভাবে জড়িত। বঙ্গবন্ধুকে নিয়ে আলোচনা করলে শেষ হবেনা। শ্রমিক, তাঁতি, জেলে এমন কোন শ্রেণী নেই যাদের নিয়ে বঙ্গবন্ধু কাজ করেননি। তার মধ্যে বিশেষ কি ছিল সেটিই আমাদের ভাবনার বিষয়। বঙ্গবন্ধু ছিলেন এমন একজন ব্যক্তিত্ব যিনি কারো কাছে মাথা নত করেননি। একারণেই কিছু কুচক্রী ও ষড়যন্ত্রকারী তার নেতৃত্বকে মেনে নিতে পারেনি। বাংলাদেশের স্বাধীনতাকে মেনে নিতে পারেনি।
আলোচনা সভা শেষে কুইজ প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন উপাচার্য অধ্যাপক ড. এ এফ এম আবদুল মঈন। কুইজ প্রতিযোগিতায় যৌথভাবে প্রথম স্থান অধিকার করেন জান্নাতুল ফেরদৌস ও হাবিবা আক্তার, যৌথভাবে দ্বিতীয় তাহমিনা আক্তার ও শাহিদা শ্রুতি এবং যৌথভাবে তৃতীয় স্থানে থাকেন প্রতিমা রাণী দেবনাথ ও মনিরা।
এসময় উপস্থিত ছিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার আমিরুল হক চৌধুরী, প্রক্টর কাজী ওমর সিদ্দিকী, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনুষদের ডিন, বিভিন্ন হলের প্রাধ্যক্ষ, শিক্ষক সমিতির নেতৃবৃন্দ, বিভিন্ন বিভাগের শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারী, হলের আবাসিক শিক্ষক ও শিক্ষার্থী এবং শাখা ছাত্রলীগের নেতৃবৃন্দ।
মোবাইল অ্যাপস ডাউনলোড করুন
মন্তব্য করুন